সিলেট জোনের চার কারাগারে ভুয়া নাম-ঠিকানায় চাকরিরত এরা কারা

প্রকাশিত: ৫:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০১৮

সিলেট জোনের চার কারাগারে ভুয়া নাম-ঠিকানায় চাকরিরত এরা কারা

ক্রাইম প্রতিবেদক : দেশের বিভিন্ন সেক্টরে প্রতিদিন হাজার হাজার পদে চাকরীতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এ সব ক্ষেত্রে চাকরী প্রত্যাশীরা কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু বিগত সময়ে দেখা গেছে এ সকল চাকরী প্রত্যাশীরা ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়েও চাকরী পেয়েছেন। এর পেছনে রয়েছে অসাধু কিছু কর্মকর্তার হাত। যার ফলে সঠিক তথ্য না থাকলেও অদৃশ্য শক্ষির জন্য বাড়ছে ভুয়া তথ্যের মাধ্যমে চাকরী গ্রহণকারীদের সংখ্যা। বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরী ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র প্রয়োগ একটি পুরাতন এবং স্বাভাবিক বিষয়। কারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা গেছে ঘুষ বাণিজ্যের মাধ্যমে সঠিক তথ্য যাচাই বাচাই না করেই কর্তৃপক্ষ লোক নিয়োগ করছেন। কিন্তু যখন দেশের গুরুপূর্ণ একটি অংশ কারাগারে দেখা যায় অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনা তখন কেমন দেখায়। বলা হচ্ছে সিলেট জোনের চার কারাগারে চাকরীরত কিছু ভুয়া নাম ঠিকানাধারীদের কথা। যেখানে গেইটে স্লোগান দেখা যায় ‘রাখিব নিরাপদ দেখাব আলোর পথ’। মূলত কারাগারে বন্ধিদের উদ্যেশ্যে এমন কথা বলা হয়। কিন্তু যারা কারা বন্দিদের দেখভাল করেন তারাই যদি আলোর পথ দেখাতে গিয়ে নিজেরাই অন্ধকারে থাকেন তখন উঠে আসে হাজারো প্রশ্ন আর আলোচনা-সমালোচনা।

অনেকে বলছেন পিলখানার ঘটনার কথা। বিদ্রোহীকারী অনেক বিডিয়ার জোয়ান আজও রয়ে গেছেন ধরাছোয়ার বাহিরে। কারণ একটাই এ সব জোয়ানদের ভর্তিকালীন ঠিকানা সঠিক ছিল না। যে-কারনে বিদ্রোহী পলাতক জোয়ানদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি আইনশৃংখলা বাহিনী। এমনই একটি র্স্পকাতর জায়গা সিলেট কারগার।

১৭ সালের শেষের দিকে আইজি প্রিজন মৌলভীবাজার কারাগার সফরকালে দুইজন কারারক্ষী বদলীর বর্ণণা শুনে যে যে সারকেলের যেসব কারারক্ষীগণ সিলেট বিভাগীয় জোনের বাহিরে তাদেরকে নিজ নিজ জোনে পাটিয়ে দেওয়ার একটি পজ্ঞাপন জারি করেন আইজি প্রিজন। এরপর থেকে বিভিন্ন জেলার কারারক্ষীদের বদলী করে দেওয়া হয় নিজ নিজ সারকেলে।

সিলেট সুনামগঞ্জ হবিগঞ্জ মৌলভীবাজার এই চার জেলা কারাগারে ভুয়া ঠিকানাদারী অসংখ্য পুরুষ ও মহিলা চকুরী করছেন। যাদের ঠিকানা যাচাই বাচাই করা আবশ্যক। কারণ ভূয়া ঠিকানার কারণে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা দেখা দিতে পারে। বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটলে পিলখানার মতো এদের খোঁজে পাওয়া কঠিন। এরকমই সিলেট জোনের কারাগারগুলোতে ভূয়া ঠিকানাদারী কয়েক জনের সাথে কথা হলে এদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কারারক্ষী মহিলা বয়ান দিলেন, ‘আমার স্বামীর নাম গোলাম মস্তফা সিলেট মেট্রপলিটন পুলিশের বড়কর্তার অফিসের ইস্টেনো। প্রায় ২৯ বছরের চাকরী জীবনের এই কারারক্ষী আরও বলেন, ঠিকানা ব্যবহার করেছি চাকুরী পাওয়ার স্বার্থে। এই কারাগারে আমার মতো অনেক ভূয়া নাম ঠিকানাধারী রয়েছে।

