সিলেট ৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৫শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ৯ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৩১ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২০, ২০১৭
ক্রাইম ডেস্ক :: লালমনিরহাট সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনিরের ঝুলন্ত মরদেহ নিজবাড়ীর আঙিনার একটি নিমগাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে স্ত্রী আফরোজা বেগম আঁখি ও ছোটভাই সাজ্জাদ হোসেন বাড়ির আঙিনার নিমগাছে মনিরুজ্জামানের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজনকে খবর দেন। এক পর্যায়ে তারা মৃতদেহটি গাছ থেকে নামান এবং ঘরের বারান্দায় পাকার উপর শুইয়ে রাখেন। পরে খবর পেয়ে ওইবাড়িতে বিকেলে আদিতমারী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল যান।
নিহত মনিরুজ্জামান মনির (২৮) লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের খাতাপাড়া (মাজার) এলাকার তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। গত ১৬ এপ্রিল মোছা. আফরোজা বেগম আঁখির (১৮) সাথে মনিরুজ্জামান মনিরের বিয়ে হয়।
জানা গেছে, মনিরুজ্জামান লালমনিরহাট সরকারি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক(সম্মান) পাস করার পর লালমনিরহাট আইন মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি পড়ছিলেন। চলতি বছর বিয়েও করেন তিনি। আর্থিক ও মানসিক সমস্যার চাপে আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা করছে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন।
সোমবার বিকাল ৪টার দিকে সরেজমিনে মনিরুজ্জামান মনিরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিজের শয়নকক্ষে আফরোজা বেগম আঁখি কান্নাকাটি করছেন। তিনি বলেন, ‘গত ১৬ এপ্রিল বিয়ে হয়েছে। সংসারে আমাদের কোনো সমস্যা ছিল না।’
সকালে একই সাথে খাওয়া-দাওয়া শেষে মনিরকে বাড়িতে রেখে সাজ্জাদসহ পরীক্ষা দিতে যান। পরীক্ষা দিয়ে বাড়ীতে ফিরে নিমগাছে স্বামীর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান। তিনি বুঝতে পারছেন না কেন স্বামী মনির আত্মহত্যা করেছে- বলেই আবার বিলাপ করতে থাকেন।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ, পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী জানায়, খাতাপাড়ার নিজবাড়ির আঙিনায় একটি নিমগাছে ছাত্রদল নেতা মনিরুজ্জামান মনির গলায় রশি দিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে।
মনিরের স্ত্রী আফরোজা বেগম আঁখি ও তার দেবর সাজ্জাদ হোসেন লালমনিরহাট কারিগরি কলেজে একাদশ শ্রেণির ফাইনাল পরীক্ষা শেষে বাড়িতে ফিরে দেখতে পান নিমগাছে মনিরের ঝুলন্ত মৃতদেহ। পরে তারা চিৎকার ও কান্নাকাটি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আঁখি ও সাজ্জাদ নিমগাছ থেকে মৃতদেহটি নামিয়ে ঘরের বারান্দায় শুরে রাখেন এবং আত্মীয়-স্বজনদের খবর দেন। তবে সোমবার (২০-নভেম্বর) আফরোজা বেগম আঁখির হিসাববিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল।
মনিরের ছোট ভাই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা ও ছোট মা মহিষখোচায় থাকেন। আমরা খাতাপাড়ার বাড়িতে থাকি। ভাবিসহ পরীক্ষা দিতে গেছি। এসে দেখি ভাইয়ার ঝুলন্ত মৃতদেহ নিমগাছে। পরে আমরা মৃতদেহটি গাছ থেকে নামাই এবং ঘরের বারান্দায় রাখি।’
লালমনিরহাট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহম্মেদ লিমন বলেন, ‘মনিরুজ্জামান ছাত্রদলের একজন নিষ্ঠাবান ও নিবেদিত নেতা ছিল। কিন্তু কিছুদিন থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিল। সেকারণে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে বলে তার পারিবারিকভাবে জানা গেছে।’
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরেশ্বর রায় বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd