মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে একাধিকবার ধর্ষণের শিকার হয়ে নির্মমভাবে খুন হওয়া স্কুলছাত্রী রুমি আক্তারের ঘাতক শফিক মিয়ার ফাঁসির দাবি জানিয়েছে তার পরিবার। আজ বৃহষ্পতিবার বিকেলে বিশ্বনাথের স্থানীয় বাসিয়া ব্রীজের উপর তার পরিবারের সদস্যরা মানববন্ধন করে এ দাবী জানান। মানববন্ধনে রুমির মা মমতাজ বেগম, দাদী রাবেয়া বেগম, ফুফু মুন্নি, দুই ভাই ইয়ার হোসেন ও শফিকুলসহ পরিবারের ১১সদস্য অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পরিবারের সদস্যরা বলেন, ‘রুমিকে ঘিরেই ছিল আমাদের একটা সুখময় সংসার। কিন্তু কি থেকে যে কি হয়ে গেল। ভয়ংকর ঘাতক শফিক প্রাণ কেড়ে নিল সকলেই প্রিয় রুমির। কি অপরাধ ছিল তার? এতটুকুন একটা মেয়েকে, একটা অস্টম শ্রেণি পড়ু–য়া ছাত্রীকে নির্মমভাবে খুন করতে তার একটুও কি হাত কাঁপলো না? আমাদের সুখের সংসারকে শোকের অন্ধকারে ঠেলে দিল ওই পাষন্ড খুনি। আমরা খুনি শফিকের ফাঁসি চাই। তাকে যেন ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মারা হয়’।
মানববন্ধনের পূর্বে বৃহষ্পতিবার সকালে টাঙ্গাইল থেকে সিলেটে আসেন রুমির পরিবারের সদস্যরা। সেখানে হযরত শাহজালাল ও শাহপরাণ (রঃ) মাজার ও মানিকপীরের টিলায় রুমির কবর জিয়ারত করেন তারা। দুপুরে বিশ্বনাথ থানায় এসে ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএমের সাথে সাক্ষাৎ করেন পরিবারের ১১সদস্য। সেখান থেকে ছুটে যান ঘটনাস্থল উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের পাটাকইন ও রামচন্দ্রপুর এলাকায়। ঘটনাস্থল দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন রুমির মা মমতাজ বেগমসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা। এসময় সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর বিদেশী বরের সাথে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানার নগরভাত গ্রামের আতাউর রহমানের একমাত্র মেয়ে ও স্থানীয় মৈশামূড়া বসন্ত কুমারী উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুমি আক্তারকে (১৬) সিলেটের বিশ্বনাথে নিয়ে আসে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত ওয়াব উল্লাহ’র পুত্র শফিক মিয়া (৩২)। নিজ বসত ঘরে একাধিকবার ধর্ষণ করে রুমিকে নির্মমভাবে খুন করে তার লাশ রামপাশা ইউনিয়নের পাঠাকইন-রামচন্দ্রপুর সড়কের পাশে তবারক আলীর বাড়ির সামনে ফেলে পালিয়ে যায় সে। ১০ সেপ্টেম্বর রাতে ওই লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে ১৬ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যায় রামচন্দ্রপুর গ্রামের ওহাব উল্লাহ’র দুই পুত্রবধূ (শফিকের ভাবী) দিপা বেগম ও লাভলী বেগমকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে দু’দিন পরে মির্জাপুরের গোড়াই ইউনিয়নের সোহাগপাড়া থেকে শফিককে ও সন্ধ্যায় গাজীপুর থেকে তার স্ত্রী সোনালী আক্তার হ্যাপীকে আটক করে পুলিশ। পরে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্ধীতে রুমিকে হত্যার কথা স্বীকার করে পূর্বে একটি ধর্ষণ ও একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামী শফিক।
Sharing is caring!