বর্তমান সমাজে বন্ড পীরদের দৌরাত্ন্য

প্রকাশিত: ১:৫৮ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৬, ২০১৭

কলাম:: বর্তমানে সিলেটে অধিকাংশ বন্ড পীর এখন একটি বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে লোক ঠকান তারা। অতিথিকক্ষে তাঁদেরই বেতনভোগী কর্মচারীরা পীরের দর্শনার্থী সেজে থাকতেন। সমস্যায় আক্রান্ত কোনো মানুষ পীরের কাছে গেলে এই কর্মচারী বাহিনীর কেউ তাঁর সঙ্গে আলাপ জুড়ে করেন। ওই ব্যক্তি হয়তো বলেন, তাঁর ব্যবসায় খুব দুর্দিন যাচ্ছে, পীরের কাছে এসেছেন তদবির করতে। পীরের কাছে তাঁর ডাক পড়ে হয়তো ঘণ্টাখানেক পর। পীর তাঁকে দেখে বলে দেন ‘তোমার তো ব্যবসার অবস্থা খারাপ, তাই না।’ ওই ব্যক্তি তখন চমকে উঠে ভাবেন, এই পীর আমাকে দেখেই বলে দিলেন সমস্যার কথা। এত মহা আল্লাহওয়ালা লোক! এ সুযোগে পীর তাঁকে নানা কথা বলে আরও ভড়কে দেন, দোয়া-তদবির-সদকা বিভিন্ন নামে তাঁর কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন বন্ড পীর। প্রবীর মিত্রের অলৌকিক নয়, লৌকিক নামক বিখ্যাত গ্রন্থে ভণ্ড পীরদের এ রকম বহু টেকনিকের বর্ণনা আছে।

জানা যায় : এক পর্যায়ে রুগীদের কথাবার্তা একদম বদলে যায়। স্বীকার করেন যে আসলে সমস্যার কোনো সমাধান করতে পারেন না তাঁরা। সমাধান আল্লাহর হাতে, তাঁরা শুধু দোয়া করে দেন। তাঁদের কাছে না এসে লোকজন নিজেরা দোয়া করলেই পারে। বিজ্ঞাপনে তাঁদের দাবি আবার একবারে ভিন্ন। খোদার গজবের ভয় দেখিয়ে চিঠি পাঠান বন্ড বাবারা।

পীরেরা পিটিয়ে অসুখ সারান। নেতারা পিটিয়ে প্রতিবাদের অসুখ সারান। পীরেরা কলা-মুলো ভ্যাট পান, নগদ টাকায় গড়ে তোলেন পাকা দালানকোঠা। নেতারা পান লাইসেন্স-পারমিট-কমিশন, শহরে প্লট। কোনো পীর দরিদ্র নন, কোনো নেতাও নন। পীরের আশপাশে গড়ে ওঠে মধুলোভী সঙ্গীদের বাহিনী। নেতাদের চারপাশেও তাই। পীরেরা কখনো কখনো গ্রেপ্তার হন, কালেভদ্রে শাস্তি পান। আমাদের নেতারাও তাই। পীরের সঙ্গে নেতার মিল সম্ভবত সবচেয়ে বেশি। এই মিল ঘোচানোই সবচেয়ে জরুরি।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

November 2017
S S M T W T F
 123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..