সুনামগঞ্জে ভুয়া দলিল দিয়ে ৮২ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিদেশে চেয়ারম্যান পুত্র

প্রকাশিত: ১০:৩৩ পূর্বাহ্ণ, মে ২৯, ২০১৮

সুনামগঞ্জে ভুয়া দলিল দিয়ে ৮২ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে বিদেশে চেয়ারম্যান পুত্র

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান পুত্র বালু-পাথর ব্যবসায়ী জমির ভুয়া দলিলপত্র দিয়ে ৮২ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ উত্তোলন করেই পাড়ি জমালেন সাউথ আফ্রিকা।

জাল-জালিয়াতির কারিগড় কথিত ব্যবসায়ীর নাম হুমায়ুন কবির বাবলু। তিনি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের তরঙ্গিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তফাজ্জল হোসেন খোকন মাস্টারের ছেলে।

অভিযোগ রয়েছে ‘এ জালিয়াতির পেছনে তৎকালীন সময়ে কর্মরত থাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংক সুনামগঞ্জ শাখার এক কর্মকর্তার যোগসাজস রয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অবশ্য বলেছেন, ‘ঋণ গ্রহিতা প্রকৃত কাগজপত্র দিয়েই ব্যাংক ঋণ উত্তোলন করেছিলেন।’

“এ ব্যাপারে দুদকেও একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।”

সংশ্লিস্ট সুত্রে ও দুদকের দায়ের করা অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ছাতারকোনা মৌজার ১৬৭৬ নম্বর দাগের ৭১ শতাংশ বাড়ি রকম ভূমির রেকর্ডভুক্ত মালিক প্যারী মোহন দাসের ছেলে পিন্টু দাসকে বিক্রেতা সাজিয়ে নিজে ক্রেতা সেজে বিশ্বম্ভরপুর সাবরেজিস্ট্রি অফিসে দলিল (দলির নম্বর ৭১১/২০১৬) করেন চেয়ারম্যান পুত্র হুমায়ুন কবির বাবলু।’

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ‘প্যারীমোহন দাস ১৯৬৮ ইংরেজিতেই ছেলে পিন্টু দাসসহ পরিবার পরিজন নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভারতে চলে গেছেন। রেজিস্ট্রিকালে ৭১১ নম্বর দলিলে পিন্টু দাস হিসেবে যার ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে তিনি পিন্টু দাস নয় বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।’

‘এই জাল দলিল দিয়েই হুমায়ুন কবির বাবলু মার্কেন্টাইল ব্যাংক, সুনামগঞ্জ শাখা থেকে ৮২ লাখ টাকা ব্যাংক ঋণ উত্তোলন করেন। জাল দলিলের এই বিষয়টি উপজেলার মেরুয়াখলার বাসিন্দা রইছ মিয়া লিখিতভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান বরাবার অভিযোগ দায়ের করেছেন। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদেরও এর অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।’

দুদকে দায়ের করা লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘হুমায়ুন কবির বাবলু মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখার তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপকের যোগসাজসে ভুয়া নামজারী, খতিয়ানের পর্চা এবং তার মা আমেনা বেগমের নামে ভূয়া বালু পাথরের ব্যবসা দেখিয়ে ৮২ লাখ টাকা উত্তোলন করে প্রায় এক মাস পর্বে সাউথ আফ্রিকা পাড়ি জমিয়েছেন।’

অভিযুক্তর বাবা সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তফাজ্জল হোসেন খোকন মাস্টার বলেন, ‘আমার ছেলেদেরকে আমি অনেক আগেই জমি-জমা ভাগবাটোয়ারা করে পৃথক করে দিয়েছি। আমার ছেলে হুমায়ুন কবির বাবলু কীভাবে কত টাকা ব্যাংক ঋণ উত্তোলন করেছে আমি তা জানিনা। আমার সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তারা যোগাযোগ করেছিলেন, আমি বলেছি, আমি এর দায় নেব না।’

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক জাহেদ হোসেন বলেন, ‘প্রকৃত জমি দেখেই ব্যাংক বন্ধক নিয়ে ঋণ দিয়েছেন।’

তিনি জানান, ‘৮২ লাখ টাকা ঋণ দেবার উপযুক্ত ছিলেন হুমায়ুন কবির বাবলু। ব্যাংক যথাযথ প্রক্রিয়ায় ঋণ দিয়েছে, এর সাথে কোনো রকম জালিয়াতি হয়ে থাকলে তাতে আমার কোনো ধরণের সম্পৃক্ততা ছিলোনা।’

মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সুনামগঞ্জ শাখার বর্তমান ব্যবস্থাপক বদরুল ইসলাম সোমবার বলেন, ‘এই ঋণ নিয়ে শীঘ্রই অর্থ ঋণ আদালতে মামলা দায়ের করা হবে।’

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

May 2018
S S M T W T F
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..