সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:১৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০১৮
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধি :: সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় আয়তন ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে পশ্চিম জাফলং অন্যতম বৃহৎ একটি ইউনিয়ন। ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামে নারী ও পুরুষ মিলে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। বিশাল ওই ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার হিসেবে বর্তমানে সরকারিভাবে কোন লোক না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছেন উপজেলার লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার ফরিদ উদ্দিন।
অপর দিকে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিষ্ট্রার না থাকায় এই ইউনিয়নে ৬ জন লোক জালিয়াতির মাধ্যমে ৭ এপ্রিল ২০১৬ ইং থেকে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে এলাকায় অভিযোগ উঠেছে। এই ইউনিয়নে নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত পার্শ্ববর্তী লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের ফরিদ উদ্দিন এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার বরাবরে উক্ত ৬জনকে বিবাদী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ও ভূয়া নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে রয়েছেন- ছাতারগ্রামের আব্দুল হাসিমের ছেলে মোছন আলী, কালিজুরীর মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে ফয়সল আহমদ, লাবু গ্রামের মৃত ছাইদুল্লাহর ছেলে সমছুদ্দিন (খাজুর), হাতির খাল গ্রামের মৃত সমছুদ্দিনের ছেলে নাজিম উদ্দিন ও দেড়িখাই বাগাবন্ধ (মনরতল) গ্রামের মিরজান আলীর ছেলে ফরিদ উদ্দিন। এলাকাবাসী জানান, এই ইউনিয়নে বছরে প্রায় ৫ শতাধিক নিকাহ রেজিষ্ট্রার হয়। এ হারে গত ৩ বছরে নিকাহ রেজিষ্ট্রার বাবদ সরকারি ফি প্রায় ৩০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন ওই ৬ জন প্রতারক। অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০১ সলের ১৭ জুলাই সিনিয়র সহকারী সচিব মোঃ হেলাল চৌধুরী স্বাক্ষরিত ৬২৭ নং স্মারকে- বিচার-৭/২এন-৩৪/৭৭ এর মাধ্যমে গোয়াইনঘাট উপজেলার লাবু গ্রামের মৃত সুনা মিয়ার ছেলে মোঃ সাজিদুর রহমানকে ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্ট্রার হিসেবে নিয়োগ দেন। অপর দিকে বিচার শাখা-৭ এর সিনিয়র সহকারী সচিব জি,এম, নাজমুছ শাহাদাৎ স্বাক্ষরিত নং বিচার-৭/২এন-০৯/২০১২-১৪৭, তারিখ- ২০১৬ সালের ৭ এপ্রিল মোঃ সাজিদুর রহমানের বিরুদ্ধে আনিত ‘‘শাহজালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার অভিযোগ সাব-রেজিস্ট্রার, গোয়াইনঘাট, সিলেট কর্তৃক তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় উহা মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ এর বিধি ১১ অনুযায়ী অসদাচরণ হওয়ায় এবং উক্ত অভিযোগে তাকে কারণ দর্শানো হলে জবাব দাখিল না করায় তার নামীয় নিকাহ রেজিস্ট্রি লাইসেন্স বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে সিলেট জেলা রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ ইলিয়াস হোসেন চলতি বছরের ১১ জুন থেকে পার্শ্ববর্তী লেঙ্গুড়া ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ ফরিদ উদ্দিনকে ২নং পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্ট্রার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। একই আদেশে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের সাবেক নিকাহ রেজিস্ট্রারকে প্রয়োজনীয় সকল রেজিস্ট্রারী সংক্রান্ত কাগজাদী গোয়াইনঘাট সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন। একই স্মারকে সাব রেজিস্ট্রার, গোয়াইনঘাট, সিলেটকে মোঃ সাজিদুর রহমান এর নিকট হইতে নিকাহ রেজিস্ট্রারী সংক্রান্ত যাবতীয় রেকর্ড পত্রাদি সমজিয়া নিয়া তার কার্যালয়ে প্রেরণ করার নির্দেশ দেন। পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের রহিম উদ্দিন, লুকেছ আহমদসহ অনেকেই বলেন, গোয়াইনঘাট সাব-রেজিস্ট্রারের সাথে ওই ৬ জনের দহরম মহরম সম্পর্ক থাকায় তারা অনায়াসে অবৈধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছেন আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কাজীকে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করছেন না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের মধ্যে নাজিম উদ্দিন, ফয়সল আহমদ জানান, আমরা সাবেক কাজী মোঃ সাজিদুর রহমানের সহকারী হিসেবে কাজ করি। এ বিষয়ে যাবতীয় দায় দায়িত্ব তার। সাবেক নিকাহ রেজিস্ট্রার মোঃ সাজিদুর রহমানের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত নিকাহ রেজিস্ট্রার ফরিদ উদ্দিন জানান, আমাকে পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের দায়িত্বভার কর্তৃপক্ষ অর্পণ করলেও ওই ৬জন ব্যক্তির বাধার মুখে আমি কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছি। এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট সাব-রেজিস্ট্রার মিস স্বপ্না বেগমের ব্যবহৃত মোবাইল ০১৭৩৯৩১৫৮১৭ নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্ঠা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd