সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ২:২৯ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের ধলাই নদীতে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী পলো দিয়ে মাছ ধরার উৎসব উদযাপিত হয়েছে।
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ধলাই নদীতে এই মৎস আহরণ শুরু হয়।এতে প্রায় ৩শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। কমলগঞ্জ পৌর এলাকার দক্ষিণ কুমড়াকাপন, আলেপুর, চন্ডিপুর, কুমড়াকাপন এসব গ্রামের মানুষ এতে অংশগ্রহণ করেন। কমলগঞ্জের খাল-বিল ও নদী নালার পানি কমতে শুরু করেছে। কমলগঞ্জের ফসলি মাঠগুলো এখনো হয়ে উঠেনি আবাদের উপযোগী। ফলে এ অঞ্চলের কৃষকের হাতে নেই তেমন কোন কাজ। এ অবসরে অল্প পানিতে মাছ শিকারের উৎসবে মেতে উঠেন সবাই। ধলাই নদীর স্বল্প পানিতে এখন বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে দল বেঁধে মাছ ধরার দৃশ্য চোখে পড়ার মতো। বিশেষকরে পলো, উড়াল জাল, পেলেন জাল এসব দিয়েই মাছ শিকার করছেন লোকজন। দলবদ্ধভাবে মাছ শিকারের এ দৃশ্য দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা। উৎসবে অংশ নেয়া মানুষদের উৎসাহ দিতে হাতে তালি কিংবা জোরে জোরে চিৎকার করে উৎসাহ প্রদান করছেন দর্শনার্থীরা। বড়দের পাশাপাশি ছোট ছেলে মেয়েরাও যে যার মতো করে মাছ ধরতে সহযোগিতা করছে। মাথা ও কোমরে আঁটসাট করে গামছা বেঁধে অনেকটা আনন্দ নিয়েই মাছ ধরছেন সবাই। শখের বসে মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে নেমেছেন মাছ ধরতে। সকাল থেকে শুরু হয়ে বিকেল পর্যন্ত চলে তাদের এই মাছ ধরা। দল বেঁধে সারিবদ্ধ হয়ে পলো দিয়ে পুটি, টেংড়া, শোল, ঘাগট ও বোয়াল মাছ ধরছেন। পলো দিয়ে মাছ ধরার দৃশ্য সবারই মন কাড়ে। নদীর স্বল্প পানিতে ৩০/৪০ জনের একটি দল একদিকে জাল নিয়ে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। আর অপরপ্রান্ত থেকে ৪০/৫০ জনের সারিবদ্ধ দল পলো চাপিয়ে মাছ ধরতে সামনের দিকে এগিয়ে আসেন।
আলেপুর গ্রাম থেকে আসা নূর মিয়া বলেন, বছরের এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। সবাই মিলে একসাথে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। এক কেজি ওজনের একটি ঘাগট মাছ পেয়ে আরো বেশি আনন্দ লাগছে।
এ ব্যাপারে আলাপকালে কমলগঞ্জের প্রবীন মাছ শিকারী মো. ইসমাইল মিয়া জানান, দিন দিনই পরিবেশ ও আবহাওয়ার প্রতিকূলতার কারণে নদী-নালা, খাল-বিল, হাওরের তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি হ্রাস এবং অধিকাংশ জলাশয় ইজারা দেওয়ায় পলো বাওয়া উৎসব এখন অনেকটাই ভাটা পড়েছে। অভাব অনটন ক্রমশ: গ্রাস করে ফেলছে চিরাচরিত এই গ্রামীণ উৎসবের অতীত ঐতিহ্যকে। তার মতে, প্রাচীন এই উৎসবকে টিকিয়ে রাখতে সর্বমহলের উদ্যোগ প্রয়োজন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd