সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সংঘবদ্ধ হতে হবে : মমতাজ উদ্দিন আহমেদ

প্রকাশিত: ৮:৪২ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১, ২০১৮

সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় সংঘবদ্ধ হতে হবে : মমতাজ উদ্দিন আহমেদ

ডেস্ক নিউজ :: অধিকার রক্ষা ও নির্যাতন বন্ধে সকল সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে এবং সাংবাদিকদের ঝুকিভাতার বিষয়ে গুরুত্বরোপ করেছেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা ভাগ হয়ে গিয়েছে। আপনারা যে যেমনই মতাদর্শের হোন না কেন, সকলের এক হতে হবে। সাংবাদিকদের আসলে অধিকার রক্ষায় সংঘবদ্ধ হতে হবে।

রাজধানীর পল্টনের তোপখানা রোডে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে শনিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।

মমতাজ উদ্দিন বলেন, প্রতিটি পত্রিকার ‘ইন হাউজ পলিসি’ ঠিক করতে হবে। সকল সাংবাদিকের পত্রিকা অফিসে যোগ দেওয়ার আগে জানতে হবে ওই পত্রিকা অফিসের ‘ইন হাউজ পলিসি’ কি? জানতে হবে পত্রিকা অফিসগুলো সাংবাদিকদের কি কি সুযোগ-সুবিধা দেবে। অথচ পত্রিকাগুলোর মালিকরা ঠিকই শত শত কোটি টাকা দেখিয়ে অনুমোদন নিচ্ছেন। প্রথম আলোর তো ঠিকই ঝুকি ভাতা আছে, পলিসি আছে। প্রতি পত্রিকার মালিকদের সেই পর্যায়ে আনতে হবে। শুধু সরকারকে বললে তো হবে না। সরকার তো ঠিকই আইন করেছে।

তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের অ্যাপয়েনমেন্ট লেটারে লেখা থাকে এক রকম। আর পত্রিকার মালিকরা অনুমোদন নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দেখায় আরেক রকম। এ ব্যাপারে আপনাদের সচেতন হতে হবে। এখানে রাষ্ট্রের কি দোষ?

বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বলেন, সাংবাদিকরা কখনই রাষ্ট্র ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারবেন না। এছাড়া আপনারা কাজ করেন। প্রতিটি পত্রিকা অফিস থেকে আমাদের কাছে সাংবাদিকদের নাম পাঠিয়ে দিন। আপনারা সবাই প্রেস কাউন্সিলের বিধি-বিধান সম্পর্কে জানুন। লিখার আর্ট, নিয়ম-কানুন সম্পর্কে জানতে হবে। শিক্ষিত জাতি পেতে হলে সাংবাদিক ভাইদের শিক্ষিত হতে হবে। বঙ্গবন্ধুর কথা না যেনে তো সাংবাদিক হওয়া যাবে না। পত্রিকায় নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষিত সাংবাদিক খুজুন, যাতে তারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেন।

এ সময় মোবাইল ও ফেসবুক দিয়ে শিক্ষিত জনশক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। শুধু দ্রুত একটু তথ্য পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিচারপতি বলেন, সাংবাদিকদের তালিকার কাজ চলছে। এ কাজে অনেক জটিলতা রয়েছে। ডাটাবেজ করার পর শিঘ্রই তা অনলাইনে দিয়ে দেওয়া হবে। এতে যাদের নাম বাদ যাবে, তারাও আগ্রহী হবেন নিজের নাম অন্তর্ভূক্ত করার জন্য। পত্রিকা প্রতিষ্ঠানগুলো সাংবাদিকদের তালিকা দিক, আমরা তাদের প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করব। সাংবাদিকদের পড়তে হবে, প্রতি মাসে একটি বই হলেও পড়তে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনই চান না, যে কারো উপর কখনো আঘাত লাগুক বলেও মন্তব্য করেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

আয়োজক সংগঠন জার্নালিস্ট অ্যান্ড রাইটার্স সোসাইটির সভাপতি ও দৈনিক রূপবানী পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিক অধিকার রক্ষায় খুবই সচেতন। কিন্তু তারপরও সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। তাই নীতিমালা বাস্তবায়নে আমরা বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে সহায়তা করব, যাতে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়।
প্রবীন সাংবাদিক কামরুদ্দিন হিরা বলেন, যেহেতু আমরা সাংবাদিকরা রাজনৈতিকভাবে কলুষিত, তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া সম্ভব নয়। রাজনীতি সাংবাদিকদের রক্তের মধ্যে ঢুকে গেছে।

সাপ্তাহিক দিগন্ত ধারার নির্বাহী সম্পাদক শাহজাদা শামস ইবনে শফিক বলেন, কোন সাংবাদিক নির্যাতনের শিকার হলে খবর পাওয়ার পর সাথে সাথে যেন অন্য সাংবাদিকদের জানানোর চেষ্টা করা হয়। এতে করে তাৎক্ষনিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হয়। আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে।

‘সাংবাদিক নির্যাতন পরামর্শ, প্রতিকার’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- ফেডারেশন অব বাংলাদেশ জার্নালিস্ট অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ, সাপ্তাহিক অগ্রনী বার্তার সম্পাদক আলী আশরাফ আখন্দ, দৈনিক বিজনেস ফাইলের বিশেষ প্রতিনিধি মো. রুকন উদ্দিন পাঠান প্রমুখ।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..