সিলেট ১০ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১১ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০১৭
বরিশাল ব্যুরো : কেউ কি শুনেছে কখনও? শুনে থাকতে পারে। তাও আজ থেকে ১০০ বছর আগে। অল্প টাকায় অনেক কিছুই পাওয়া যেত যে সময়। ১ পয়সায় শাড়ি, ২ পয়সায় সওয়ারি, ইত্যাদি। কিন্তু আজকের দিনে রাতপিছু ২৬ টাকায় হোটেল পাওয়ার ঘটনা শুনলে চোখ কপালে উঠবেই!
বাংলাদেশেই আছে এই আজব হোটেল। ফরিদপুরে। বুড়িডাঙা নদীর পারে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকা পাঁচটি নৌকার ভেতর রয়েছে থাকা-খাওয়ার সুবন্দোবস্ত। অনেকটা আলেপ্পি ও শ্রীনগরের হাউজবোটের মতো। শুনতে খরচবহুল হলেও, বাস্তবটা একেবারেই উলটো। প্রতিরাতে বেড-পিছু খরচ মাত্র ২৬ টাকা। তবে খরচের বিচারে পরিষেবা মেলে খানিক বেশি। পানি ও টয়লেটের জন্য কোনো বাড়তি খরচ নেই।
ঘুরে বেড়ানো যাদের নেশা, তাদের কাছে ২৬ টাকার এই হোটেল বেশ জনপ্রিয়। স্থানীয় ও শ্রমিক শ্রেণির মানুষও সেখানে থাকতে আসেন। কেউ কেউ থেকে যান মাসের পর মাস। প্রত্যেকের জন্য থাকে ছোট্ট লকার। নৌকা মালিক মো. মুস্তাফা মিয়ান এর বক্তব্য, মোট ৪০ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে এই নৌকা হোটেলে। প্রতিদিন ২৬ টাকার বিনিময়ে অন্তত ৩ মাস থাকতে পারেন তারা। তবে প্রাইভেট কেবিনগুলির খরচ একটু বেশি। রাতপিছু আনুমানিক ৮৩ টাকা।
২৬ বছর ধরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছেন মিয়ান। রমরমিয়ে চলছে ব্যবসা। এত অল্প টাকার বিনিময়ে মাথা গোঁজায় ঠাঁই পাওয়ার এই ব্যবস্থা হাতছাড়া করেন না বাংলাদেশের ছোট শহর ও গ্রামের মানুষ। বিভিন্ন কাজে প্রায়সই তাদের আসতে হয়। অন্য কোনো হোটেলে থাকতে হলে অনেক টাকা খরচ হয় তাদের। কিন্তু মিয়ানের মতো নৌকা হোটেল আছে বলেই, বাড়ি ভাড়া না করে, মাস তিনেক থেকে যেতে পারেন তারা।
২৬ টাকার বিনিময়ে পরিশ্রুত পানীয় জল, পরিষ্কার গোসলঘর, নিজস্ব লকার ও পরিচ্ছন্ন বিছানা পেলে কেই বা সেই সুযোগ হাতছাড়া করবে… বিশেষ করে গ্রামের গরিব মানুষগুলো! তবে হ্যাঁ, সেখানে খাবার পাওয়া যায় না। এত সব কারণেই, ফরিদপুর এই ‘বোট হোটেল’ পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তা হোটেলের তালিকায় শীর্ষস্থান অধিকার করেছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd