সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:২৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৮
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে জমির ভূঁয়া মালিক সাজিয়ে জাল দলিল সৃষ্টি করে ২৪ শতাংশ জমি রেজেস্টারী করার অভিযোগে আদালতে নালিশা অভিযোগের প্রেক্ষিতে কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনায় জাল দলিল জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের পরানধর গ্রামে।
মৌলভীবাজারের সিনিয়র বিচারিক হাকিম আদালতে করা জমির প্রকৃত মালিক বিভাস রঞ্জন দাসের নালিশা অভিযোগ ও পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনায় কমলগঞ্জ থানায় করা মামলা সূত্রে জানা যায়, জেল নং ২৯, মৌজা পরানধর-এর এস,এ ১৬ নং ১৭৬ দাগের খতিয়ানের ১১ শতাংশ, একই জে,এল ও মৌজার দাগ নং ১২৫ এর ২ শতাংশ ভূমি এবং একই জেল, মৌজার, দাগের ও ১৩ সং খতিয়ানের আরও ১১ শতাংশ ভূমির মালিক তিনি (বিভাস রঞ্জন দাস)। তবে একই গ্রামের সোহেল রানা ওরপে সুমন (২৭), ও তার বাবা জালাল মিয়া (৫০) প্রতারনা করে এ ২৪ শতাংশ ভূমির ভূঁয়া মালিক ও ভায়া সাজিয়ে গত বছর ১৩ এপ্রিল একটি জাল দলিল সৃষ্টি করেন। এমনকি মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের জাল সনদ, জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরী করা হয়। পরবর্তীতে জালিয়াতির মাধ্যমে জমি রেজেস্টারী করে নিলে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে অভিযুক্ত সোহেল রানা ও তার বাবা জালাল মিয়া নিজের নামে সমূহ ভূমি নামজারি করতে আবেদন করেন। নামজারির আবেদন করলে উপজেলা ভূমি অফিস থেকে প্রকৃত ভূমির মালিক হিসাবে বিভাস রঞ্জন দাস এর নামে শুনানির নোটিশ আসে তখন তিনি জানতে পারেন জালিয়াতির কথা। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
জালিয়াতি করে ২৪ শতাংশ ভূমি রেজেষ্টারী করার বিষয়টি টের পেয়ে বিভাস রঞ্জন দাস গত ১৪ আগস্ট কমলগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। একই সাথে তিনি ১৯ আগস্ট মৌলভীবাজারের ৩নং আমল গ্রহনকারী আদালতে একটি নালিশা আবদেন করেন। এ আবেদনের শুনানি শেষে বিজ্ঞ হাকিম নির্জন কুমার মিত্র সমূহ জাল দলিল জব্দ করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য কমলগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন। কমলগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মোকতাদির হোসেন পিপিএম আদালতের নির্দেশনা পেয়ে ২৪ আগস্ট ধারা ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৩৪ দন্ডবিধিতে অভিযুক্ত সোহেল রানা ও তার বাবা জালাল মিয়াসহ ৫জনকে আসামী করে একটি মামলা রজু করেন। সাথে সাথে সৃজনকৃত জাল দলিলও জব্দ করেন।
মুন্সীবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মোতালিব তরফদার অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযুক্তরা তার ইউনিয়ন পরিষদের নামে ও স্বাক্ষরিত সনদ ব্যবহার করেছে তার সবই জাল ছিল। তাই তিনি ১৪ আগস্ট কমলগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
কমলগঞ্জ থানা থেকে সদ্য বদলী হওয়া ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোক্তাদির হোসেন পিপিএম শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আদালতের নির্দেশনায় জাল দলিল জব্দ করে কমলগঞ্জ সাব রেজেস্টারী অফিসের জিম্মায় রাখার ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা রজু করার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এ মামলার আসামী দলিল লিখক আব্দুস সালাম বলেন, সোহেল রানা ও তার বাবা জালাল মিয়া ভূমির মালিক ও ভায়া উপস্থিত করেছেন। এখানে তিনি সঠিকভাবে তাদের চেনার কথা নয়। তিনি আরও বলেন, ভূমির ক্রেতারা প্রতারনা করতে পারেন।
তবে এ জালিয়াতি মামলার ১নং অভিযুক্ত সোহেল রানা নিজেকে সঠিক দাবী করে বলেন, ভূমির প্রকৃত মালিক বিভাস রঞ্জন দাসের কাছ থেকেই তিনি ভূমি কিনেছেন। তিনি বা তার বাবা কোন জালিয়াতি করেননি। স্থানীয় একটি চক্র তাদেরকে হেয় করতেই এই অভিযোগ দাড় করিয়েছেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd