সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৩৭ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : হাটহাজারী পৌরসভায় নিখোঁজের দুদিন পর অষ্টম শ্রেণি পড়ূয়া স্কুলছাত্রীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে দুই পার্বত্য জেলার অন্যতম চট্টগ্রাম-রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ছিল উত্তাল। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টাও বেশি সময় ধরে ওই মহাসড়ক দুটি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন ও এলাকাবাসীর দখলে ছিল।
নিহত তাসনিম সুলতানা তুহিন (১৩) হাটহাজারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এর আগে শুক্রবার প্রাইভেট পড়তে গিয়ে নিখোঁজ হয় তুহিন। গ্রেফতার শাহনেওয়াজ সিরাজ মুন্না (২৬) পৌরসভার চন্দ্রপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহাজান সিরাজের ছেলে।
সোমবার দুপুরে গ্রেফতার শাহানেওয়াজ সিরাজ মুন্নাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার মণির আদালতের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তুহিনকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে মুন্না। গ্রামের বাড়ি উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকাল সাড়ে ৫টায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর ৫ সদস্যের একটি তদন্ত দল। থানা পুলিশ সূত্র জানায়, শুক্রবার মাগরিবের নামাজ শেষে সালাম ম্যানশনের নানুর নিচতলার ফ্ল্যাট থেকে দ্বিতীয়তলায় শিক্ষকের কাছে পড়তে যায় তাসনিম। এরপর থেকে তাকে আর পাওয়া যায়নি। আচরণ সন্দেহজনক হওয়ায় এর ঘণ্টাখানেক পর চতুর্থতলার ভাড়াটিয়া মুন্নাকে তুহিনের ভাই ও মামা আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় শনিবার তার বড় ভাই আকিব জাবেদ থানায় নিখোঁজের ডায়েরি করেন।
অপরদিকে মুন্নার কাছ থেকে কোনো তথ্য না পাওয়ায় তাকে তার পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তুহিনের সন্ধানে পোস্ট দেয়া হয়। এমনকি মুন্নাও তাদের সঙ্গে তুহিনকে খোঁজার ভান করে। সর্বশেষ ভবনের চতুর্থতলা থেকে রোববার সন্ধ্যায় হঠাৎ পচা গন্ধ বের হলে মুন্নার পিতামাতা ও সে দ্রুত ঘর থেকে আত্মগোপনে চলে যায়।
পরে পুলিশ হাটহাজারী বাজারের ত্রিবেণীর মোড় এলাকা থেকে মুন্নাকে আটক করে। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী সালাম ম্যানসনের চতুর্থতলার ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ড্রয়িংরুমের সোফার নিচ থেকে প্লাস্টিকের বস্তা মোড়ানো তুহিনের লাশ উদ্ধার করে চমেক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। হাটহাজারী মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দীন জাহাংগীর জানান, মুন্না আদালতকে জানায় তার সঙ্গে তুহিনের প্রেমের সর্ম্পক ছিল প্রায় এক বছর ধরে। ওই দিন শুক্রবার একটি বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে সে গলা টিপে হত্যা করে।
হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম এ প্রতিবেদককে জানান, হত্যার মূল নায়ককে আটক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু তৈয়ব বেশ কয়েক বছর আগে পৌরসভার শাহাজালাল পাড়ায় সালাম ম্যানশন নামে একটি পাঁচতলা ভবন নির্মাণ করেন। ভবনের একটি ফ্লাটে তিনি পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। ফ্লাটের অন্য ভবনগুলো বাসাভাড়া দিয়েছেন। সম্প্রতি সস্ত্রীক পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে গিয়েছেন। আগামী ২-৩ দিনের তারা দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd