সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:০৮ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০১৭
খলিলুর রহমান :: আমি তখন কিশোর,গ্রামে থেকে মাদ্রাসার নবম শ্রেণীতে পড়ি। বাবা ছিলেন সাতচল্লিশে কংগ্রেস সমর্থক জমিয়তে ওলামার খুবই ভক্ত।আমার এলাকাটি ছিল জামায়াতী ও মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী রাজাকার আলবদরদের শক্ত ঘাটি। আমি ছিলাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের। আমি প্রত্যহ বিকালে গ্রামের শিশুকিশোরদের নিয়ে জয়বাংলা শ্লোগানের মিছিল বের করতাম,যুবদের উদ্বোদ্ধ করতাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে। এরই মধ্যে আমার পার্শ্ববতী দর্পনগরের কমর উদ্দিন,গিয়াস উদ্দিন, বটল চাচাসহ কয়েকজন মুক্তিযুদ্ধে চলে গেলেন, পাকহানাদার বাহিনী তখনো চারখাইয়ে,,সীমান্ত খোলা, গোপনে পাড়ি জমালাম ভারতে।
সেই একাত্তুর –২ ভারত পাড়ি জমানোর আগেই ঘটে গেল এক লোমহষর্কক ঘটনা, কিশোর বয়েসী আমার এক চাচাততো ভাইকে ধরে নিয়ে গেল আলবদররা।তাকে পাক সেনা ক্যাম্পে আটকে রেখে তার উপর চালানো হতো পাশবিকতা। আমি ভারতের তৎকালীন কাছাড় জেলার করিমগঞ্জ দিয়ে একাই ভারতে প্রবেশ করি। তখন মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প বা শরনার্থী শিবির কোনটাই আমার জানা ছিল না।অন্যদিকে আমি মুসলিম, তাই মুসলিস বিদ্বেষী করিমগঞ্জ শহরের সংখ্যাগুরুরা আমাক পাত্তাই দেয় নি। রাতে এক মহিলার দয়া হলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন ইন্ডিয়ায় তোমার কেউ আছে? বললাম মা বলেছেন অসমের হোজাই এলাকায় তার চাচার বাড়ি।আব্দুল জলিল মায়ের চাচাতো ভাই।
সেই একাত্তুর-৩ :: মহিলাটি সম্ভবত রেলওয়েতে চাকির করতো,সে আমাকে সাথে করে করিমগঞ্জ রেলওয়ে ষ্টেশনে যায় এবং একটি টিকিট হাতে দিয়ে বলে, বসে থাকো,রাত ৮টায় পাহাড় লাইনের রেল আসলে উঠে গেলে হোজাই পৌছে যাবে। আমি মনে করেছিলাম হোজাই হয়তো ২০/৩০ মাইল দূরে হবে। হোজাই রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকায় সামরাইল ২-এ আমার মায়ের চাচার বাড়ি। সেই সাতচল্লিশে ভারত বিভক্তির অনেক আগেই তারা সেখানে গিয়ে বসতি স্থাপন করেছিলেন। যাক রাত ৮টায় লাইনে পাহাড় লাইনের রেল এসে দাঁড়ালো,সম্ভবত রেলটা ত্রিপুরার আগরতলা থেকে এসে দাঁড়ায়। আল্লাহর উপর ভরসা করে রেলে চড়ে বসলাম। রেল চলছিল এবং আমি অপেক্ষা করছিলাম কখন যে গিয়ে হোজাই ষ্টেশনে গিয়ে দাঁড়ায়। অত:পর….
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd