সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:২০ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৭, ২০১৮
নিজস্ব প্রতিবেদক :: দিনের শান্ত পরিবেশ পাল্টে যায় রাতে। পাথররাজ্যখ্যাত সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ। খনিজ সম্পদ পাথরের অবাদ ভান্ডার এ উপজেলায় দীর্ঘদিন থেকে চলছে ধ্বংসলীলা। চারদিকে তাকালে শুধু চোখে পড়ে পরিবেশ বিনষ্টের মহড়া। কোয়ারী এলাকায় পাথরের মজুত কমে যাওয়ায় এখন চলছে নদীর তীরবর্তী এলাকায় মানবসৃষ্ট ধ্বংসের মহোৎসব। কিন্তু এই মহোৎসবটি আগে চলত দিনে এখন কৌশল পাল্টিয়ে শুরু হয়েছে রাতে। সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযানে তারা এখন বেচে নিয়েছে অবৈধ পাথর খোকো চক্র নতুন কলাকৌশল রাতেপরিবেশ বিনষ্টের মহড়া। তাইতো বলা যায় দিনের শান্ত পরিবেশ পাল্টে যায় রাতে। আর এসব পরিবেশ বিনষ্টের সঙ্গে জড়িত রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠনের সদস্য এবং প্রভাবশালী পরিবারের মদতপুষ্ট। এ যেনো গ্রিক পুরাণের ফিনিক্স পাখি।
সরজমিনে পরিদর্শনকালে এলাকার ক্ষতিগ্রস্থ ভুক্তভোগীরা জানান, প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগপত্র ও স্বারকলিপি দিয়েছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছেনা। প্রশাসন তরফ থেকে মাঝে মাঝে চলে লোক দেখানো অভিযান। অভিযান শেষ হয়ে গেলে আবারও সেই আগের অবস্থা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ভোলাগঞ্জের গুচ্ছগ্রাম, আদর্শগ্রাম, দয়ারবাজার, নতুনবাজার ও কালাইরাগসহ পাথর লুটেরার চক্রের তান্ডবলীলা। পাথর খেকো চক্রের পাথর উত্তোলনের অবাদ মহোৎসব থেকে সেখানে রেহ্ইা পাচ্ছেনা অসহায় খেটে খাওয়া মানুষের ঘরবাড়ি, মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি, কলোনি, মসজিদ, ফসলি জমি, বিদ্যুতের খুঁটি, সরকারী রাস্তাঘাট ও স্থাপনাসহ আসপাশের সব ধরনের স্থাপনা। দেখা যায়, ভোলাগঞ্জ রোপওয়ের পাশে বোমা মেশিন (পাথর উত্তোলনের যন্ত্র) বসিয়ে ধলাই নদীর তীর বিনষ্ট করে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। ধ্বংস হতে চলেছে ভোলাগঞ্জ রোপওয়ে। এসব বোমা মেশিন থেকে পুলিশের নামে বখরা উঠানো হচ্ছে। এসব টাকা পুলিশসহ বিভিন্ন দপ্তরে বন্টন করা হয় বলে জানান এলাকাবাসী। এলাকার ভুক্তভোগীরা জানান, স্থানীয় একাধিক রাজনৈতিক প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য ও তাদের নিযুক্ত সোর্সরা আমাদের ভোগদখলীয় ভূমি জোর পূর্বক দখল করে দিনে রাতে সমানতালে পাথর উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে। তারা জানান, সম্প্রতি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অভিযানের পর থেকে তারা দিনের বেলায় পাথর উত্তোলন কিছু কমিয়েছে। তবে রাতে আমাদের ঘুম হারাম করে এখানে চলে তাদের তান্ডবলীলা। দিনের শান্তভাব পাল্টে যায় রাতে। অপরাধ, হিস্্রতাও চলে পাশাপাশি। আদর্শগ্রাম নতুনবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সভাপতি নুর উদ্দিন তিনি জানান, প্রশাসনে আমরা ক্ষতিগ্রস্থরা এ পর্যন্ত কতবার অভিযোগ ও স্বারকলিপি দিয়েছি তার হিসাব নেই। তবুও পাথর খেকো চক্রের তান্ডবলীলা ও পাথর লুট কোনক্রমেই বন্ধ করা যাচ্ছেনা, বরং কৌশল পাল্টে কয়েকগুন বেড়েছে তাদের এই ধ্বংসলীলা। সরজমিন পরিদর্শনকালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যাক্তি জানান, স্থানীয় বিল্লাল, তাজুল মোল্লা ওরফে পরিবেশ মোল্লা, ইমাম উদ্দিন এবং স্থানীয় কিছু ভূমি মালিক এ সিন্ডিকেটের মূল হোতা। তারা জানান, এই চক্রটি প্রতিদিনই পুলিশের নামে লক্ষাধিক টাকারও বেশি চাঁদা ওঠায়। আর একারনে থানা পুলিশও রয়েছে নীরব।
এব্যাপারে কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্য মো. আব্দুল হাই বলেন, আমাদের অভিযান চলছে। আমরা সবসময়ই বোমামেশিনের বিরুদ্ধে তৎপর রয়েছি। যেখানে বোমামেশিন বসবে সেখানেই আমেিদর অভিযান চলবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আবুল লাইছ জানান, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারীতে চলা অবৈধ বোমা মেশিন বন্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd