সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৭:৫৩ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
ক্রাইম প্রতিবেদক :: সিলেট বিভাগের ১ কোটি মানুষের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। প্রতিদিন এই হাসপাতালে বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন হাজার হাজার মানুষ।
রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, এ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসার পর প্রথম যে ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় তা হল ট্রলি। রোগী বহনের এই ট্রলি থাকে হাসপাতালের এক শ্রেণীর ট্রলিম্যান বা দালালের দখলে। টাকা না দিলে এরা ট্রলি ছাড়ে না। বাধ্য হয়ে কেউ টাকা দেয়, আবার কোনো স্বজন তার রোগীকে কোলে তুলেই ভেতরে নিয়ে যান।
মেডিকেল সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ‘যমুনা স্টার সেভ গার্ড’ নামের এক কোম্পানীকে এক বৎসর মেয়াদে কজের দায়িত্ব পায়। কোম্পানীর মালিক ও পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম কুমিল্লার এক ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে সিকিউরিটি গার্ড পরিচ্ছন্নকর্মী সহ বিভিন্ন কাজে প্রায় ১৮০জন পুরুষ ও মহিলা নিয়োগ দেন। কিন্তু চাকরিতে যোগদানের পর থেকে গত ১১ মাস যাবত কোন কর্মচারীকে বেতন-ভাতা প্রদান করেন নি কোম্পানীর পরিচারক জাহাঙ্গীর। সামান্য ভুল-ত্রুটি হলেই কর্তব্যে অবহেলার অজুহাত দেখিয়ে বেতন-ভাতা না দিয়েই কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করে দেয়া হয়ে থাকে। অভিযোগে প্রকাশ, ‘যমুনা স্টার সেভগার্ড’-এর পরিচালক জাহাঙ্গীর বেতন-ভাতা না দিয়েই হাসপাতালে নিয়োগকৃত তার কর্মচারীদের কাছ থেকে উল্টো সাপ্তাহিক, মাসিক ও বার্ষিক বখরা আদায় করে থাকেন। আর কর্মচারীরা ওই টাকা হাসপাতালের রোগী, এটেন্ডেন্ট ও দর্শনার্থীদের কাছ থেকে চাঁদা ও বখশিশ হিসেবে আদায় করে থাকেন। অন্যদিকে কর্মচারী যুবতী নারীদের ভোগ করতেন তিনি। কোন নারী তার প্রস্তাবে রাজি না হলে কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করে দিতেন।
বর্তমানে সানমুন কোম্পানী ওই সেব গার্ড এর টেন্ডার পায়। জাহাঙ্গীর আলম টেন্ডার না পেয়ে এখন মেডিকেলের শুনাম নষ্ট করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলে অভিযোগ প্রকাশ। সূত্রে জানা যায়, যমুনা স্টার সেভগার্ড এর কয়েকজন লোককে সানমুন কোম্পাানী থেকে বহিস্কার করা হয়। তারা এখন জাহাঙ্গীরের ছত্রছায়ায় রয়েছে। তারা হলেন মানিক, কালাম, জাকির , দিপু, ফয়ছল, জুয়েল, জামাল, সামসুল এরা মানিকের পরিচালনায় মেডিকেলের দেওয়াল ঘোষে বসে থাকে রোগী অপেক্ষায়। রোগী ভর্তি থেকে শুরু করে ওষুধ ক্রয়, রোগীর পরীক্ষাদি, গাড়ি ভাড়াসহ প্রত্যেকটি পদে পদে পড়তে হয় তাদের খপ্পরে। জাহাঙ্গীরের ছত্রছায়ায় থাকা এসব দালালের দৌরাতœ ওসমানী হাসপাতালে সেবার মান প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। দালালদের হাতে প্রতারিত হচ্ছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। ফার্মেসি, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাডব্যাংকের দালালরা প্রতিনিয়তই ভিড় করে থাকেন হাসপাতালে। তারা রোগীদের প্ররোচিত ও হাসপাতালের মান নষ্ট করতে বাইরে নিয়ে যান বাণ্যিজিক ক্লিনিকে। হাসপাতালে ওষুধ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব সুবিধা থাকা সত্ত্বেও এসব দালাল রোগীদের ভুল বুঝিয়ে বাইরের জাহাঙ্গীরের মালিকানাধীন আল-মদিনা ফার্মেসি থেকে ওষুধ কিনতে বাধ্য করে। আর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য নিয়ে যান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। বর্তমানে জাহাঙ্গীর এসব দালাল চক্র নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। এরা হাসপাতালের বারান্দায় ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে বেড়ায়।
সানমুন কোম্পাানীর সিকিউরিটি জানান, তাদের কাছে অসহায় কারণ এদের বিরুদ্ধে সানমুন কোম্পাানীর কোন লোক প্রতিবাদ করলে মেডিকেলের বাহিরে বের হলে ওই দাললরা মারধর করে। অন্যদিকে এদের নেতৃত্ব দাতা জাহাঙ্গীর সানমুন কোম্পানীর লোকদের বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখিয়ে থাকে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
এ ব্যাপারে সানমুন কোম্পাানীর পরিচালক ইউনুছ আলী বলেন, আমাদের লোকের সাথে তাল মিলিয়ে তারা চলাফেরা করে। অনেক দালালের কাছে আমাদের কোম্পানীর পরিচয় পত্র পাওয়া গেছে আমরা তাদের পুলিশে দিয়েছি। তাছাড়া আর কোন কিছু জানা নেই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd