সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৩১ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৫, ২০১৮
জকিগঞ্জ প্রতিনিধি :: সিলেটের জকিগঞ্জে সুলতানপুর ইউনিয়নের বাদেজমা গ্রাম থেকে স্থানীয়রা এক ভয়ংকর নারী প্রতারককে আটক করে মঙ্গলবার পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। নিজেকে এনজিওকর্মী পরিচয় দিয়ে টিউবওয়েল, শিশু খাদ্য ও শিশু ভাতা দেয়ার জন্য নামতালিকাভুক্ত করতে টাকা আদায়সহ নানাভাবে সে প্রতারণা করে আসছিল। সে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নিজ বাউরবাগ গ্রামের মৃত শামসুদ্দিন উরফে সালামের মেয়ে জাহেদা আক্তার পপি(২৪)।
জকিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানান, সুলতানপুর ইউনিয়নের বাবুরবাজার থেকে রিক্সার যাত্রী হিসেবে ঐ নারী বাদেজমা গ্রামের রিক্সাচালক ফয়সল আহমদের নাম ঠিকানা জানতে চায়। রিক্সচালককে জানায় সে একটি এনজিওর কর্মকর্তা। এলাকায় ২০০ টিউবওয়েল এবং স্কুলগ্রামী শিশুদের ১৪০০টাকা মাসিক শিশু ভাতা দেয়া হবে। নামতালিকাভ’ক্তির জন্য প্রত্যেককে ৫শ করে টাকা দিতে হবে। ঐ নারীর কথায় বিশ্বাস করে রিক্সাচালক ফয়সল তাকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়।
সেখানে কৌশলে দুইদিন অবস্থান করে বাদেজমা গ্রামের দুলাল আহমদ, রিয়াদ আহমদ, বকুল মিয়া, আক্রাম আলীসহ অনেকের নিকট থেকে টিউবওয়েল ও খাদ্য সামগ্রী দিবার কথা বলে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি,সাদা কাগজে স্বাক্ষর ও ৫শ টাকা করে আদায় করে। বিশ্বস্থতা আর্জনের জন্য সে শিশুদের মাঝে কিছু চকলেট ও বিস্কুট বিতরণ করে। সংস্থার উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে টিউবওয়েল ও শিশু ভাতা বিতরণ করা হবে বলে জানায় সে। তার বাবা লন্ডন এবং স্বামী ফ্রান্স প্রবাসী জানিয়ে পপি মাসিক প্রায় ৭০ হাজার টাকা বেতন পায় বলে স্থানীয়দের জানায়।
কথাবার্তার অসংলগ্নতার এক পর্যায়ে সন্দেহ হলে সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও পুলিশকে খবর দেন এলাকাবাসী। ওসির নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঐ নারীকে দেখে অবাক হয়। ঐ নারী সপ্তাহখানেক আগে জকিগঞ্জের আটগ্রাম এলাকায় গণধর্ষণের শিকার হয়ে থানায় এসেছিল অভিযোগ দিতে।
পুলিশ তাকে সিলেট এমএজি ওসামানী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করেছিল। ওসিসি থেকে পপি পালিয়ে গেলে পুলিশ বিপাকে পড়েছিল।
জকিগঞ্জ থানার এসআই সৈয়দ ইমরোজ তারেক জানান, পপি নিজেকে বাংলাদেশ রুরাল কমিউনিটি হেল্থ কমপ্লেক্সের একজন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সিলেটের বিভিন্ন এলাকায় প্রতারণা করে আসছিল। ফাতেমা জান্নাত জুলি, সুমি, রুমি, পপি নানা নামে এবং তার বাড়ি সিলেটের বাগবাড়ী, ঢাকা, গাজীপুর বলে নিজের পরিচয় দিচ্ছিল।
ইতিপূর্বে সে সিলেটের কোতওয়ালী, শাহপরান ও গোলাপগঞ্জ থানায় প্রতারণার দায়ে আটক হয়েছিল। পপি এসএসসি পাশ করেই প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ে। জকিগঞ্জের খাসিরচকে তার স্বামীর বাড়ি বলে সে পুলিশকে জানিয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে পপির সাথে একটি প্রতারকচক্র রয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছিল।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd