সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১১:৪৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০১৮
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : কানাইঘাটে পূজা মন্ডপে বিতরণকৃত সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল আটক করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় উক্ত চাল গুলো আটক করেন কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা। জানা যায়, কানাইঘাটে দূর্গা পুজা উদযাপন উপলক্ষে উপজেলার ৩৫টি পূজা মন্ডপে সরবরাহের জন্য সরকার কতৃক বরাদ্ধকৃত সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন জি/আর চাল গত ১৪ অক্টোবর পূজা মন্ডপের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের অনুকুলে প্রদান করা হয়। এতে গত ১৫ অক্টোবর পূজা মন্ডপের জন্য প্রদানকৃত সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন চাল (১৮ হাজার ৫ শত কেজি) ২৩ টাকা কেজি দামে সর্বমোট ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে ক্রয় করেন কানাইঘাট পূর্ব বাজারের চাল ব্যবসায়ী মেসার্স আব্দুল মতিন ষ্টোরের প্রোপ্রাইটর আব্দুল মতিন মুতলিব।
গত ১৭ অক্টোবর বুধবার উক্ত চালগুলো কানাইঘাট উপজেলা খাদ্য গোদাম থেকে উত্তোলন করে কানাইঘাট পূর্ব বাজারস্থ মুতলিব মোলার ভাড়াটে গোদামে স্টক করে রাখেন আব্দুল মতিন মুতলিব। উক্ত চাল গুলোকে সরকারী চাল হিসাবে অবৈধভাবে ক্রয় করা হয়েছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন কানাইঘাট পূর্ব বাজারের মেসার্স শাহজালাল বীজঘরের প্রোপ্রাইটর কানাইঘাট পৌরসভার দুর্লভপুর গ্রামের মৃত আলাউর রহমানের পুত্র সার ব্যবসায়ী নাজিম উদ্দিন ময়না। তিনি তার অভিযোগে উলেখ করেন কানাইঘাট পূর্ব বাজারের চাল ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন মুতলিব, সার ডিলার আব্দুল মুমিন, চাল ডিলার ফরিদ আহমদ ও আব্দুল মালিক মানিক গংরা কানাইঘাট খাদ্য গোদাম থেকে সরকারী সাড়ে ১৮ মেট্রিকটন চাল স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে বেশি মোনাফা লাভের জন্য স্টক করিয়া রাখিয়াছেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় কানাইঘাট পূর্ব বাজারস্থ মনির মিয়ার তৈলের দোকানে উপস্থিত হয়ে উক্ত সাড়ে ১৮ মেট্রিক টন (৩৬০ বস্তা) চাল আটক করে চাল গুলোকে দোকানের মালিক সালেহ আকরামের জিম্মায় রেখে আসেন।
এদিকে কানাইঘাট পূর্ব বাজারস্থ মনির মিয়ার তৈলের দোকানের মালিক সালেহ আকরাম জানান, তার দোকান ঘরটির পিছনের গোডাউটি চাল ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন মুতলিবের কাছে ভাড়া দেওয়া ছিল। তাই উক্ত গোডাউনটি আব্দুল মতিন মুতলিব ব্যবহার করতো। গতকাল সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানা তার দোকানে উপস্থিত হয়ে উক্ত গোডাউনে রক্ষিত আব্দুল মতিন মুতলিবের সাড়ে ১৮ মেট্রিকটন চাল আটক তার জিম্মায় দিয়ে গোডাউনটি তালাবন্ধ করে চাবি নিয়ে যান। সালেহ আকরাম বলেন, ইউএনওর পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়ার আগ পর্যন্ত চাল গুলো তার জিম্মায় থাকবে বলে জানান তিনি। এদিকে অভিযোগকারী নাজিম উদ্দিন ময়না বলেন, দীর্ঘদিন থেকে উক্ত ব্যক্তিরা কানাইঘাট খাদ্য গোদাম থেকে বিভিন্ন জায়গায় প্রদানকৃত সরকারী চাল অর্থের লোভ দেখিয়ে অবৈধ ভাবে ক্রয় করে বেশি লাভে সিলেট শহরে নিয়ে বিক্রয় করে থাকে। এতে যে কাজে সরকার উক্ত চাল বিতরণ করে সেই কাজটি সফল হয়না। তাই তিনি উক্ত ব্যবসায়ীদের এহেন অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এদিকে কানাইঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া সুলতানার সাথে আলাপকালে তিনি জানান, উক্ত সরকারী চাল গুলো এক ব্যবসায়ী অবৈধ ভাবে স্টক করে রাখিয়াছে বলে অভিযোগ পেয়ে তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন। এতে চালগুলো সাময়িক ভাবে আটক করে দোকানের মালিকের জিম্ময় রেখে এসেছেন। তিনি বলেন, উক্ত বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কানাইঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন। কৃষি কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর চাল গুলো কেন এখানে রাখা হয়েছিল, তা তিনি বলতে পারবেন বলে জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd