রাজনীতিবিদ সিকান্দার আলীর সভাপতিত্বে ও সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক রজত গুপ্তের সঞ্চালনায় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসুচীকালে অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবাদ সমাবেশ ।বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), সিলেট শাখার সাধারন সম্পাদক আব্দুল করিম কিম স্বাগত বক্তব্যে বলেন, কোম্পানীগঞ্জে পরিবেশ ধ্বংসের মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার এবং জাফলং-বিছনাকান্দি-শ্রীপুর-লোভাছড়ায় পাথরখেকোদের চিহ্নিত করে মামলার আওতায় আনতে হবে । সিলেটের প্রকৃতি ও পরিবেশকে বাঁচাতে হলে সর্বস্তরে নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে । তিনি জাফলং-ভোলাগঞ্জ-বিছনাকান্দি-শ্রীপুর-উৎমাছড়া-লোভাছড়া-যাদুকাটা ও মাহারাম নদনদীসহ সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংসকারী বোমা মেশিনের (যান্ত্রিক পদ্ধতি) ব্যবহার বন্ধ করতে ৯ দফা দাবি উত্থাপন করেন । এই দাবির সাথে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি, ও সচেতন নাগরিক কমিটি(সনাক) সিলেট শাখার সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, ব্লাস্ট সিলেট ইউনিটের কো-অডিনেটর এডভোকেট ইরফানুজ্জামান চৌধুরী, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি মিশফাক আহমদ মিশু, সাংস্কৃতিক সংগঠক এনামুল মুনির ও শামসুল বাসিত শেরো, লিডিং ইউনিভার্সিটির ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ফেকাল্টি হাসান মোরশেদ, রুখে দাঁড়াও বাংলাদেশ-এর সিলেট সমন্বয়ক গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন, গণজাগরন মঞ্চ সিলেটের মুখপাত্র দেবাশিষ দেবু, সমাজ অনুশীলন সিলেটের সদস্য সচিব মুক্তাদির আহমদ মুক্তা, বাপা-সিলেটের সংগঠক ও দৈনিক সবুজ সিলেটের বার্তা সম্পাদক ছামির মাহমুদ, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক হোসেইন আহমদ শিপন, বঙ্গবীর ওসমানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি সৈয়দ আহমদ বহলুল, জাতীয় জনতা পার্টি সিলেট শাখার সাধারন সম্পাদক মো শফিকুর রহমান শফিক, সারী নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি আব্দুল হাই আল হাদি, ভূমিসন্তান বাংলাদেশ-এর আশরাফুল কবির, গ্রীন এক্সপ্লোর সসাইটির সভাপতি তারিক আহমদ অনিক, প্রাধিকারের সদ্য প্রাক্তন সভাপতি মনজুর কাদের চৌধুরী, ক্রিয়েটিভ সোসাইটির চেয়ারম্যান রাহাত আহমেদ রাফি, ওয়েমেন্স ওয়ার্ড সপাদক অদিতি দাস প্রমুখ ।
মানববন্ধন চলাকালীন প্রতিবাদী সমাবেশে বক্তারা বলেন, রুখতে হবে পাথরখেকোদের লুটপাট । যথেষ্ট হয়েছে পাথর উত্তোলনের নামে প্রকৃতিবিনাশী অপকর্ম । আর এ অপকর্ম বরদাস্ত করা হবে না । বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক ও নাগরিক সংগঠন পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক কর্মসুচী পালন করবে ।
বাপা’র পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ২৩শে নভেম্বর বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন জাফলং-ভোলাগঞ্জ-বিছনাকান্দি-শ্রীপুর-উৎমাছড়া-লোভাছড়া-যাদুকাটা ও মাহারাম নদনদীসহ সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবেশ ও প্রকৃতি ধ্বংসকারী বোমা মেশিনের (যান্ত্রিক পদ্ধতি) ব্যবহার বন্ধ করতে ৯ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরন করবে । প্রায় এক হাজার নাগরিকের সাক্ষর সংগ্রহ করা হবে । সমাবেশে উত্থাপিত নয় দফা দাবির সাথে সংহতি প্রকাশ করে প্রথম স্বাক্ষর করেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনে সাবেক মেয়র ও সিলেট মহানগর আওয়ামীলিগ সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ।
নয় দফা দাবি গুলো হচ্ছে-
০১।সিলেট বিভাগের সর্বত্র পরিবেশ বিধ্বংসী যন্ত্র বোমা মেশিনের ব্যবহার বন্ধ করা ।
০২।বোমা মেশিনের তান্ডবে ভূ-প্রকৃতির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা ।
০৩।বোমা মেশিনের মাধ্যমে প্রকৃতি ধ্বংসকারী চক্রের তালিকা প্রণয়ন ও বিচারের মুখোমুখি করা । প্রয়োজনে পরিবেশ অধিদপ্তরের এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা।
০৪।অন্যতম সম্পদ পাথর যত্রতত্র উত্তোলনকারী লুটেরাদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা ।
০৬।পাথর কোয়ারিতে (পাথর মহাল) ঘটে যাওয়া অর্ধশতাধিক শ্রমিক মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও নিহত শ্রমিক পরিবারকে চিহ্নিত অবৈধ পাথর উত্তোলনকারীদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করে দেওয়া ।
০৬।দরিদ্র শ্রমিকদের মৃত্যুরমুখে ঠেলে দেওয়ার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে হত্যা মামলার বিচার দ্রুত করা ।
০৭।পিয়াইন-ডাউকি-রাংপানি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা ।
০৮।প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা জাফলং-এর জন্য বিজ্ঞানবিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা ।
০৯। ভোলাগঞ্জ-বিছনাকান্দি-শ্রীপুর-উৎমাছড়া-লোভাছড়া-যাদুকাটা নদী এলাকাকে পর্যটন উপযোগী স্থান হিসাবে সংরক্ষন করা ।