বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে বিভিন্ন স্থানে টাকা ছিনতাইকারী দলের মূলহোতা সাবেক ব্যাংক কর্মচারীকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। সে সিলেট জেলার ওসমানীনগর উপজেলার নাগেরকোনা গ্রামের মৃত নিজাম উদ্দিনের ছেলে মোঃ আলী হোসেন তৌফিক ওরফে লন্ডনী হোসেন (২৮)। দীর্ঘ ৯মাস অভিযানের পর আজ শনিবার দুপুরে ওসমানীনগরে রাখালগঞ্জ বাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ছিনতাইকারীর মূল হোতা বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকের পিয়নের চাকুরীতে ছিল। গত তিন বছর পূর্বে সে চাকুরী ছেড়ে দেয়। ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে সে ছিনতাই করার কাজে জড়িয়ে পড়ে।
আজ শনিবার বেলা ১টায় সংবাদ সম্মেলনে থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম জানান, গত বছর ২৯নভেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের উত্তরা ব্যাংক থেকে ২২লাখ টাকা উত্তোলন করেন উপজেলার বগিরচক গ্রামের লন্ডন প্রবাসী জুলহাস মিয়ার স্ত্রী জেবুন নাহার (৩২)। তিনি টাকা উত্তোলন করে অটোরিকশা (সিএনজি) গাড়িতে টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার বগিরচক নামক স্থান থেকে তাদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। এসময় তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল সেটও লুট করা হয়। তবে পরদিন ছিনতাইয়ের ঘটনায় জেবুন নাহার বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন দেড় লাখ টাকা। মামলা নং-(১৪)। ওই মামলার সুত্র ধরেই ব্যাংকের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ছিনতাইকারীর মূলহোতা হোসেন’কে শনাক্ত করা হয়। গ্রেফতারের পর সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তার পরনে থাকা সার্ট, প্যান্ট ও জুতা উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর পূর্বে সিলেটের করিম উল্লাহ মার্কেটে একজনের কাছ থেকে লুন্টিত একটি মোবাইল সেটও উদ্ধার করা হয়। এর পূর্বে চলতি বছরের ১৫ মে বিশ্বনাথের ডাচ্ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন ছাতক উপজেলার ভাটিপাড়া গ্রামের আবদুল মতিনের পুত্র জামরান আহমদ (৩৭)। তিনি অটোরিকশা (সিএনজি) গাড়িতে বাড়ি ফেরার পথে বিশ্বনাথের নরসিংপুর নামক স্থান থেকে তার টাকা ছিনতাই করা হয়। সেদিনের সিসি ক্যামেরায়ও গ্রেফতারকৃত হোসেনকে দেখা যায়। ওই ৩লাখ টাকা থেকে ছিনতাইকারী মূলহোতা হোসেন ৫হাজার টাকা ভাগ পায়।
ওসি জানান, হোসেন ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দেয়ার পর সে ছিনতাইকারী হয়ে যায়। সে বিভিন্ন ব্যাংকে আবারও চাকুরী করার জন্য ছুটে যায়। মূলত সে চাকুরীর জন্য ব্যাংকে যেতে না। সে ব্যাংকে গিয়ে বসে গ্রাহকদের অনুসরন করে। গ্রাহক ব্যাংক থেকে কে কত টাকা উত্তোলন করছেন। বিষয়টি ব্যাংকের বাহিরে থাকা তার সহযোগিদের বলে দেয়। পরে তারা ছিনতাই করে। এভাবে তারা এলাকায় ছিনতাই করে আসছিল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে এসব তথ্য জানায় বলে ওসি জানান।
থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপি এম বলেন, গ্রেফতারকৃত হোসেন ছিনতাইকারীর মূল হোতা। তার নেতৃত্বে আমাদের এলাকায় দুটি ছিনতাইর ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে জেলার বিভিন্ন থানায় ছিনতাই’র মামলা রয়েছে। এরআগে তাকে কোনো থানা পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। আমরাই তাকে প্রথম গ্রেফতার করি। আগামীকাল (রোববার) তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে। বাকি ছিনতাইকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!