সিলেট ২১শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২২শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:৫৬ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোমেনা সোমা অনলাইনে জঙ্গিবাদের উপকরণ দেখে উদ্বুদ্ধ হন। ছোট বোন আসমাউল হুসনা সুমনাকেও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ করেন। তবে দেশের কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি।
কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা সুমনাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য পেয়েছেন। কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদকর্মীদের সঙ্গে এক অনানুষ্ঠানিক আলাপে এ কথা বলেন।
মোমেনাকে অস্ট্রেলিয়া পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বাংলাদেশ পুলিশ অস্ট্রেলিয়া পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
মনিরুল ইসলাম জানান, মোমেনা সোমা ও তাঁর বোন আসমাউল হুসনা অনলাইনের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। দেশের কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে তাঁদের সংশ্লিষ্টতা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। অনলাইনে আইএস-আল–কায়েদাসহ জঙ্গিদের ছড়িয়ে রাখা বিভিন্ন উপকরণ দেখে নিজেরা উদ্বুদ্ধ হয়ে এ পথে আসেন সোমা। তিনি তুরস্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভিসা না পাওয়া যেতে পারেননি। এরপর অস্ট্রেলিয়ায় যান। অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর কথা আগেই বোনকে বলে গিয়েছিলেন তিনি। বাসায় পুলিশ এলে তাঁদের ওপর হামলা করার নির্দেশ ছোট বোনকে তিনিই দেন।
মনিরুল ইসলাম আরও জানান, ২০১৫ সালের দিকে জঙ্গিবাদে জড়ান সোমা। তবে দেশের অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠন বা হোলি আর্টিজানে হামলাকারী জঙ্গিদের সঙ্গে তাঁর কোনো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। দেশের কোনো জঙ্গি সংগঠন বা ব্যক্তির সঙ্গে দুই বোনের যোগাযোগ ছিল কি না, তা জানতে চাইলে মনিরুল বলেন, কোনো জঙ্গি সংগঠন বা হোলি আর্টিজানে হামলাকারী কারও সঙ্গে এঁদের যোগাযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, জঙ্গিবাদে জড়িয়ে সিরিয়ায় চলে যাওয়া নজিবুল্লাহ আনসারীর সঙ্গে মোমেনা সোমার সম্পর্ক ছিল। ২০১৪ সালের শেষ দিকে তাঁদের বিয়ে হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু নজিবুল্লাহর পরিবার সেটা না চাওয়ায় বিয়েটা হয়নি। পুলিশের ধারণা, ওই সময় সোমা জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়েন। ২০১৫ সালে সোমার মা মারা যাওয়ার পর তাঁর সঙ্গে জঙ্গিবাদ আরও তীব্র হয়।
নজিবুল্লাহ রাজশাহী ক্যাডেট কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এরপর মালয়েশিয়ান মেরিন একাডেমিতে পড়তে যান। সেখান থেকে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যান যুক্তরাষ্ট্রে। ২০১৬ সালে তাঁর সঙ্গে পরিবারের শেষ যোগাযোগ হয়। জঙ্গিবাদে জড়িয়ে মোহ ভঙ্গ হয়ে দেশে ফিরে পুলিশের কাছে দেওয়া গাজী সোয়ানের স্বীকারোক্তি থেকে জানা যায়, সোয়ানের সঙ্গে নজিবুল্লাহ তুরস্কে দেখা হয়েছে। কিন্তু এরপর বারবার যোগাযোগ করেও তিনি আর নজিবুল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সোয়ানের ধারণা, নজিবুল্লাহ তুরস্ক সীমান্তে মারা গেছেন।
গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে এক ব্যক্তিকে ছুরিকাঘাত করার অভিযোগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থী মোমেনা সোমাকে (২৪) গ্রেপ্তার করে সে দেশের পুলিশ।
অস্ট্রেলিয়ার পুলিশ বলছে, মোমেনা আইএসের মতাদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছেন। তাঁর ব্যাপারে খোঁজ নিতে গত রোববার রাতে ঢাকার কাজীপাড়ায় তাঁদের বাসায় যায় ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের দল। একপর্যায়ে সুমনা কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের এক কর্মকর্তার ওপর ছুরি নিয়ে আক্রমণ চালান। পুলিশের অন্য সদস্যরা তাঁকে ধরে ফেলেন।সূত্র-প্রথম আলো
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd