সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১০:৩১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : সিলেট নগরীর আখালিয়ায় সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তার কাছে লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেছে সন্ত্রাসীরা। চাঁদার টাকা না দেয়ায় সন্ত্রাসীদের হুমকির মুখে পরিবার নিয়ে আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিনযাপন করছেন তিনি। নগরীর আখালিয়ার ২২ লেইক সিটি আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সাবেক এই ব্যাংক কর্মকর্তা শাহ নেওয়াজ সিদ্দিকী (৬৬) মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিঃ এর অবসরপ্রাপ্ত ফাস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট। এ ব্যাপারে তিনি সিলেটের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও দ্রæত বিচার আদালতে ২৩ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। মামলা নং-১২৮৮/২০১৮। আদালত শুনানী শেষে বিমানবন্দর থানাকে মামলা রেকর্ডের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশের ১০ দিন পর বিমানবন্দর থানা ৭ জনের নামোল্লেখ করে গতকাল বুধবার মামলা এফআইআর করে। থানার মামলা নং ৪।
অভিযোগে শাহ নেওয়াজ সিদ্দিকী উল্লেখ করেন, আম্বরখানা মৌজাস্থিত ছাপা ২২ নম্বর ছাপা খতিয়ানভুক্ত শাহী ঈদগাহ হোসনাবাদ এলাকায় ৯৮৪ নম্বর দাগের ০.১২ একর ভূমি ১৯৮৮ সালের ৮ ফেব্রæয়ারি তারিখে ১৭৯৫ নং দলিল মূলে ক্রয় করেন। বিগত ১৯৮৯ ইংরেজি সনের ১৮০১ নম্বর নামজারী মোকাদ্দমা বলে তিনি নিজ নামে ২২/৪ নং পৃথক খতিয়ানে নামজারী করে টিনের ছানী ও বেড়া দিয়ে তিন কক্ষ বিশিষ্ট একটি গৃহ নির্মাণ করেন। পরে বাড়াটিয়া মাধ্যমে ১৯৮৯ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভোগ-দখল করছেন। রিভিশনেল জরিফে তফসিল বর্ণিত ভূমি ৪১৭৬ নং খতিয়ানে শাহ নেওয়াজের নামে পৃথক বি.এস.দাগে রেকর্ড হইয়া স্থিরতর রয়েছে।
অভিযোগে তিনি বলেন, মালিকানাধীন এই গৃহটি জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় তিনি মেরামত কাজ শুরু করলে ৫ দিন পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অভিযোগে উল্লিখিত ১ ও ২ নং আসামি আনোয়ার হোসেন (৪৭) এবং খছরু মিয়া (৩৮)সহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫ থেকে ২০ জন সন্ত্রাসী ৮ টি মোটরসাইকেল নিয়ে আমার ঘরের সামনে এসে আমার নিকট এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি তাদেরকে বলি ‘আমি চাঁদা-টাকা দেই না’। তখন আনোয়ার ঘরে মেরামতের কাজ বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দেন। এর পর থেকে প্রতিদিন সকাল-বিকাল বিভিন্ন সময় আনোয়ার ও ২ খছরুর নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ টি মোটরসাইকেল নিয়ে এসে আমার শ্রমিকদের অশ্লীল গালিগালাজ ও ঘরের কাজ না করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। আমি ঘটনাস্থলে আসলে আমাকে উস্কানিমূলক অঙ্গ ভঙ্গির প্রদর্শন করে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর তাদের হুমকিতে আতঙ্কিত ও ভীত হয়ে ঘরের দরজা তালাবদ্ধ করে বাসায় চলে যান।
গত ২০ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল অনুমান ৯-১০ মিঃ এর সময় উল্লিখিত ১,২,৩,৪,৫ ও ৬নং আসামি প্রত্যেকের হাতে ধারালো কিরিচ লম্বা দা ইত্যাদি নিয়ে এসে সন্ত্রাসী মহড়া দিয়ে আশ-পাশে ভয়-ভীতি ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে শাহ নেওয়াজ সিদ্দিকী ও তাঁর স্ত্রী ঘটনাস্থলে পৌঁছালে খছরু মিয়া তাদের খুন-জখমের হুমকি দেন এবং অন্যান্য আসামীগণদের সাথে নিয়ে শাবল দিয়ে তালাবন্ধ ঘরের তালা ভেঙে ঘরের ভিতর ঢুকে বিভিন্ন আসাবপত্র ও মালামাল ভাঙচুর করেন। উত্তর দিকের ঘরের উপরের টিন খুলে ফেলেন। শাহ নেওয়াজ আসামীদের বাধাঁ দিলে আনোয়ার হোসেন কিরিচ দিয়ে তাকে খুন করার ভয়-ভীতি দেখান। ভাঙচুরের তান্ডব শেষ করে আসামীরা বাইরে অবস্থান নেয় এবং ৪ নং আসামি নূর মোহাম্মদ জোরপূর্বক একটি তালা ঘরের দরজায় লাগিয়ে দেন। এসময় ২নং আসামী খছরু মিয়া তাদের দাবি অনুযায়ী একলক্ষ টাকা না দিয়ে তালা খুলার চেষ্টা করলে খুন করে লাশ বানিয়ে ফেলবেন বলে শাহ নেওয়াজ সিদ্দিকীকে।
মামলার আইনজীবী এডভোকেট শামীম আহমদ সিদ্দিকী বলেন, আদালতের নির্দেশের পরও পুলিশ মামলা রেকর্ডে বিলম্ব করে। আশা করি মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দোষীদের চাঁদাবাজদের অবিলম্বে গ্রেফতার করবে পুলিশ।
এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ গৌছুল হোসেন বলেন, পুলিশ মামলা নিয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার করার চেষ্টা চলছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd