সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:০৪ অপরাহ্ণ, আগস্ট ২, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়ায় তালা বদ্ধ বাসা থেকে তিনজনের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারনা পরকীয়ার আসক্ত হয়ে ঘাতক হাসান স্ত্রী জনি বেগম (৩০), দুই সন্তান মিম খানম (১৫) ও তাসিন (১৩) কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় দক্ষিণ সুরমায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। ত্রিপল মার্ডারেরস্থল দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়ার ওই এলাকার অনেকের সাথে কথা হয়। বাসার কেয়ারটেকার এরশাদের স্ত্রী বলেন, তাদের পুর্ব পরিচিত গোপালগঞ্জ থেকে আসা হাসান-জনি দম্পতি সিলেট বেড়ানোর কথা বলে তাদের পাশের ফাঁকা কক্ষে কয়েকদিন থেকে অবস্থান করে আসছেন। অতি প্রয়োজন ছাড়া তারা কারো সাথে তেমন কথা বলতো না। ওই কক্ষের পাশের আরেক প্রতিবেশী মিলি বেগম অন্যের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতে সকালে বের হয়ে বিকেলে ফেরেন। তিনি জানান এরশাদের কক্ষে বেড়াতে আসা দম্পতি বা তাদের বাচ্চাদের কোন সময় তাদের কক্ষের বাহিরে দেখা যায়নি। এমনকি তাদের কথাবার্তা পর্যন্ত শোনা যেতনা। সপ্তাহ খানিক থেকে তারা অবস্থান করলেও কখনো তাদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হয়নি। খেলাধুলার জন্য বাচ্চাদের বাহিরে কেউ দেখেনি। উদ্ধার করা মা ও দুই সন্তানের গলিত পঁচা মরদেহের ময়না তদন্ত শেষ হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে নিহত জনি বেগমের ভাই বাদশা মিয়ার নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়। ময়না তদন্তের রিপোর্টে তিনজনকেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে আলামত পাওয়া গেছে। নিহতের ভাই লাশ গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের কমলপুরে নিয়ে যান। সেখানে গত বুধবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন করা হয়। ত্রিপল মার্ডার ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন জনির স্বামী হাসান মুন্সি ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছে। হাসান মুন্সিকে প্রধান আসামী করে সাথে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে রেখে দক্ষিণ সুরমা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ভাই বাদশা মিয়া। কথা হয় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, দক্ষিণ সুরমা থানার এসআই লোকমান হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ময়না তদন্তে তিনজনকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলেই মনে হচ্ছে। নিহতের স্বামী ও সন্তানদের পিতা ঘাতক হাসান মুন্সি পলাতক আছে। তাকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যার মূল রহস্য জানা যাবে। দক্ষিণ সুরমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল ফজল এ প্রতিবেককে বলেন, হাসান নারী সম্পর্কে জড়িয়ে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করে হত্যা কান্ড ঘটাতে পারে বলে ধারনা। ত্রিপল হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামী ধরতে পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত (৩০ জুলাই) সোমবার সকাল ১১টায় দক্ষিণ সুরমার ঝালোপাড়া এলাকার ডি ব্লকের একটি বাসার তালা ভেঙ্গে বাথরুমের ভিতর থেকে পঁচা গলিত তিনটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতরা হচ্ছে- রনি বেগম (৩৫) ও মেয়ে মিম খানম (১৫) ও তাসিন (১৩)। তারা গোপালগঞ্জ জেলার মকসুদপুর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের বাসিন্দা। পাশের বাসার লোকজন তাদের কক্ষের পেছনের জানালা দিয়ে হত্যাকান্ডের বাসার বাথরুমের পাইপ দিয়ে রক্তযুক্ত পানি বের হতে দেখেন। তারা ওই বাসার লোকজনকে অবগত করলে প্রতিবেশী সবাই বিশ্রী দুর্গন্ধ পাওয়ায় এক সময় পুলিশকে জানানো হয়। ওই দিন দুপুর ১টার দিকে পুলিশ গিয়ে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। সে সময় বাসার কেয়ারটেকার ঝালোপাড়ার আলফত আলীর পুত্র এরশাদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়। ৩/৪ দিন আগে হত্যা করে বাথরুমে রেখে টেপের পানি ছেড়ে দারজায় তালা দিয়ে রাখা হয়। এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও এলাকাবাসী।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd