সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭
নিজস্ব প্রতিনিধি : এখনো তফসিল ঘোষিত হয়নি। তবে আগামী বছরের প্রথমে দিকেই যে সিলেট কর্পোরেশন নির্বাচন হচ্ছে তা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন কমিশনের এমন ঘোষণার আগেই মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। প্রধান দুই দলেই একাধিক নেতা দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। নাগরিকদের মন জয়ের চেষ্টাও চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন যাত্রা শুরু করে ২০০১ সালের ৩১ জুলাই। তবে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে। আর সর্বশেষ সিসিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। আগামী বছর মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে চতুর্থবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা রয়েছে নির্বাচন কমিশনের।এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হবে সিসিকের নির্বাচন। এখনো তফশিল ঘোষণা না হলেও দীর্ঘ হচ্ছে প্রার্থীর তালিকা।
মনোনয়ন দৌড়ে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাবেক ও বর্তমান মেয়রকে। এই প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে সামনে রেখে সিসিকের বর্তমান ও সাবেক দুই মেয়রই দলীয় হাইকমান্ড থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েছেন এমন খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। তবে এ দুই নেতার দাবির সাথে একমত নন প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীরা। তাদের মতে, দুজনই হারিয়েছেন তাদের জনপ্রিয়তা, তাই আগামী সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ-বিএনপি উভয় দলেই নতুন মুখ দেখা যাবে বলে তাদের আশা। মাস তিনেক আগে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ বিষয়টি জানিয়েছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান।
বিগত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিপুল ভোটে হেরে সিলেট নগর ভবনের প্রায় ১৮ বছরের টানা কর্তৃত্ব হারান মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এই নেতা। চলতি বছরের জুলাই মাসে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির সভা শেষে কামরান ও রাজশাহীর সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বৈঠক শেষে নেত্রীর পক্ষ থেকে তাকে সিটি নির্বাচনের জন্য ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়া হয়েছে বলে জানান কামরান। এ নিয়ে নগরীতে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়। বিরূপ মন্তব্য আসে আওয়ামী লীগের অন্যান্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে।
সর্বশেষ ২১ অক্টোবর সিলেটে সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে এসে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ‘গ্রিন সিগন্যাল’ বিষয়টি বাতিল করে বলেন, মনোনয়নের মাঠ উম্মুক্ত। সবচেয়ে জনপ্রিয় নেতাকেই মেয়র পদে মনোনয়ন দিবে আওয়ামী লীগ।
এদিকে নভেম্বরে এসে সাবেক এ মেয়রের পথ অনুসরণ করেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীও। সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) আগামী নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী হিসেবে দলীয় ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পেয়েছেন বলে দাবি করেন আরিফ।
গত ১৪ নভেম্বর আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানেই নেত্রী তাকে এমন নির্দেশনা দেন বলে দাবি করেন। তার এই দাবি মেনে নিতে পারেননি স্থানীয় বিএনপির নেতারাও। তাদের মতে, দলবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় আরিফুল হক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। গ্রিন সিগন্যাল ফ্যাক্টর বাদ দিলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের মেয়র পদে এবার সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা বেশ লম্বা। আওয়ামী লীগ থেকে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ চাইছেন মনোনয়ন। সাথে আছেন অর্থমন্ত্রীর প্রিয়ভাজন হিসেবে পরিচিত ক্রিড়া সংগঠক, বাফুফের সদস্য মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম। এই ব্যবসায়ি এবং ক্রীড়া সংগঠকও এবার আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে মনোনয়ন চান।
বিএনপির মনোনয়ন পাবার দৌড়ে রয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহি কমিটির সদস্য ও বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির মহানগর কমিটির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম।
গত নির্বাচনে মেয়র পদে জামায়াতের কোনো প্রার্থী না থাকলেও আগামী নির্বাচনে প্রার্থী দেয়ার আভাস দিয়েছে দলটি। দলীয়ভাবে জামায়াত নির্বাচন করতে না পারলে তাদের হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন দলের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যদের নিয়ে সম্প্রতি তিনি নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। তার সাথে ছিলেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ লালা। জাতীয় পার্টি ও বামদলগুলো থেকে এখনো কোনো প্রার্থীর নাম প্রচারে নেই।
নির্বাচন বিষয়ে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, এই প্রথম সিলেট সিটি কর্পোরেশনে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন নিয়ে নগরবাসীর মনে উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে। স্থানীয় এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি ব্যক্তিও এখানে একটা ব্যাপার। নগরবাসী আমাকে ভালোবাসে, আগামী নির্বাচনে আমি অবশ্যই বিজয়ী হব। গত নির্বাচনে ফলাফল আমাদের পক্ষে আসেনি। এবার সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করলে অবশ্যই ফলাফল আওয়ামী লীগের পক্ষে আসবে।
গ্রিন সিগন্যাল বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এটাকে সিগন্যাল বলছি না, তবে আমাকে কেন্দ্র থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। তাই আমি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে জনগণের কাছাকাছি থেকে কাজ করছি। এরপরও দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যদি বদল হয়, অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয় সে ক্ষেত্রেও সে সিদ্ধান্ত আমি মেনে নিয়ে দলের সাথে থেকে দলের পক্ষের কাজ করবো।
আর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী আসাদ উদ্দিন আহমদ বলেন, সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান প্রার্থী হিসেবে জনসমর্থন হারিয়েছেন এটা তো গত নির্বাচনেই প্রমাণিত। তাই নগরভবনে আবারো আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে এবার নতুন মুখ প্রয়োজন বলেই আমি মনে করি। মানুষ নতুনত্ব চায় দাবি করে তিনি বলেন, মেয়র পদ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থী পরিবর্তন করা দরকার।
তিনি আরো বলেন, আমি এ শহরেরই ছেলে। দলের কর্মীরা আমাকে প্রার্থী হতে বলছেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেই তিনি মেয়র পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। এখন দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছি। আর দলের সাধারণ সম্পাদক
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd