নির্বাচনের বছর, নাকি মামলা হামলার বছর?

প্রকাশিত: ১:০৭ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৮

নির্বাচনের বছর, নাকি বিএনপির হামলা ও পুলিশের মামলার বছর ২০১৮ সাল? বছরের শুরুতেই উত্তেজনা ছড়ালেও মাস শেষ না হতেই সেই উত্তেজনায় একদিনেই ঢাকাতেই আটক ৬৯ জন। হামলা হলে মামলা হবে, মামলা হলে আটক হবে, ছাড়া পেয়ে আবারো হামলা করবে, এটাই কি চলতে থাকবে? তাহলে নির্বাচনী মাঠ কিভাবে সমান হবে? একদিকে হামলা হবে অন্যদিকে মামলা হবে এভাবে রাজনৈতিক সমাঝোতার নজির নেই।পুলিশের গাড়ি ভেঙ্গে বিএনপির আটককৃত দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ। এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে পুলিশের দাবি। মঙ্গলবার রাতে শাহবাগ থানায় দুটি মামলা করা হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে।এ মামলার ভবিষ্যত অতীত থেকে এখনই অনুমেয়। হয়তো এ মামলার সূত্র ধরেই গ্রেফতার হতে পারে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও কর্মীরা। তবে কি নিজেদের বিপদটা নিজেরাই ডেকে আনলেন শেষ পর্যন্ত? সরকারের মাথায় রাখা উচিত খালি মাঠে খেলার দর্শক থাকে না। বিএনপির নেতাদের সভা সমাবেশেও বাক্য বিনিময়ে আরো বেশি সতর্ক হওয়া উচিত।সরকারি কাজে বাধাদান, পুলিশের ওপর হামলা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্ট, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নসহ বেশ কয়েকটি ধারায় দুটি মামলা  করা হয়েছে। মামলা নম্বর ৫৭ ও ৫৮। শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রহিদুল ইসলাম ও এসআই চম্পক বাদী হয়ে পৃথক এই মামলা দুটি করেন। শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।একদিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সমান নির্বাচনী মাঠ সব রাজনৈতিক দলের প্রাপ্য। কিন্তু পুলিশের উপর হামলা যেমন কখনো কাম্য সহতে পারে না, তেমিন এ মামলার সূত্র ধরে গণহারে গ্রেপ্তারও আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্যে শুভ সংবাদ হতে পারে না। তাই সরকার, বিরোধীদলগুলোকে বুজেশুনে কর্মসূচিতে যাওয়া উচিত।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গতকাল বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ আদালতে হাজিরা দিয়ে ফিরছিলেন। দলের চেয়ারপারসনের আদালতে হাজিরার দিন প্রতিবারের মতো কালও নেতা-কর্মীরা হাইকোর্ট মাজার গেটে জড়ো হন। পরে বকশীবাজার থেকে বিএনপির আরেকটি মিছিল এসে এতে যোগ দেয়।

পুলিশের দাবি, খালেদা জিয়া ফেরার সময় মিছিল থেকে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যান ভেঙে দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নিয়ে যান বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাঁদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের একজন অতিরিক্ত উপকমিশনারসহ (এডিসি) অন্তত চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পুলিশের দুটি রাইফেলও এ সময় ভাঙচুর করা হয়।

এটা কি রাজনৈতিক ক্ষোভ থেকে করা হয়নি? পুলিশ যদি অন্যায় ভাবে কোন নেতাকর্মীকে আটক করে থাকে তাহলে শুধূ দুজনকে কেন আটক করতে যাবে? সেখানেতো আরো হাজার হাজার নেতাকর্মী ছিলেন। উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে হামলা অত:পর মামলার মধ্যে অন্য পক্ষ যেন আবারো ঘোলা পনিতে মাছ শিকার করতে না পারে, সেদিকে সবার সচেষ্ট দৃষ্টি থাকা দরকার বলে মনে করছি।

গতকাল রাত সোয়া ১০টায় গুলশান থেকে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করেছে বলে বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে। বিএনপির দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকা থেকে  অন্তত ৬৯ জনকে আটক।

সন্ধ্যায় রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন নেতাকর্মীদের আটকের কথা নিশ্চিত করেন। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখনই যদি বিরোধীদলগুলোর উপর নিপীড়নমূলক আচরণ করা হয় তাহলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত না হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

গত নির্বাচনে যেভাবে প্রায় ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন সেটির পুনরাবৃত্তি যেন আবারো না ঘটে একাদশ সাংসদ নির্বাচনে সেটিও খেয়াল রাখতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

February 2018
S S M T W T F
 12
3456789
10111213141516
17181920212223
2425262728  

সর্বশেষ খবর

………………………..