সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৪১ অপরাহ্ণ, মে ৮, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সুমি কাউসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে উপজেলার শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী রানীশংকৈল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে। কিন্তু এখন সে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারছে না। কারণ বাবার দীর্ঘ অসুস্থতায় সংসারের দায়িত্ব সে নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছে।
বাবা একজন দিনমজুর, চায়ের দোকানদার। মাস ছয়েক আগে থেকে তিনি অসুস্থ। দোকান চালাতে পারেন না। অভাবের সংসার। চা দোকানই যে সুমিদের জীবন চলার একমাত্র সম্বল। তাই বাধ্য হয়ে এ কিশোরী ছাত্রী তার পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটলেও সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়। খবর ইউএনবি।
আগে যেখানে সকাল হলে সুমি স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিত, এখন সে ভোর হলে চলে আসে শহরের মুক্তা সিনেমা হল চত্বরের চায়ের দোকানে সেখানেই সংসারের খরচ মেটাতে দিন পার করে এ কিশোরী শিক্ষার্থী।
প্রতিদিন যা রোজগার হয় তা দিয়ে অভাবের সংসারের খরচ বহন করে এবং জোগান দিতে হয় বাবার চিকিৎসা খরচও।
সুমি উপজেলা রানীশংকৈল শহরের পুরনো গুদড়িবাজারের আবদুস সামাদের মেয়ে। বাবার দুই মেয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। বুকভরা আশা নিয়ে পড়ালেখা শুরু করলেও বাবার শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তার পড়ালেখা এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আর বড় বোন সাবিনা আক্তার নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে খরচ চালাতে না পেরে তার পড়ালেখাও এখন বন্ধ। সে বাড়িতেই থাকে।
সুমি জানায়, তার ইচ্ছা পড়ালেখা শিখে একজন স্কুলশিক্ষিকা বা ভালো কোনো চাকরি করে বাবাকে সহযোগিতা করবে। কিন্তু বাবা প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে দোকানে আসতে পারেন না। তাই দোকান তাকেই সামলাতে হয়। ধরতে হয়েছে সংসারের হাল।
এ কিশোরী শিক্ষার্থী বলে, ‘দোকান শেষে বাড়ি গিয়ে পড়ালেখা করি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা স্যার আমাকে উৎসাহ জোগাচ্ছেন পড়ালেখা বন্ধ না করার জন্য। তিনি পড়ালেখার ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন।’
প্রধান শিক্ষক সোহেল রানা জানান, সুমি মেধাবী ও শান্ত প্রকৃতির মেয়ে। দোকানে বসে চা বিক্রি করা খারাপ নয়। আমরা তাকে সহযোগিতা করব।
সুমির বাবা আবদুস সামাদ বলেন, আমি প্যারালাইসিস রোগে আক্রান্ত হয়ে দোকান চালাতে পারছি না। আমার মেয়েটি দোকান চালিয়ে সংসার আর চিকিৎসার খরচ চালাচ্ছে। তাকে নিয়ে আমি খুব চিন্তিত।
সুমির বড় বোন সাবিনা বলে, পড়ালেখার ইচ্ছা আছে। কিন্তু সংসারই তো চলে না। পড়ার খরচ চালাব কি করে। তাই বাধ্য হয়ে স্কুলে যাওয়া ছেড়ে দিয়েছি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd