নগর জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা, ভোট গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত

প্রকাশিত: ৫:৪০ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৯, ২০১৮

নগর জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা, ভোট গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত

আবুল হোসেন :: সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। প্রস্তুত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও। ইতোমধ্যে নগর জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ১৪ প্লাটুন বিজিবি র‌্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্তত ৫ হাজার সদস্য। মাঠে নেমেছেন ১৮ ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাচন কমিশনের ১১ পর্যবেক্ষক। ঝুঁকিপূর্ণ ৮০ ভোট কেন্দ্রকে ঘিরে নেয়া হয়েছে নিñিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলীমুজ্জামান জানিয়েছেন, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্যে ইতোমধ্যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে নির্বাচন কমিশন বদ্ধপরিকর।

কোতোয়ালীর অধিকাংশ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ, পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ১৩৪ টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৮০টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে পুলিশের বিশেষ শাখা (এস.বি)। নির্বাচন কমিশনের ভাষায়-এই ভোট কেন্দ্রের নাম ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ’। ঝুঁকিপূর্ণ ৮০ কেন্দ্রের মধ্যে শুধুমাত্র কোতোয়ালী থানা এলাকায়ই রয়েছে ৪০ ভোটকেন্দ্র। সূত্র জানায়, কোতোয়ালী থানা এলাকায় ১৫ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৪০টি ঝুঁকিপূর্ণ ও ২৭টি সাধারণ, দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকায় ২টি ওয়ার্ডের ৬টি ঝুঁকিপূর্ণ, জালালাবাদ থানা এলাকার ১টি ওয়ার্ডের ৪টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ, এয়ারপোর্ট থানা এলাকার ৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ১১ টি ও সাধারণ কেন্দ্র ১২টি, মোগলাবাজার থানা এলাকার ১টি ওয়ার্ডের ৫ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ ও শাহপরান থানা এলাকার ৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ভোট কেন্দ্র ১৪টি ও সাধারণ ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৫টি। ১৩৪ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে কোতয়ালী থানায় ৬৭ টি, দক্ষিণ সুরমা থানায় ১২টি, জালালাবাদ থানায় ৮টি, এয়ারপোর্ট থানায় ২৩টি, মোগলাবাজার থানায় ৫টি ও শাহপরান থানায় ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৯টি।
ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রের তালিকা, সিসিকের ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রগুলো হচ্ছে-সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, চৌহাট্টা (পূর্ব পার্শ্ব ভবন) ও সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা, চৌহাট্টা (উত্তর পার্শ্ব ভবন), মদন মোহন কলেজ (পুরাতন ভবন), রসময় হাইস্কুল-দাড়িয়াপাড়া, ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ, মীরের ময়দান (নতুন ভবন), আম্বরখানা কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আম্বরখানা কলোনি সংলগ্ন (পশ্চিম পার্শ্ব ১ম ও ২য় তলা), আম্বরখানা কলোনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আম্বরখানা কলোনী সংলগ্ন (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), খাসদবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাসদবীর (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন ১ম ও ২য় তলা), খাসদবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খাসদবীর (উত্তর পার্শ্ব), স্কলার্স হোম প্রিপারেটরি স্কুল, ইলেকট্রিক সাপ্লাই রোড আম্বরখানা, জামেয়া মাদিনাতুল উলুম দারুস সালাম, খাসদবীর (২য় তলা), বিলাস কমিউনিটি সেন্টার, চৌকিদেখী, আনোয়ারা মতিন একাডেমি, চৌকিদেখী (পূর্ব ও উত্তর পার্শ্ব), একাডেমিক ভবন প্রাইমারি ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, সুবিদবাজার (২য় ও ৩য় তলা), আব্দুল গফুর ইসলামী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, জালালাবাদ আ/এ, (ভবন-২ নতুন), গৌছ উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম পীর মহল্লা, শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা, পাঠানটুলা (পশ্চিম পার্শ্ব ভবন), সিটি মডেল স্কুল, নোয়াপাড়া, বীরেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, ব্রাহ্মণশাসন (উত্তর পার্শ্ব ভবন), মদন মোহন কলেজ কমার্স ফ্যাকাল্টি, পাঠানটুলা ক্যাম্পাস, তারাপুর, পাঠানটুলা দ্বি-পাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়, পাঠানটুলা (পূর্ব পার্শ্ব ভবন ৩), পাঠানটুলা দ্বিপাক্ষিক উচ্চ বিদ্যালয়, পাঠানটুলা (পূর্ব পার্শ্ব ভবন-২), সিলেট ইনক্লুসিভ স্কুল এন্ড কলেজ এতিম স্কুল, সমাজকল্যাণ কমপ্লেক্স, বাগবাড়ী (পশ্চিম পার্শ্ব ভবন), আনন্দ নিকেতন, সুবিদবাজার (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), জালালাবাদ মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, ঘাসিটুলা, ডহর প্রাথমিক বিদ্যালয়, ডহর (পূর্ব পার্শ্ব ভবন), মঈন উদ্দিন আদর্শ মহিলা কলেজ, মধুশহীদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মধুশহীদ (২য় ও ৩য় তলা), ভাতালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভাতালিয়া, (নীচতলা), লামাবাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঈনুন্নেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শেখঘাট (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), ভবন-২, শেখঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শেখঘাট, সরকারি বাক শ্রবণ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়, শেখঘাট, জামিয়া ইসলামিয়া মাদানিয়া কাজির বাজার মাদ্রাসা, কাজিরবাজার, মির্জাজাঙ্গাল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মির্জাজাঙ্গাল, সরকারি অগ্রগামী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, জিন্দাবাজার, সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, কালীঘাট (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), হাকীম বশিরুল হক ছাত্রাবাস ও ঔষধ প্রস্তুত ব্যবহারিক বিভাগ (পুরাতন সরকারি তিব্বিয়া কলেজ), চালিবন্দর, দুর্গাকুমার পাঠশালা, বন্দরবাজার, শাহজালাল জামিয়া ইসলামিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, মিরাবাজার (পশ্চিম পার্শ্ব ভবন), কিশোরী মোহন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (বালক), মিরাবাজার, দি এইডেড হাইস্কুল, তাঁতিপাড়া, কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর পার্শ্ব ভবন, নয়াসড়ক, কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, নয়াসড়ক (পূর্ব পার্শ্ব ভবন), কাজী জালাল উদ্দিন বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজীটুলা, কাজী জালাল উদ্দিন বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাজীটুলা (নীচতলা), দি রয়েল এমসি একাডেমি, কাজীটুলা, আম্বরখানা দরগা গেইট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দরগা গেইট, মডেল হাইস্কুল, মিরাবাজার, কাজী জালাল উদ্দিন বহুমুখী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমারপাড়া, ঝর্ণারপাড়া, (উত্তর পার্শ্ব ভবন), রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঝেরঝেরিপাড়া (৩য় ও ৪র্থ তলা), হাজী শাহ মীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাহী ঈদগাহ, (পূর্ব পার্শ্ব ভবন), বখতিয়ার বিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রায়নগর, এমসি কলেজ, টিলাগড়, নবীনচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবপাড়া (উত্তর পার্শ্ব ভবন), নবীনচন্দ্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দেবপাড়া, (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), কেন্দ্র-২, সৈয়দ হাতিম আলী বিদ্যালয়, সাদিপুর (নীচতলা), চান্দুশাহ জামেয়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা, কালাসীল, সোনারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনারপাড়া, (পুরাতন), স্কলার্স হোম প্রিপারেটরী স্কুল, শিবগঞ্জ, শাহজালাল উপশহর উচ্চ বিদ্যালয়, উপশহর, বি ব্লক (অডিটরিয়াম), শাহজালাল উপশহর উচ্চ বিদ্যালয়, (দক্ষিণ পার্শ্ব ভবন), মাধ্যমিক শাখা), উপশহর, বি-ব্লক, আব্দুল হামিদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাছিমপুর (পূর্ব পার্শ্ব ভবন), মেন্দিবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেন্দিবাগ, উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেররতন (১ম তলা), নতুন ভবন, উমরশাহ তেররতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তেররতন, মূল ভবন, গাজী বুরহান উদ্দিন গরম দেওয়ান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, টুলটিকর, মেনিখোলা মৌরবিবি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কায়েস্থরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কায়েস্তরাইল, খোজারখলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খোজারখলা (ভবন নং-১), কদমতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কদমতলী (নীচতলা টিনসেডসহ), ঝালোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালণয়, ঝালোপাড়া, সিলেট রেলওয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন সাধুরবাজার, জহির তাহির মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, পাঠানপাড়া, জহির তাহির মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়, পাঠানপাড়া (দক্ষিণ পার্শ্ব নতুন ভবন), গোটাটিকর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোটাটিকর, গোটাটিকর দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়, গোটাটিকর, হবিনন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হবিনন্দী।
ভোটকেন্দ্রের জন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ হাজার সদস্য, সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ৩ হাজার ১০৮ জন সদস্য। এর মধ্যে ১৩৬ জন এস আইসহ পুলিশের ৯৩৮ সদস্য, ব্যাটালিয়ন ও সাধারণ আনসার মিলে ২ হাজার ১৭০ জন আনসার সদস্য। ঝুঁকিপূর্ণ প্রতি কেন্দ্রে থাকবেন পুলিশ ২৪ জন ও সাধারণ ভোটকেন্দ্রে থাকবেন ২২ জন। সে হিসেবে ঝুঁকিপূর্ণ ৮০ ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৯২০ জন ও সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ১৮৮ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।
থাকবেন আরো ২ হাজার, নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট সূত্রের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ভোট কেন্দ্রের বাইরে ভোটকেন্দ্রের আশপাশ এলাকায় ভোটারদের নিরাপত্তায় থাকবেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো ২ হাজার সদস্য। বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ, আর্মড পুলিশ, আনসারসহ সব মিলিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর অন্তত ৫ হাজার সদস্য মাঠে রয়েছেন।
প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন, নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্যে প্রস্তুত নির্বাচন কমিশন। ইতোমধ্যে ভোট গ্রহণের জন্যে নিয়োগকৃত ২ হাজার ৯১২ জন ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন-১৩৪ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৯২৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ১ হাজার ৮৫২ জন পোলিং অফিসার। আজ রোববার এ সকল কর্মকর্তা ব্যালট পেপার, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে ভোটকেন্দ্রে চলে যাবেন। ভোটকেন্দ্রে রাতে অবস্থানের পর আগামীকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করবেন তারা। এ লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন।
বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে, জানা গেছে, গতকাল শনিবার সকালেই নগরীতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা টহল শুরু করেন। নির্বাচন উপলক্ষে নগরীতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। বিজিবি সিলেট সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার কর্নেল নাসির উদ্দিন জানান, শনিবার সকাল ৬টা থেকে নগরীতে ১৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়। আরো ৪ প্লাটুন বিজিবি সদস্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন। এদিকে, নির্বাচন উপলক্ষে নগর পুলিশের সদস্য ছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ পুলিশ সদস্যদের নিয়ে আসা হয়। পুলিশ সদস্যরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে ছাড়াও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত থাকবেন।
জানা গেছে, পুলিশ ও আর্মড পুলিশসহ প্রতি ৩ ওয়ার্ডে একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। প্রতি ওয়ার্ডে থাকবে পুলিশের একটি মোবাইল ফোর্স। এছাড়াও প্রতি ওয়ার্ডে র‌্যাবের একটি করে পৃথক টিম থাকবে। সব মিলিয়ে নগরীতে র‌্যাব-পুলিশের ৬৩টি টিম মোতায়েন থাকবে।
আছেন ১৮ ম্যাজিস্ট্রেট, সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আজ ২৯ জুলাই রোববার থেকে আগামী ১ আগস্ট বুধবার পর্যন্ত নগরীতে দায়িত্ব পালন করবেন ১৮ ম্যাজিস্ট্রেট। এর মধ্যে ৯ জন হলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৯ জন হলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ নির্বাচনী অপরাধসমূহ আমলে নিয়ে তাৎক্ষণিক বিচারিক আদালত পরিচালনা করবেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটগণ বিজিবি সদস্যদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্সকে নির্দেশনা দেবেন। প্রতি ৩ ওয়ার্ডের জন্যে থাকবেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মাঠে নেমেছেন ১১ পর্যবেক্ষক, অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনের পরিস্থিতি নিবিড় ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণের জন্যে আজ থেকে মাঠে নামছেন নির্বাচন কমিশনের নিয়োগকৃত ১১ পর্যবেক্ষক। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট’র মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুককে প্রধান নির্বাচন সমন্বয়কারী করে গঠিত পর্যবেক্ষক টিমের অন্যদের মধ্যে ৫ জন হলেন ও জেলা নির্বাচন অফিসার ও ৫ জন উপজেলা নির্বাচন অফিসার। নির্বাচনে ব্যালট ছিনতাই, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা প্রদান, জাল ভোট, অবৈধ প্রভাব বিস্তার রোধে পর্যবেক্ষকরা দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো অনিয়ম ও ত্রুটি-বিচ্যুতি পরিলক্ষিত হলে তা তাৎক্ষণিক রিটার্নিং অফিসার থেকে শুরু করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পর্যন্ত জানাতে হবে পর্যবেক্ষকদের। ১১ পর্যবেক্ষক গতকাল শনিবার সিলেট পৌঁছেই তাদের কাজ শুরু করেছেন।
ভোটের লড়াইয়ে ১৯৫ প্রার্থী,সিলেট সিটি কর্পোরেশনের অনুষ্ঠিতব্য ৪র্থ এই নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে মোট ১৯৫ জন প্রার্থী ভোটের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়েছেন। এর মধ্যে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান নৌকা প্রতীকে, বিএনপি মনোনীত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী ধানের শীষ প্রতীকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী ও নগর জামায়াতের আমীর এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের টেবিল ঘড়ি প্রতীকে, বাসদ মনোনীত প্রার্থী আবু জাফর মই প্রতীকে, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রফেসর ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন খান হাতপাখা প্রতীকে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এহছানুল হক তাহের হরিণ প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। সংরক্ষিত আসনের ৯টি ওয়ার্ডে ৬২ জন ও ২৭ টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন ১২৭ প্রার্থী।
এবার মোট ভোটার ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ জন ও মহিলা ভোটার হলেন ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন। এবার মোট ভোট কেন্দ্র ১৩৪ টি ও ভোটকক্ষের সংখ্যা ৯২৬টি। এর মধ্যে অস্থায়ী ভোটকক্ষ হলো ৩৪টি। ২০১৩ সালের ১৫ জুন শনিবার সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৩য় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ঐ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৯১ হাজার ৪৬ জন। সে হিসেবে গত নির্বাচনের চেয়ে এবার ৩০ হাজার ৬৪৮ জন ভোটার বেড়েছে।
রিটার্নিং অফিসারের বক্তব্য, সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলীমুজ্জামান বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট গ্রহণের জন্যে ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে নেমেছেন। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যবেক্ষক মাঠে আছেন। সকলের নিকট গ্রহণযোগ্য নির্বাচনই আমাদের লক্ষ্য।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..