সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:৪২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০১৮
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের জাদুকাঁটা নদীতে ড্রেজার মেশিনে প্রতিরাতেই চলছে কোটি টাকার বালু লুট। বেরীবাঁধে বালু ভরাটের ভুঁয়া অজুহাত তৈরী করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম ভাঙ্গিয়ে নদীর পাঠানপাড়া-মিয়ারচর ও সোহালা-সত্রিশ গ্রামের এপার ওপার দু’তীরেই গত দেড় মাসের অধিক সময় ধরে বালু লুটেরাদের সাথে পুশিলের গোপন সমঝোতায় অবৈভভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে চলছে রাত্রীকালীন বালু লুটের রমরমা বাণিজ্য।’
অভিযোগ রয়েছে, পুলিশের দায়িত্বশীল কয়েক কর্তা ব্যাক্তির বিশেষ নজরধারী থাকায় বারবার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির কিছু অসৎ সদস্যের বিরুদ্ধে জাদুকাঁটা মাহারাম নদীর একাধিক পয়েন্টে সেইভ বোমা ও ড্রেজারে বালু লুটে প্রতিনিয়ত লাখ লাখ উৎকোচ নেয়ার প্রকাশ্য অভিযোগ থাকার পর উৎকোচের ভাগ পেয়ে অনেকটা নিরব থাকছেরন দায়িত্বশীলরা। ’
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, উপজেলার জাদুকাঁটা নদীর প্রায় দেড় থেকে ১ কিলোমিটার নৌপথ জুড়ে পাঠানপাড়া-মিয়ারচর ও সোহালা-সত্রিশ গ্রামের এপার ওপার দু’তীরেই প্রতিরাতে ১০ থেকে ১২টি ড্রেজার মেশিনে অবৈধভাবে বালু উক্তোলন করে বলগেটে (বড় ষ্টিলবডি নৌকা) লোড করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। রাত ১০টা থেকে ভোররাত পর্য্যন্ত প্রতিরাতেই তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই’র তদারকিতে এসব ড্রেজারে বালু লুটের উৎসব চলে আসছে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার একাধিক লোকজন ও বালু উক্তোলনে থাকা ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিটি ড্রেজারে বালু উক্তোলনের জন্য এসআইসর মনোনিত দু’জন ব্যবসায়ীর মাধ্যমে অতিগোপনে প্রতিরাতে প্রতিটি ড্রেজারের বিপরীতে ১০ হাজার টাকা করে উৎকোচ দিতে হয়।’ বিনিময়ে প্রতিটি ড্রেজার রাতভর (প্রতিঘনফুট ১৪ টাকা) প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার ঘনফুট বালু অবৈধভাবে লুটে নিচ্ছে। ওই এসআই ১০ থেকে ১২ টি ড্রেজারের বিপরীতে এক লাখ থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকার মত উৎকোচ নিচ্ছেন। শুধু এখানেই শেষ নয় গত দেড় মাসের অদিক সময় ধরে উপজেলার শিমুল বাগান লাগোয়া জাদুকাঁটা- মাহারাম নদীর উৎসমুখে ৭০ টির মত ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উক্তোলন করা হচ্ছে প্রতিরাতে। দিনের বেলায় ড্রেজারগুলো বালুর নিচে লুকিয়ে রাখার পর বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআইর সবুজ সংকেত পেলেই এগুলো বালু লুটে সরব হয়ে উঠে।’
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিটি ড্রেজার মেশিনের বিপরীতে এসআই অগ্রিম বাবত ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা করে উৎকোচ নিয়েছেন।’ আর সপ্তাহের ৬ দিন বালু লুটের জন্য প্রতিটি ড্রেজার মালিকের সাথে ৪ হাজার টাকা করে গোপন চুক্তিতে ব্যাক্তিগত দু’সোর্সের মাধ্যমে উৎকোচের টাকা আদায় করাচ্ছেন।
তাহিরপুর থানার বাদাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির এসআই সাইদুর রহমানের নিকট রবিবার ড্রেজার মেশিনে বালু লুট ও উৎকোচ নেয়ার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, একাটি বেরীবাঁধে বালু ভরাটের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি ড্রেজারের সাহায্যে কয়েকদিন বালু উক্তোলনের মৌখিক অনুমতি দিয়েছিলেন, এর বাহিরে কোন ড্রেজার নদীতে চলেনি।’
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রী পুর্ণেন্দু দেব রবিবার জানান, হাওরের বেরীবাঁেধর স্বার্থে কয়েকদিনের জন্য একটি ড্রেজারে বালু উক্তোলনের জন্য মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলাম,কয়েকদিন আগেই বাঁধে বালু ভরাটের কাজ শেষ হয়ে গেছে, এখন নদীতে অন্য কোন ড্রেজার বসিয়ে বালু উক্তোলন করা হয়ে থাকলে তা আমার জানা নেই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd