বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : পল্লী বিদ্যুতের ‘ভূতুড়ে বিলে’ বিশ্বনাথে ফুঁসছে গ্রাহক সিলেটে পল্লী বিদ্যুতের বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের বিল নৈরাজ্য’র চরম রূপ নিয়েছে। গ্রাহকদের কাছে রীতিমতো আতংকের কারণ হয়ে দাড়িয়েছে ‘ভূতুড়ে বিল’।
প্রতি মাসেই উপজেলার গ্রাহকদের গুণতে হচ্ছে স্বাভাবিক বিলের দুই-দিন গুণ। দীর্ঘদিন ধরে এর কোন সুরাহা না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছেন এ উপজেলার ৪০ হাজার গ্রাহক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র বইছে সমালোচনার ঝড়। সম্প্রতি উপজেলা আইন-শৃংখলা কমিটির সভায় এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সকলেই। এসময় উপস্থিত ছিলেন পল্লী বিদ্যুৎ বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের এজিএম নাজমুল হাসান নির্বাক।
জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে বিশ্বনাথ উপজেলার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকেরা অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিলের অভিযোগ করে আসছেন। জানিয়ে আসছেন তাদের ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতিগ্রস্থতার দিকটাও। গত ১৩ আগস্ট উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায়ও এমন অভিযোগ করেন গ্রাহকেরা। এর প্রেক্ষিতে সভায় বিদ্যুৎ বিল তৈরিতে সতর্কতা অবলম্বনসহ জনসাধারণ যাতে ভোগান্তির শিকার না হন এবং বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের বিষয়ে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে সভায় এমন সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
অনেকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেখা যায়, রামপাশা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের আব্দুর রহিমের ৪৩১০৪৭ নং মিটারে জুন মাসে বিল আসে ১২০০ টাকা, জুলাই মাসে আসে ২৮০০ টাকা এবং আগষ্ট মাসে বিল আসে ৩৫৬৫টাকা।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবুল কালাম মোহাম্মদ মনোওর আলী বলেন, আমি নিজেই ভূতুড়ে বিলে ভুক্তভোগী। গত জুলাই মাসে আমার নামের মিটারে ব্যবহৃত ৪৫০ ইউনিটে বিল আসে ২৮৬৪টাকা। আমার ছেলে দিলোয়ার হোসেনের নামে মিটারে ব্যবহৃত ২৬০ ইউনিটে বিল আসে ১৪২৬টাকা। কিন্তু আশ্চর্য্যজনকভাবে, আগস্ট মাসে আমার নামের মিটারে ব্যবহৃত ৭৭৫ ইউনিটে বিল এসেছে ৬২৯৬ টাকা এবং আমার ছেলের নামের মিটারে ব্যবহৃত ৪৩৫ ইউনিটে বিল এসেছে ২৬৪০টাকা। যা জুলাই মাসের বিলের দ্বিগুণেরও বেশি।
এ বিষয়ে কথা হলে পল্লী বিদ্যুৎ বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের এজিএম নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, যে সকল গ্রাহক অভিযোগ করেছেন, আমরা তাদের বিষয়টি সমাধান করে দিচ্ছি।
এদিকে, গতমাসের আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় লোডশেডিং ও ভূতুড়ে বিলের সমস্যা সমাধানের জন্যে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত না হওয়ায় গত বৃহস্পতিবারের সভায় এ নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রাহকরা। এসময় গ্রাহকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ বিলের সমস্যা সমাধান করতে জোর দাবি তুলেন সভার বক্তারা। পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গঠনেরও প্রস্তাব দেয়া হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অমিতাভ পরাগ তালুকদার জানান, সমস্যা চিহ্নিত ও সমাধাণের লক্ষে তদন্ত কমিটির মাধ্যমে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে।
Sharing is caring!