সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:২৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ফেসবুকে তার নামে কয়েকটি আইডি রয়েছে। একটিতে নাম দেয়া হয়েছে ‘প্রিয়া আক্তার’, আরেকটিতে ‘আশা আশা’। এমনিভাবে তার নামে আরও কয়েকটি ফেক (ভুয়া) ফেসবুক আইডি রয়েছে।
এসব আইডিতে ব্যবহার করা হয়েছে তামিল সুন্দরী তরুণীদের ছবি। তার এসব ভুয়া আইডি থেকে বিভিন্ন পুরুষের কাছে হাই বা হ্যালো বলে জানানো হতো বন্ধুত্বের আহ্বান। একপর্যায়ে প্রেমের নাটক। পরবর্তীতে দেখা করতে এলেই অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি বা আটকিয়ে মুক্তিপণ হিসেবে আদায় করা হত মোটা অঙ্কের টাকা।
নাটোরের বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ শুক্রবার দীর্ঘ ৮ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে রাত ১১টার দিকে উপজেলার বনপাড়া পৌর শহরের নতুনবাজার এলাকার সালাম খানের ভাড়া বাসা থেকে আটক করে প্রতারক চক্রের প্রধান প্রিয়া আক্তারকে (২৬)।
পরবর্তীতে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, ওই চক্রের আরেক সদস্য রিমন হোসেনকে (২২) বনপাড়া পৌরগেট থেকে আটক করে পুলিশ। এ সময় জব্দ করা হয় প্রতারণা কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, ৪টি মোবাইল ফোন ও ৭টি সিম কার্ড।
পুলিশের কাছে দেয়া তথ্যমতে, প্রিয়া আক্তারের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার পাঠুরিয়া গ্রামে। তার স্বামীর নাম সুজন শেখ। আটককৃত রিমন বনপাড়া পৌর শহরের সরদারপাড়া গ্রামের মো. হেকমত উল্লাহর ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সদর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম জানান, শুক্রবার সকালে প্রিয়া আক্তারের আমন্ত্রণে সিলেট থেকে এক ফেসবুক প্রেমিক আহমেদপুরে আসেন। সেখান থেকে প্রিয়ার সহযোগী রিমন তাকে মোটরসাইকেলযোগে বনপাড়া প্রিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়ে এসে অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এ সময় ওই প্রেমিকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও নগদ ১২ হাজার টাকা কেড়ে নেয়া হয়। একপর্যায়ে কান্না করে দেন তিনি। পরবর্তীতে বিভিন্ন দেন দরবার শেষে বিকাশের মাধ্যমে ৬ হাজার টাকা পরিশোধ করার পর প্রতারক চক্রটি ওই প্রেমিককে বনপাড়া থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে হাইওয়ে সড়কে পৌঁছে দেয়।
পরবর্তীতে ওই প্রেমিক বিষয়টি নাটোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসে জানালে পুলিশ সুপার বিপ্লব বিজয় তালুকদারের নির্দেশে থানা ও বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের দুটি টিম প্রতারক চক্রটি ধরতে অভিযান চালায়। ওই প্রেমিক প্রিয়ার বাসার ঠিকানা সঠিকভাবে বলতে না পারায় বিকাশে ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে ব্যাপক অনুসন্ধান চালিয়ে অবশেষে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশ।
বড়াইগ্রাম থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলিপ কুমার দাস বলেন, প্রিয়ার সঙ্গে তার ৫ বছর বয়সী ছেলে রয়েছে। বনপাড়ায় ভাড়া বাসায় তার সঙ্গে থাকা কথিত স্বামী সুজন হোসেনও এই প্রতারক চক্রের অন্যতম সদস্য। সুজন নিজেকে ডিবি পুলিশ আবার কোন কোন সময় র্যাব সদস্য পরিচয় দিয়ে থাকে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে কমপক্ষে ৬ থেকে ৭ জন সদস্য জড়িত রয়েছে। জড়িত অন্য সদস্যদের খুঁজে বের করতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান ওসি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd