ক্রাইম প্রতিবেদক : জকিগঞ্জ সোনার বাংলা বহুমুখী সমবায় সমিতির লিমিটেডের সভাপতি দুর্নীতিবাজ মোঃ জাফরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোটি কোটির সম্পত্তি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে গত ২১ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন এর চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ’র বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. আব্দুশ শহিদ। অভিযোগের অনুলিপি সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলেও প্রেরণ করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জকিগঞ্জ সোনার বাংলা বহুমুখী সমবায় সমিতির লিমিটেড এর সেক্রেটারি জকিগঞ্জের কেছরী আলমনগর গ্রামের এবাদুল হকের পুত্র মো. জাফরুল ইসলাম সমিতির স্বঘোষিত সভাপতি হয়ে নিজের ইচ্ছায় সমিতির অনুমোদন ও কমিটির রেজুলেশন ছাড়া অর্ধকোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন। তিনি নিজেকে সভাপতি ও তার ভাইকে সেক্রেটারি নিয়োগ দিয়ে অবৈধ কাজকে বৈধ করার কাজে দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।
সমবায় সমিতির ঋণের ১নং হতে ৫নং ক্রমিকে বর্ণিত প্রায় ১ কোটি টাকা জাফরুল ইসলামের পিতা এবং আত্মীয়-স্বজনের নামে বরাদ্দ দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন দাগে ১৫ কোটি টাকার জায়গা-জমি তার নামে ক্রয় করেছেন। যা সমিতির সংবিধান বর্হিভূত। সে সমিতির সদস্যদের শেয়ার বিক্রি করেছে কিন্তু এর কোনো সার্টিফিকেট কাউকে দেন নি।
নির্বাহী কমিটির রেজুলেশন ছাড়া সেক্রেটারি জাফরুল সমিতির ক্যাশ থেকে টাকা নিয়ে ভোগ-বিলাস করেছেন। এছাড়াও বন্যার সময় ত্রাণ বিতরণ, শীতবস্ত্র, রমজানে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ নির্বাহী কমিটির মিটিং না করে সে ইচ্ছামত বিতরণ করে এবং অতিরিক্ত খরচ দেখান। কার্যকরী কমিটির মিটিং ছাড়া প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা অফিসের ব্যয় খরচ ধরেছেন। সমিতির অফিসের ক্যাশে যত টাকা আছে লেজার খাতার সাথে তার কোনো মিল নেই। সে সমিতির একাউন্টে টাকা না রেখে ব্যক্তিগত একাউন্টে টাকা লেনদেন করে যাচ্ছেন। তার দুর্নীতির সহযোগী হিসেবে মাহতাব আহমদকে ক্যাশিয়ার এবং এখলাছুর রহমান খানকে প্রধান নির্বাহী নিয়োগ করে টাকার উৎসবে মেতে উঠেছে। এখলাছুর রহমান কৃষি ব্যাংকের ক্যাশিয়ার ছিলেন, দুর্নীতির দায়ে তাকে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চাকুরি থেকে বরখাস্ত করেছে। সেক্রেটারি সমিতির টাকা দিয়ে জায়গা জমির ব্যবসা করেছেন তা সমিতির সংবিধান লঙ্ঘন। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়,জাফরুল ইসলাম জকিগঞ্জ বাজারে তার নিজস্ব জায়গায় গত ১ জানুয়ারী ২০১৮ সোনার বাংলা বহুমুখী সমবায় সমিতির লিমিটেডের ভবন নির্মাণ করতে চাইলে সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোঃ আব্দুশ শহিদ বিষয়টি আইনীভাবে সঠিক হবে না বলে বাধা প্রদান করেন। এ নিয়ে সভাপতি ও সেক্রেটারির মধ্যে বাক-বিতন্ডা হলে এক পর্যয়ে তাদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। দূরত্বের সৃষ্টির সুবাদে জাফরুল ইসলাম দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সমিতির সভাপতি মোঃ আব্দুশ শহিদ কমান্ড্যান্ট, ডিডিএফআই, সিলেট,পুলিশ বিশেষ বিভাগ, সিলেট, এনএসআই, সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেট পুলিশ সুপার, সিলেট নিবন্ধন সমবায় অধিদপ্তর সহ সরকার ও প্রশাসনের উর্ধ্বতন মহলে লিখিত অভিযোগ দয়ের করেছেন।