মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে ময়না-আর্বজনা ফেলার জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অস্থায়ী প্লাস্টিকের ডাস্টবিন উপজেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়। এসব ডাস্টবিনের খুব বেশি ব্যবহার না থাকায় সেখানে আবর্জনাই তেমন দেখা যায় না। গণসচেতনতার অভাবে হোটেল, রেস্টুরেন্ট, বাসা-বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা জমিয়ে রাখা হয় রাস্তার পাশে বা নদীর পাড়ে। এতে পথচারীর চলাচলে সৃষ্টি হয় প্রতিবন্ধকতা।
হাঁটার রাস্তায় আবর্জনা ফেলার জন্য কিছু দূর পরপর নতুন বিন বা বাক্স বসানো হয়েছে। সেগুলোর গায়ে ‘আমাকে ব্যবহার করুন’ এবং ‘ডাস্টবিন’ লেখা থাকলেও এগুলোর যথাযথ ব্যবহার হচ্ছে না। লোকজন বিনের বাইরেও ময়লা ফেলছে।
উপজেলা প্রশাসর কর্তৃপক্ষ জানায়, এ এলাকায় যেখানে যেখানে প্রয়োজন সেখানেই ময়লা ফেলার বাক্সগুলো বসানো হয়েছে। তবে আরও বেশ কয়েকটি বাক্স বসানোর পরিকল্পনা আছে তাদের। ঢাকনা লাগানো ডাস্টবিন উপজেলা সদরের বিভিন্ন সড়কের পাশে স্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু ডাস্টবিনে পড়ে থাকা ময়না-আর্বজনা অপসারণের জন্য কোনো কর্মী নেই। যার ফলে অনেকেই আবার ময়লা ডাস্টবিনে না ফেলে পাশে ফেলে রেখে যাচ্ছেন। তবে ময়না-আর্বজনা অপসারণের জন্য কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে। গণসচেতনার অভাবের কারণে ডাস্টবিনের ময়লার পাশাপাশি রাস্তায় বা নদীর পাড়ে ময়লা ফেলা দেয়া হয়। ফলে নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের মুখে ময়লার স্তুপ পড়ে রয়েছে।
উপজেলা সদরে সরেজমিনে দেখা যায়, বাসিয়া সেতুর ওপর একটি ডাস্টবিন রয়েছে। ডাস্টবিনের মুখ খুলে দেখা গেল ডাস্টবিনটি ময়লা-আবর্জনায় ভর্তি। দেখে মনে হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে ওই ডাস্টবিনে ময়লা পড়ে আছে। কিন্তু অপসারন করা হয়নি। তবে খুব দুর্গন্ধ রয়েছে। এর কিছুক্ষণ পর একটি শিশু ব্যাগভর্তি ময়লা নিয়ে আসতে দেখা গেল। এসময় ওই শিশুটি ডাস্টবিনে ময়লাগুলো না ফেলে বাসিয়া নদীর পাড়ে ফেলে যায়। আবর্জনা ফেলার বাক্স থেকে প্রায় ২০ হাত দূরে স্তুপ করে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে।
জানাগেছে, চলতি বছরের গত ১১ আগষ্ট বিশ্বনাথে রামসুন্দর সরকারি অগ্রগামী মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এবং জেলা প্রশাসন ও বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক সহযোগীতায় আয়োজিত উপজেলার পরিবেশ রক্ষার্থে ‘পরিচ্ছন্ন ও সবুজ জনপদ’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশ্বনাথ সদর এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বেশ কয়েকটি ডাস্টবিন প্রদান করা হয়।
পথচারী আবদুর রকিব বলেন, নানান প্রয়োজনে প্রতিদিন বাসিয়া সেতুর ওপর দিয়ে অনেক বারই যাতায়াত করতে হয়। দূর্গন্ধের কারণে নাকে-মুখে রুমাল দিয়ে যাতায়াত করি। চলাচলের জন্য বিকল্প কোন সড়ক না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই এলাকাবাসীকে আবজর্নার স্তুপের পাশ দিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে।
শিক্ষার্থী মিনা বেগম, আনোয়ারা বেগম ও শিক্ষার্থী আবদুল করিম, সারোয়ার হোসেন বলেন, দিন দিন ময়লা-আবর্জনার স্তুপের দূর্গন্ধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে পরিবেশ নষ্ঠ হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্জনেও ব্যাঘাত ঘটছে। দ্রুত এস্থান থেকে এসব বর্জ্য অপসারণ করে এস্থানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করতে হবে।
বিশ্বনাথ পুরার বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আহমদ মিয়া বলেন, বাজারের কোথাও ময়লা-আবর্জনা ফেলার নির্দিস্ট কোন স্থান না থাকার কারণে ব্যবসায়ী বাধ্য হয়েই নদীর পাড়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলছেন। একটি স্থান নিধারণ করা হলে ব্যবসায়ীরা সেখানে আর ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না। উপজেলা সদরে যেসকল স্থানে ডাস্টবিন বসানো হয়েছে তাতে ময়না-আর্বজনা ওই ডাস্টবিনে জায়গা হবেনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বলেন, গণসচেতনার অভাবের কারণে ডাস্টবিনের সঠিকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছেনা। গণসচেতনা এলাকায় বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু ডাস্টবিনে পড়ে থাকা ময়না-আর্বজনা অপসারণের জন্য কোনো কর্মী নেই। যার ফলে অনেকেই আবার ময়লা ডাস্টবিনে না ফেলে পাশে ফেলে রেখে যাচ্ছেন। তবে ময়না-আর্বজনা অপসারণের জন্য কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে বলে তিনি জানান।
Sharing is caring!