এখানে রয়েছেন এমনি আরো অনেকে। তাদের মধ্যে আছেন সুনামগঞ্জের একজন। খোজ নিয়ে দেখা গেছে এই কারারক্ষীর নাম-ঠিকানার কোনো মিল নেই। অথচ তার পদোন্নিতি হয়েছে।

এরকমই বিভাগের চার কারাগারে অসংখ্য ভূয়া নাম-ঠিকানাধারী রয়েছেন। যাদের নামধাম অনুসন্ধান পূর্বক বিধি লিপিবদ্ধ করা এখনই প্রয়োজন বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

একটি অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেট জোনের চার কারাগারে ভুয়া ঠিকানাধারীদের মধ্যে রয়েছেন ওয়াহিদ মিয়া (নায়েক) রক্ষী নং ২১২৫৪, ছাদেক রক্ষী নং ২১৩৩৮, আবু জামাল রক্ষী নং ২১৩৯০, কামাল হোসেন রক্ষী নং ২১৪০২ জহুরা, রক্ষী নং ২: ১৪৮২, কারা সাজিদুর রহমান রক্ষী ২-১৮৯৩ তিনি পদউন্নতিতে নায়ক , আবু তাহের রক্ষী নং ২১৩৫৯ (জমাদার), খোশেদ আলম রক্ষী নং ২১৫৪৭,কামাল হোসেন রক্ষী নং ২১৮৩১, শাহ আলম রক্ষী নং ২১৭২৫, শাহিন রক্ষী নং২১৬১০,আব্দুল মুমিন রক্ষী নং ২১৬২১,এনাম রক্ষী নং ২১৬১৭,রফিক মিয়া রক্ষী নং ২১৮৫৯, মোঃ সিকদার আলী রক্ষী নং রক্ষী নং ২১৩৯৭,গোপাল চন্দ্র দাস রক্ষী নং ২১৫২৫, শহিদ ইসলাম ইসলাম রক্ষী নং ২১৭১৬। আরো রয়েছেন জামাল, মনির, ছাদেক, মোস্তাক, মতিন, নুরুল ইসলাম, ইসমাইল, জয়দূল, কামাল, শাহ জাহান, আইয়ুব আলী, আবুল কালাম, ইসরাফীল। এছাড়াও অসংখ্য ভুয়া ঠিকানাদারী রয়েছেন কারাগারগুলোতে। ভুয়া ঠিকানাদারীদের কয়েকজন প্রতিবেদকের সাথে আলাপচারিতায় বলেন, শীর্ষ মহল থেকে পাতাল মহল পর্যন্ত আমাদের লোক রয়েছে। সিলেট জোনের ডিআইজি প্রিজন আমাদের জেলার লোক। তাই আমরা ভরসা পাচ্ছি। ১৭ সালের শেষ দিকে আইজিপি প্রিজন পরিদর্শনকালে একটি স্মওশ সই করলে সিলেট জোনে ফিরে আসি। জ¦ালা বেড়েছে, যদিও সিলেট বিভাগে বাড়ি নয় আমরাতো বাংলাদেশেরই নাগরিক।

তথ্য অধিকার আইন সরকার বাস্তবায়ন করছে ঠিকই। কিন্তু এই আইনের যথাযত প্রয়োগ নেই বললেও চলে সিলেট বিভাগে। (সংবাদটি চলমান থাকবে)

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..