বড়লেখায় বিষধর সাপের কামড়ে শিক্ষিকার মৃত্যু,: তন্ত্র-মন্ত্র পড়ছেন ওঝা

প্রকাশিত: ১০:৩৫ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৮

বড়লেখায় বিষধর সাপের কামড়ে শিক্ষিকার মৃত্যু,: তন্ত্র-মন্ত্র পড়ছেন ওঝা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বিষধর সাপের কামড়ে শিবানী রানী দাস (২৫) নামের এক শিক্ষিকা মারা গেছেন। সোমবার (০৬ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে ওই শিক্ষিকা সিলেট ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

এর আগে রবিবার (০৫ আগস্ট) দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নিজ বাড়িতে সাপের কামড়ে শিবানী রানী দাস আহত হন। ওই রাতেই তাকে সিলেট ওসামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিবানী উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামের মনোরঞ্জন দাসের মেয়ে। তিনি স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকতা করতেন।

এদিকে সোমবার (০৬ আগস্ট) বিকেলের দিকে শিবানীর লাশ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে আনা হয়। এ খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সব জায়গায়। খবর পেয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ওঝারা এসে জড়ো হন ওই বাড়িতে। রাতেই ওঝারা শুরু করে ঝাড়ফুঁক।

এ খবর পেয়ে লোকজন ভীড় করেন ওই বাড়িতে। ভীড় সামলাতে শেষ পর্যন্ত পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ, নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১১টার দিকে ঘরের বাইরে বের হন শিবানী রানী দাস ও তাঁর ছোট বোন। অন্ধাকারে মাঝে হঠাৎ কিছু একটা শিবানীর পায়ে কামড় দেয়। এরপর তাঁর ছোট বোন ঘরে গিয়ে লাইট জ্বালান। তখন একটি সাপ তাদের ঘরে প্রবেশ করতে দেখেন। তাৎক্ষণিক সাপে কামড় দিয়েছে বুঝতে পেরে চিৎকার দেন দুই বোন। তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে প্রথমে শিবানী রানী দাসকে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সেখান থেকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সোমবার (০৬ আগস্ট) সকাল ৮টার দিকে শিবানী মারা যান।

সরেজমিনে মঙ্গলবার (০৭ আগস্ট) ওই বাড়িতে গেলে দেখা যায়, মৃত শিবানীকে সুস্থ করার আশ্বাসে সোফায় বসিয়ে তন্ত্র-মন্ত্র পড়ছেন ওঝা। আর দুর-দুরান্ত থেকে এ দৃশ্য দেখার জন্য গাড়ি কর লোকজন আসছেন শিবনীদের বাড়িতে। লোকজনের ভীড় সামাল দিতে সেখানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন ও ইউপি সদস্য এবং গ্রাম পুলিশ নিয়ে লোকজনকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। কিন্তু কোনোভাবেই লোকজনের ভীড় নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

নিহত শিবানীর দাদা প্রনথ চন্দ্র দাস বলেন, ‘ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেছে। কিন্তু স্বজনদের মন। ঝাড়ফুঁকেও যদি মেয়েটা আবার দেহে প্রাণ ফিরে পায়। লোকজন বলতেছে ওঝা ঝাড়ফুঁক দিলে নাকি সুস্থ্য হতে পারে। বালাগঞ্জ ও বিশ্বম্ভবরপুর থেকে ওঝারা এসেছেন। তাই চেষ্টা করা হচ্ছে।

স্থানীয় দাসেরবাজার ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন মঙ্গলবার (০৭ আগস্ট) বিকেলে বলেন, ‘সোমবার রাতেই খবর পেয়ে ওই বাড়িতে যাই। হাজার হাজার লোকজন আসতেছে। আমি রাতে পুলিশকে জানাই। পুলিশও আসে। আমি মঙ্গলবার (০৭ আগস্ট) নিজে গ্রাম পুলিশ নিয়ে ওই বাড়িতে আছি। যাতে লোকজনের ভীড়ে কোন ঝামেলা না ঘটে।

Sharing is caring!

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

সর্বশেষ খবর

………………………..