সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার নিজনগর গ্রাম থেকে জবাই করা দুই শিশুসহ মায়ের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। তিনজনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে নাকি মা-ই দুই সন্তানকে নিজ হাতে জবাই করে নিজে রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (৩১ আগস্ট) উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের নিজনগর গ্রাম থেকে গভীর রাতে পুলিশ ওই গ্রামের ব্যবসায়ী মুজিবুর রহমান মজিদের স্ত্রী হাদিছা বেগম (২৫), তার শিশু কন্যা মিম (৩) এবং ৭ মাসের শিশু পুত্র মোজাহিদের লাশ উদ্ধার করে।
শনিবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশগুলো হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। নিজনগর গ্রামের একই ঘর থেকে মা, ছেলে ও মেয়ের লাশ উদ্ধারের পর পরিবারের অন্য সদস্যরা গা ঢাকা দিয়েছেন। পাড়া-প্রতিবেশী পুরুষরাও ভয়ে এলাকা ছেড়ে দিয়েছেন।
শনিবার দুপুরে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার বিধান কুমার ত্রিপুরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। সরেজমিনে শনিবার সকালে নিজনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের ছেলে মুজিবুর রহমান মজিদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় কোন লোকজন নেই।
প্রতিবেশী খোর্শেদা বেগম জানান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ তার স্ত্রী রাজিয়া ও ছোট মেয়ে কলেজছাত্রী মিতুকে নিয়ে আলাদা একটি মাটির ঘরে বসবাস করেন। শুক্রবার রাত ৯টায় নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত নাতনি মিমের ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে কিনা জানতে চেয়ে মিমের মা হাদিছাকে নাম ধরে ডাকতে শুরু করেন রাজিয়া। কিন্তু ঘর থেকে কোন সাড়াশব্দ পাননি। এ সময় ঘরের ভিতর দিয়ে কলাপসিবল গেইট তালবদ্ধ দেখতে পাওয়া যায়। পরে পিছনের দরজা দিয়ে ঘরে গিয়ে দেখা যায় মিমের গলা বিচ্ছিন্ন হয়ে মরদেহ খাটের উপর এবং হাদিছার মরদেহ মেঝেতে পরে রয়েছে। নাতনি ও পুত্রবধূর এ দৃশ্য দেখে রাজিয়া বেগম চিৎকার দিয়ে উঠেন। তার চিৎকার শুনে পাড়া-প্রতিবেশীরা গিয়ে দেখতে পান মিমের জবাই করা রক্তাক্ত দেহ এবং পুত্রবধূর মরদেহ পরে রয়েছে। অপর একটি কক্ষে তাদের ৭ মাসের শিশু পুত্র মোজাহিদের লাশ ছিল।
এ ঘটনাটি মিমের বাবা মুজিবুর রহমান মজিদকে জানালে তিনি ধর্মঘর বাজার থেকে দ্রুত বাড়িতে এসে এ দৃশ্য দেখতে পান।
প্রায় ৪ বছর পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের কেনা পূর্ব পাড়ার শামিম মিয়ার মেয়ে হাদিছা আক্তারের সঙ্গে মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের নিজনগর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদের ছেলে মজিবুর রহমান মজিদের বিয়ে হয়।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, শিশু দুটির মৃত্যু নিঃসন্দেহে হত্যাকাণ্ড। হাদিছার মৃত্যুটি হত্যা না আত্মহত্যা এটি এখনো স্পষ্ট নয়। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ঘটনায় শনিবার বিকেলে পর্যন্ত মামলা হয়নি। তবে পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা গভীরভাবে তদন্ত করছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd