সিসিক নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন পেতে ৮ প্রার্থীর দৌড়ঝাপ

প্রকাশিত: ১২:৫১ পূর্বাহ্ণ, জুন ৩, ২০১৮

সিসিক নির্বাচন দলীয় মনোনয়ন পেতে ৮ প্রার্থীর দৌড়ঝাপ

কামরুল আই রাসেল :: সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিকি) নির্বাচন সঠিক সমযে হচ্ছে কি না এ নিয়ে ছিল নানা জল্পনা। সব জল্পনা ও কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী আগামী ৩০ জুলাই সিসিকের ভোট প্রহণ অুনুষ্টানের ঘোষনা দিয়েছে।
এবারই প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
নির্বাচনের তারিখ ঘোষিত হলেও প্রশ্ন- কে বা কারা হচ্ছেন দলেীয় প্রার্র্থীী ? বিশেষত মেয়র পদে কারা লড়বেন-এই নিয়ে ভোটারদের মধ্যে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
প্রধান রাজনৈতিক দুই দল আওয়ামী লীগ আর বিএনপিতে দেখা দিয়েছে প্রার্থী জট। দুই দলেরই অর্ধডজনের বেশী প্রার্থী মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নের জন্য চালাচ্ছেন লবিংও। মাঠেও সরব রয়েছেন তারা। আওয়ামী লীগ-বিএনপির বাইরেও আওয়ামী ও বিএনপি জোটের শরকি দল থেকেও অনেকে নাম শোনা যাচ্ছে মেয়র প্রার্থী হিসেবে। তবে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ থেকে ৪জন এবং বিএনপি থেকে ৪জন পার্থী নির্বাচনী দৌড়ঝাপ শুরু করেছেন।
আওয়ামী লীগ থেকে দলটির মহানগর সভাপতি বদরউদ্দিন কামরান ছাড়াও মনোনয়ন পেতে তৎপর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ও সিসিক কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ। এর বাইরে দলীয় রাজনীতিতে সরাসরি না থাকলেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছে ক্রীড়া সংগঠক ও ব্যবসায়ী মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিমের নাম।
এদিকে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি থেকে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক ছাড়া নগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম প্রার্থী হতে চান। সিটি করপোরেশনের ৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদির নামও শোনা যাচ্ছে এ তালিকায়।
সব প্রার্থীই ইতোমধ্যে জোরেসোরে শুরু করেছেন প্রচারণা ও গনসংযোগ। তারিখ ঘোষণার পর আরো আঁটঘাট বেঁধে নেমেছেন তাঁরা। দলীয় হাইকমান্ডের সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি নাগরিকদের মন জয়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
এছাড়া সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোকে প্রার্থীরা সুযোগ হিসেবে নিচ্ছেন। তারা নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাও তুলে ধরছেন এসব অনুষ্ঠানে।
প্রতিদিনই সভা, সেমিনার, খেলাধুলাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
সিসিক মেয়র পদে দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র বিএনপির কেন্দ্রয়ি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘আমরা নির্বাচনমুখী দল। তাই আমরা চাই সঠিক নির্বাচন। আগে দল সিদ্ধান্ত নিক যে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। যদি দল নির্বাচনে যায় তাহলে আমাকেই মনোনয়ন দেবে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, ‘দলের সবাই চায় সিলেট সিটি করপোরেশনে আমি প্রার্থী হই। তাই দলীয় কর্মসূচির মাধ্যমে আমি আমার প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি।’
তিনি বলেন, বিএনপির বিজয় ধরে রাখতে প্রার্থী পরিবর্তন করা দরকার। আশা করি কেন্দ্র আমাকে মনোনয়ন দেবে।
এদিকে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম ইতিমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে সিসিকের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন বলে আগাম ঘোষণা দিয়েছেন।
মেয়র পদে দলীয় প্রার্থীতার ব্যাপারে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান বলেন, গত নির্বাচনে পরাজিত হলেও আমি সবসময় নগরবাসীর পাশে ছিলাম। তাই এবার দলীয় মনোনয়ন ও জয়ের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।
মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন বলেন, ‘সবার একটা দাবি আমি যেন প্রার্থী হই। নগরবাসীর দাবি অনুযায়ী মনোনয়ন চাইবো’
সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান প্রসঙ্গে আসাদ বলেন, প্রার্থী হিসেবে কামরান জনসমর্থন হারিয়েছেন এটা তো গত নির্বাচনেই প্রমাণিত। তাই নগরভবনে আবারও আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনতে এবার নতুন মুখ প্রয়োজন বলেই আমি মনে করি।
মানুষ নতুনত্ব চায় দাবি করে তিনি বলেন, মেয়র পদ পুনরুদ্ধারের জন্য প্রার্থী পরিবর্তন করা দরকার।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন প্রত্যাশা প্রত্যেক নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকার। তবে দেয়া না দেয়া প্রওত্যেক দলের কেন্দ্রের ব্যাপার। আপওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে যাকে যোগ্য মনে করবেন তিনি তাকেই মনোনয়ন দেবেন বলে জানান তিনি।
সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০১ সালে। ২৭টি ওয়ার্ড ও ২৬.৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তন নিয়ে গঠিত এ সিটি করপোরেশনটি যাত্রা শুরু করে ওই বছরের ৩১ জুলাই। তবে ২০০১ সিটি করপোরেশন হিসেবে যাত্রা শুরু হলেও সিসিকের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ সালে।
জেলা নির্বাচন কমিশন ও স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত ২০১৩ সালের ১৫ জুন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন হয়।
সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়ন জমা দেয়া যাবে ১৮ জুন পর্যন্ত। তা যাচাই বাছাই হবে ১ ও ২ জুলাই। আর মনোনয়ন প্র্যাহারের শেষ সময় ৯ জুলাই।
বর্তমানে সিলেট সিটি করপোরেশনে (সিসিক) মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ১৫ হাজার ৬৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৬৯ হাজার ২৯১ জন। নারী ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৭৩ জন। যা ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত সিসিক নির্বাচনে ছিল দুই লাখ ৯১ হাজার ৪৬ জন। এবছর সিলেট সিটি করপোরেশনে বিভিন্ন এলাকায় নতুন ভোটার সংখ্যা বেড়েছে ২৪ হাজার ১৮ জন এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১২ হাজার ১১০ জন এবং নারী ভোটার ১১ হাজার ৯০৮ জন।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

June 2018
S S M T W T F
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
30  

সর্বশেষ খবর

………………………..