সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:১৪ অপরাহ্ণ, মে ২১, ২০১৮
এনামুল হাসান :: সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের শাহগলি বাসষ্টেশন থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার সড়ক দ্রুত সংস্কারের দাবীতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছেন জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ধর্মঘটের কারণে জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট থেকে বিভাগীয় নগরী সিলেটে যাতায়াতের প্রধান দু’টি সড়কে যানবাহন চলাচল গত ১৫ দিন থেকে বন্ধ রয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এ দু’টি সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, চাকুরীজীবি ও ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ প্রতিনিয়ত চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। ব্যবসা-বাণিজ্যে ক্রমেই ধস নেমে আসছে। ছোট খাটো পরিবহনগুলো চলাচল করলেও ভাড়া নিচ্ছে তিনগুণ হারে। পরিবহন ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন কয়েক কোটি টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে সরকারকে। অথচ এনিয়ে সরকারের কোন মাথা ব্যাথা পরীলক্ষিত হচ্ছেনা। গত ৫ মে থেকে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের ডাকে লাগাতার ধর্মঘট চলে আসলেও আজ অবধি তা থেকে উত্তরণের জন্য প্রশাসনকে কোন উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি। ফলে পবিত্র রজমান মাসের দিনেও এ অঞ্চলের মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভুক্তভোগী জনসাধারণ জানান, জকিগঞ্জ-সিলেট সড়ক সংস্কারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও সওজের উদাসীনতার কারণে দূরপাল্লার পরিবহনগুলো অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এতে সাধারণ মানুষ চরম ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনগুণ ভাড়ায় কার, লাইটেস, পিকআপ, সিএনজি-অটোরিকশায় জকিগঞ্জ থেকে জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে যেতে হচ্ছে। বর্তমানে সড়কটি যানচলাচলের অনেকটা উপযোগী হলেও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হচ্ছেনা। প্রশাসনও তা প্রত্যাহারের জন্য কোন উদ্যোগ গ্রহন করতে দেখা যাচ্ছেনা।
এ প্রসঙ্গে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক সংস্কারের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসএনজেবি’র পরিচালক লুৎফুর রহমান জানান, আমরা সিলেট-জকিগঞ্জ রোডের শুধুমাত্র জকিগঞ্জ অংশে এক সাথে গুরুত্বপূর্ণ ৩টি স্থানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। খুব দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে আগামী সপ্তাহের ভিতরে আমরা আরোও দু’টি স্থানে কাজ শুরু করবো। চলতি রমজান মাসে মোট পাঁচটি স্থানে এক সাথে কাজ করে আমরা সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ করতে চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী ২০২০ সালের মার্চে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও আমরা আগামী ২০১৯ সালের ভিতরেই সম্পূর্ণ কাজ শেষ করার আশাবাদী। তিনি বর্তমানে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়ক গাড়ি চলাচলের উপযোগী দাবী করে বলেন, শাহগলী থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের চেয়ে এখন চারখাই থেকে জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত সড়ক আরো খারাপ। সে সড়কের তুলনায় বর্তমানে অনেক ভালো রয়েছে শাহগলি থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক। তাই যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে কোন অসুবিধা আছে বলে আমি মনে করছিনা।
এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ফলিক মিয়া বলেন, শাহগলী থেকে জকিগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক যানচলাচলের উপযোগী না থাকায় আমরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি। এর আগেও আমরা প্রায় ১৭ দিন গাড়ি বন্ধ রেখে ধর্মঘট পালন করেছি এবং একাধিকবার সড়ক সংস্কারের জন্য আন্দোলন করেছি। পরে তৎকালীন জেলা প্রশাসকের আশ্বাসে প্রত্যাহার করেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি। ভাঙ্গা সড়কের কারণে মালিক পক্ষ চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাই সড়ক পুরোপুরি সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে সিলেটের জেলা প্রশাসক নুমেরী জামানের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে দেখি কি করা যায়। আর আপনারও একটু আলাপ আলোচনা করে দেখুন পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ কি বলেন। পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সহ সকলে এ বিষয়ে আন্তরিক না হলে তো তা সমাধান করা সম্ভব নয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd