সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:২০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুচিয়াবাড়ি গ্রামের পাঁচ সন্তানের জননী ফুজলি বেগম (৮৬)। স্বামী ছামাদ শেখ মারা গেছেন ৩০ বছর হলো। অনেক কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে তিন ছেলে আর দুই মেয়েকে বড় করেছেন ফুজলি। দিয়েছেন ছেলে-মেয়েদের বিয়ে। এখন পাঁচ ছেলে-মেয়ে নিজ নিজ সংসারে ভালোই আছে।
কিন্তু তাদের কারও সংসারেই বৃদ্ধা মায়ের ঠাঁই হয়নি। মাকে খেতে-পরতে দিতে চায় না কোনো সন্তান। তাই গভীর রাতের অন্ধকারে মাকে বাড়ি থেকে ভ্যানে নিয়ে বাঁশঝাড়ের নিচে রাস্তায় ফেলে গেছে ছেলেরা।
বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয়রা বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে বড় ছেলে ডাকু শেখের বাড়িতে রেখে এসেছেন। বর্তমানে ছেলের ঘরের বারান্দায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন মা।
স্থানীয়রা জানান, ৩০ বছর আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর অনেক কষ্ট করে ছেলে-মেয়েদের বড় করেছেন ফুজলি বেগম। এখন বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। এখন তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। ছেলে-মেয়েদের কাছে বোঝা হয়ে গেছেন তিনি। তিন ছেলের আলাদা সংসার থাকলেও কোনো ছেলেই তার দায়িত্ব নিতে চান না। তাই গভীর রাতে তাকে রাস্তার পাশে ফেলে আসেন তারা। গ্রামের লোকেরা ছেলেদের অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলেও তার দায়িত্ব নিতে নারাজ ছেলেরা।
ওই গ্রামের আলফাজ উদ্দিন বলেন, বৃদ্ধা মাকে রাস্তার পাশে একটি প্লাস্টিকের বস্তা বিছিয়ে শুইয়ে রেখে যান তার ছেলেরা। আমরা গিয়ে দেখি, তার শরীরে অনেক পোকামাকড় ভরা। এ দৃশ্য দেখে চোখের পানি আটকে রাখতে পারিনি।
কুচিবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, আমরা গ্রামের লোকজন বৃদ্ধার ছেলেদের অনেক অনুরোধ করেছি। কোনো ছেলেই মায়ের দায়িত্ব নিতে চায় না। আমরা সবাই তার ছেলেদের বলেছি, আমরা সবাই মিলে বৃদ্ধার খাবার দেব, তোমরা শুধু বৃদ্ধার থাকার ব্যবস্থা করো। কিন্তু ছেলেরা কেউই মায়ের দায়িত্ব নিতে চাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে বৃদ্ধার ছেলেরা কথা বলতে রাজি হয়নি। এমনকি ওই বৃদ্ধার আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী বনি আমিন বলেন, আমি বর্তমানে একটি কাজে ঢাকায় অবস্থান করছি। এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ওই বৃদ্ধার খোঁজ-খবর নেয়া হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd