সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৪:৩৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ১১, ২০১৮
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় দুই পল্লী চিকিৎসকের অপচিকিৎসায় এক গর্ভবতীকে ব্লেড দিয়ে সিজার করতে গিয়ে এক নবজাতক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আর জীবন মৃত্যুর সন্ধীক্ষনে রয়েছে গর্ভবতী সেই মা। এই ঘটনা প্রকাশের পর এলাকায় ব্যাপক তুলপার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই ঘা ডাকা দিয়েছে ঐ দুই পল্লী চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে গত বুধবার রাতে উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বড়খলা গ্রামে সুজিত বর্ষনের বাড়িতে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়,উপজেলার বালিজুরী ইউনিয়নের বুধবার (৮জুলাই) রাতে বড়খলা গ্রামের সুজিত বর্মনের স্ত্রী শৌমরী বর্মনের প্রচন্ড প্রসব ব্যাথা উঠে। এই সময় সুজিতের পরিবারের লোকজন গ্রামের পল্লী চিকিৎসক লাল মোহন বর্মন ও নরুল আমিন নামের দু জনকে বিষয়টি অবগত করে। তারা ঘটনা শুনে পরেই দুইজন মিলেই সুজিতের বাড়িতে যায়। ঐ দুই ডাক্তার ঐ গভবর্তীর শরীরিক অবস্থা দেখে পরিবারের লোকজনকে জানায় পেটের বাচ্চা মারা গেছে আর মায়ের অবস্থা বেশী ভাল না। এই অবস্থায় সুজিতের পরিবারের লোকজকে দুই ডাক্তার আরো জানায়,দ্রæত সিজার করাতে হবে। আর তারা নিজেরাই সিজার করতে পারবে বলে জানায়। পেটের বাচ্চা মারা গেছে শুনে সুজিতের পরিবারের লোকজন কি করবে দিশেহারা হয়ে পরে। কোন পথ না বুজেই ঐ দুই ডাক্তারের কথায় রাজি হয়ে যায়। এই দুই ডাক্তার এর পরেই সুজিতের বসত-বাড়িতেই সিজার করতে গিয়ে অনবিজ্ঞ থাকায় গর্ভবতীর যোনী পথ ব্রেড দিয়ে অতিরিক্ত কেটে বাচ্চা বের করে আনতে গিয়ে নবজাতক শিশুর মাথাসহ শরীলের বিভিন্ন অংশ কেটে ফেলে। এতে বাচ্চাটি মারাতœক ভাবে আহত হয়। কিন্তু বাচ্চা মরা যায় নি। কেটে যাওয়া অংশে কয়েকটি সেলাই ও করে তারা। এই অবস্থায় বাচ্চাটিকে বাচাঁতে দ্রæত পাশ্বভর্তি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরনে গুরুত্বর আহত অবস্থায় শৌমলী বর্মন (বাচ্চার মা) কে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর দিন বিকালে এই ঘটনা শুনে ঘটনা স্থল বড়খলা গ্রামে যান তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব ও তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মকর্তা ডাঃ ইকবাল হোসেন। স্থানীয় এলাকাবাসীর ক্ষোবের সাথে জানান,এই আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় এই রখর ঘটনা খুবেই দুঃখজনক। অনবিজ্ঞ পল্লী চিকিৎসক সিজার করতে ব্রেড ব্যবহার করা কোন আইনে আছে ? আর ঐ দুই ডাক্তার কেমন ডাক্তার যে এই ভাবে সিজার করতে গেল। এখন বাচ্চাটা মরল আর মার জীবন মরন সন্ধীক্ষনে অবস্থান করছে। এই দুই হাতুরে ডাক্তারের কঠিন শাস্থির দাবী করছি। তারা আরো বলেন,সবাইকে সচেতেন হতে হবে। এই আধুনিক সমাজ ব্যবস্থায় প্রতিটি ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীগন রয়েছে। এছাড়াও এলাকায় অভিজ্ঞ ধার্ত্রী রয়েছে তাদের পরামর্শ ও সহযোগীতা নিয়ে এমনটা হত না। ঐ ডাক্তারগন বাচ্চা মৃত বলে দাবী করেছিল। তারা বাচ্চা বের করতে গিয়ে বাচ্চাটির মাথা কেটে ফেলায় মাথায় সেলাই করে। পরে মারা যায়।
এ বিষয়ে ঐ মৃত নবজাতক ও আহত গর্ভবর্তীর স্বামী সুজিত বর্মন জানান,আমার সুস্থ বাচ্চাটিকে মেরে ফেলল আর আমার স্ত্রী এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। কি করব ভেবে পাচ্ছি না। তারা পারবে না বললেই ত পারত। কেন এমন করল। আমি এর বিচার চাই।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূনেন্দ্র দেব জানান,শুনেছি প্রসবের পর বাচ্চাটি নড়াচড়া করেছে। বাচ্চার মাথা কেটে যাওয়ায় মাথার সেলাই দিয়েছে ঐ ডাক্তাররা। পরে বাচ্চা মারা গেছে। তাহিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নন্দন কান্তি ধর জানান,ঘটনা শুনেছি খুবেই দুঃখজনক। এখনও কেউ কোন অভিযোগ নিয়ে আসে নি। থানা থেকে একজন এসআই পাঠিয়েছি। কোন খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd