সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৩৫ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের গুলনী চা বাগানের ১ ও ৬ নং সেকশনের সামনে গুরু প্রবেশ করানোকে কেন্দ্র করে দু পক্ষের সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়ে এ সময় পুরু এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
(২৪ এপ্রিল) মঙ্গলবার বিকেলে চা বাগানের চৌকিদাররা ও ফতেহপুর ইউনিয়নের, ফতেহপুর ২য় খন্ড গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলেদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ততক্ষণে গোয়াইনঘাটে লাশের মিছিলে যোগ হল আর একটি লাশ। নাম তার প্রদ্যুন্ন (২৭) নিহত ব্যক্তি জৈন্তাপুর উপজেলার কালেশ্বরী গ্রামের মৃত বিনয় পাত্রের ছেলে। এ ঘটনার মধ্যে দিয়ে এ উপজেলায় এক মাসে ৬ জন ব্যক্তি খুন হয়েছেন ।
গোয়াইনঘাট থানার আওতাধীন এলাকার আইনশৃঙ্খলা চরম অবনতি ঘটেছে। পুলিশ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সাভাবিক করতে চেষ্টা চালালেও পর পর ৬ টি খুনে জানান দিচ্ছে কতটুকু পরিস্থিতি সাভাবিক আছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় প্রতিটি সাধারণ জনগণের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম আতংক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, ফতেহপুর ২য় খন্ড গ্রামে দিনের বেলায় কোন পুরুষ লোকের দেখা পাওয়া যায় নি, কিছু কিছু বাড়ীতে ছোট ছোট ছেলে মেয়ে সহ মহিলাদের উপস্থতি দেখা গেছে।পুরুষরা গ্রেফতার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন মহিলারা।
জানা যায়, ঐ দিন মঙ্গলবার বিকেলে আহাদের গরু বাগানের ভেতরে প্রবেশ করে চা গাছ বিনষ্ট করে ফেলে, এর দায়ে বাগানের চৌকিদাররা গরু গুলোকে আটক করে খোয়াড়ে নিতে চাইলে, এ সময় আহাদ বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এসময় উভয় পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থলে প্রদ্যুন্ন পাত্র মারা যান। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে মহিলা সহ ৬ জন ব্যক্তি আহত হন।
বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, চা বাগানের শ্রমিকরা ২৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর ঐ এলাকার বিভিন্ন বাড়ীতে হামলা চালিয়েছে, লুটপাট করা হয়েছে নগদ টাকা, ধান, গরু সহ ঘরের আসবাবপত্র।
এদিকে ঘটনার ২ দিন পর নিহত প্রদ্যুন্ন পাত্রের চাচা উপেন্দ্র পাত্র বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে গোয়াইনঘাট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- (১৮) তারিখ- ২৬-০৪-১৮ ইং।
মামলার আসামীরা হলেন, ১।আলবাব, ২। আহাদ, ৩। শহিদুর, ৪।খালেদ, ৫।নিজাম উদ্দীন, ৬। লতিফুর রহমান, ৭। খলিল, ৮। পরিনা বেগম, ৯। মকবুল হোসেন, ১০। ফাতেমা বেগম, ১১।বকুল মিয়া ও ১২। রফিক মিয়া।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ তারা হলেন, ফতেহপুর ২য় খন্ড গ্রামের নিজাম উদ্দীনের ছেলে আলবাব , আব্দুল আহাদ , নিজামের স্ত্রী পরিনা বিবি ও মৃত সিকন্দর আলীর পুত্র রফিক মিয়া।
স্থানিয় বাসিন্দা আম্বিয়া বেগম দাবি করেন, আমাদের বাড়ীঘরের সব কিছু ভেঙ্গে লুটকরে নিয়ে গেছে আমরা এখন আতংকের মাঝে আছি, বাগানের চৌকিদাররা আবার ও হামলা চালাতে পারে আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।
গুলনী চা বাগানের ডেপুটি ম্যানেজার আকলাক উজ্জামান শামীম এর সাথে আলাপ কালে তিনি জানান, ২য় খন্ডের আহাদের লোকজন ২৪ এপ্রিল গরু বাগানের ভিতর প্রবেশ করে, আমার পাহারাদাররা এসময় বাধা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে, এসময় আমার চা বাগানের একজন পাহারাদার ঘটনাস্থলে মারা যায়। আমি ও আমার বাগানের শ্রমিক সহ চরম আতংকের মধ্যে আছি। ঘটনার জন্য মামলা হয়েছে, আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের প্রতি আহবান জানান।
এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার জানান, বর্তমানে ঐ এলাকার পরিস্থিতি সাভাবিক আছে, আসামিদের ধরতে সাড়াশি অভিযান চলছে। আইনশৃঙ্খলা যাতে করে অবনতি না হয় সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। সাধারণ জনগনের জানমালের রক্ষায় যা যা করা দরকার আমরা তা করব।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd