মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার হাট-বাজারে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে পাখি। শীতের আমেজ শুরু হতে না হতেই এক শ্রেণীর পেশাদার পাখি বিক্রেতা উপজেলা সদরের বাসিয়া ব্রিজ, বিভিন্ন হাটবাজার, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কসহ গুরুত্বপুর্ন পয়েন্টে বিক্রি করছেন পাখি।
পেশাদার শিকারিদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন মৌসুমী পাখি বিক্রেতারাও। তারা প্রতিদিনই উপজেলার কোননা কোন হাট-বাজারে পাখি বিক্রি করে থাকেন। বিশেষ করে প্রতি রোববার ও বুধবার উপজেলাজুড়ে প্রকাশ্যে এসব পাখি বিক্রি করা হলেও এক্ষেত্রে প্রশাসনের নেই কোন নজরদারি।
প্রকৃতিতে শীতের আমেজ শুরু হলেই উপজেলার চালধনী হাওরসহ ছোটবড় হাওর ও বিলে বিভিন্ন রঙ-বেরঙের পাখির ঢল নামে। আশ্বিন মাসের শেষের দিকে হাওর ও বিলের পানি কমতে শুরু করে। এসময় পুঁটিসহ ছোট ছোট মাছ খাওয়ার লোভে হাওর কিংবা বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি নামে। ওই সময় এক শ্রেণীর শিকারিরা বিষটোপ কিংবা নানা ধরনের ফাঁদ পেতে শিকার করছেন পাখি।
পাখি শিকারি জগন্নাথপুরের পাড়ার-গাঁওয়ের মনসুর, বিশ্বনাথের নওধার পূর্বপাড়ার আইনুল মিয়াসহ বেশ কিছু শিকারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিশ্বনাথের চালধনী হাওর, সিঙ্গেরকাছের বড়বিল, দৌলতপুরের দুবাগ বিল, কালিগঞ্জের মাদাই বিলে খুঁটি পুতে, কলাপাতা ও সুপারি গাছের ডালপালা দিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরী করা ফাঁদ দিয়ে পাখি শিকার করেন তারা। প্রতিদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা আর ভোর ৫টা থেকে সকাল ৯টা এই দুই টাইম পাখি শিকার করা হয়। প্রতিদিন ৩০থেকে ৪০টি বক ও ১০থেকে ১৫টি ‘ঘুঘু’ ধরতে পারেন একেকজন শিকারি। বকের হালি ৪০০টাকা আর ‘ঘুঘু’র হালি ২০০টাকায় বিক্রি করতে পারেন তারা। তবে, ক্রেতা হিসেবে শিকারিদের পছন্দ মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস ও অটোরিকশার যাত্রীদের। সেজন্যে তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন স্থানে পাখি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ প্রসঙ্গে, বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন্চার্জ (ওসি) শামসুদ্দোহা পিপিএম এ প্রতিবেদককে বলেন, বিশ্বনাথে পাখি শিকার কিংবা বিক্রির ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু ধরা পড়ার ভয়ে এক জায়গায় শিকারিরা অবস্থান না করায় আটক করা যায়নি।
Sharing is caring!