মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: গ্রামগঞ্জের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের ফলে ব্যবহার অনেকাংশে কমে এলেও নদীমার্তৃক বাংলাদেশে নৌকা এখনো গুরুত্বপূর্ণ বাহন। বিশ্বনাথে গতবছর ও চলতি বছর বন্যা না হলেও সিলেট অঞ্চলে প্রতি বছর বন্যায় খালবিল ও এলাকার রাস্তাঘাট অনেকটা তলিয়ে যায়। যে কারনে বর্ষা এলেই নৌকার কদর বেড়ে যায়। তাই শত বছরের ঐতিহ্যবাহী সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বৈরাগী বাজারে বসে নৌকার হাট। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার নৌকার হাটকে কেন্দ্র করে সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।
বৈরাগী বাজার নৌকার হাটে গিয়ে দেখা যায়, বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া মাকুন্দা নদীর চরে সারি সারি নৌকা সাজিয়ে বসে আছেন কারিগররা। দুপুর থেকে বিকালের মধ্যে দরদাম ও দেখেশুনে ক্রেতারা কিনে নিয়ে যান পছন্দের নৌকা। পাশাপাশি নৌকা বাজারকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রকমের আকর্ষনীয় বৈঠাও সাজিয়ে রেখেছেন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়দের মতে, নৌকার বাজার হিসেবে বৈরাগী বাজার সিলেট অঞ্চলের মানুষের কাছে বেশ পরিচিত। এ হাটটি প্রায় ৬০/৭০ কিংবা তারও অধিক বছরের পুরনো হবে। তবে কেউ এর সঠিক ইতিহাস বলতে পারেননি।
বৈরাগী বাজারে কথা হয় নৌকার ব্যবসায়ী উপজেলার রায়পুর গ্রামের আশকর আলী, নিপেন্দ্র রায়, ফয়জুর রহমান, মাখর গাওয়ের রফিজ মিয়া, কারিকোনা গ্রামের আব্দুল মানিকসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, জারুল, কড়ই, রেন্টি, আম, জাম, চামবুল, শিমুল ও কৃষ্ণচূড়ারসহ প্রায় সব কাঠ দিয়েই নৌকা তৈরি করা হয়ে থাকে। কাঠের ব্যবহার ও আকারের ওপর প্রতিটি নৌকার দাম পড়ে ৩হাজার থেকে ১৫হাজার টাকা পর্যন্ত। জারুলের তৈরী নৌকা সর্বোচ্চ ও শিমুলের তৈরী নৌকা সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হয়ে থাকে।
বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা ক্রেতা আকবর আলী জানান, এখনই তো নৌকার সময়। আর এই যাতায়াত, গৃহস্থালি, গবাদিপশু ও প্রয়োজনীয় কাজের জন্য তিনি নৌকা কিনতে এসেছেন।
বাজারের ইজারাদারের দ্বায়িত্বে থাকা নওধার গ্রামের আনিসুজ্জামান খান বলেন, বাংলা সনের আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন-এ চার মাস উপজেলার খালবিল ও নদনদীতে পানি ভরপুর থাকে। এই সময়টাতেই নৌকার হাটে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। প্রতি হাটে ৫০/৬০টি নৌকা বিক্রি হয়ে থাকে। কোনো হাটে ১শ পেরিয়ে যায়।
Sharing is caring!