সিলেট ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৬শে রবিউস সানি, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৩:৫২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০১৮
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেট সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ১৪ বছর আগের ভলিয়মে অসম্পাদিত দলিল সংযোজনের ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর আতংক দেখা দিয়েছে নকলনিবশ, উমেদারসহ রেকর্ড রুম সংশ্লিষ্ট মধ্যে। লিখিতভাবে দুই উমেদার ও নকলনবিশকে বরখাস্তের পর তাদের সহযোগীরা তৎপর হয়ে উঠেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে। অন্যদিকে, দালাল কালাম আত্ম গোপনে চলে গেছে। কালাম ও তার সহযোগীদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার দাবি তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা সাব রেজিস্টার মো: ইলিয়াছ হোসেন এক স্মারকে অভিযুক্ত দুই উমেদার ও ২ নকলনবিশকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। একই সাথে ঘটনা তদন্তের জন্য জকিগঞ্জের সাব রেজিস্ট্রারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। দলিল জালিয়াতির ঘটনায় বরখাস্ত ৪ জনের মূল হোতা নকলনিবশ মাহমুদ ও উমেদার নাহিদ আকবর। এ দুজন ছাড়াও এই ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত অভিযোগে অন্য উমেদার নবজিত ও নকলনবিশ নুরুজ্জামানকে বরখাস্ত করা হয়ছে।
সিলেট সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ২০০৩ সালের একটি ভলিয়মে নগরীর দক্ষিণ সুরমার মুমিনখলা এলাকার বাসিন্দা পিতা আব্দুর রহমানকে দাতা ও রুহি ওয়াদুদ গ্রহীতা দেখিয়ে একটি অসম্পাদিত দলিল সংযোজন করা হয়। এর মধ্যে পিতা আব্দুর রহমান মারা গেছেন এবং কন্যা নূরী ওয়াদুদ যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। দলিল জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে মৌখিক নির্দেশে উমেদার নাহিদ আকবর, নবজিত ও নকলনবিশ মাহমুদ এবং নুরুজ্জামানকে কাজ থেকে বিরত রাখাসহ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অপেক্ষা করা হয় ছুটিতে থাকা জেলা সাব রেজিস্ট্রারের। গতকাল রোববার জেলা রেজিষ্টার অফিসে মৌখিক নির্দেশে বরাখাস্ত চারজনকে লিখিতভাবে বরখাস্ত করা হয়। জেলা রেজিস্টার অফিসের স্মারক নং ৩১৭২ ও ৩১৭৩।
জড়িত অভিযোগে অফিস সহায়ক (প্রচলিত শব্দ উমেদার) নাহিদ আকবর, নবজিত, নকল নবিশ মাহমুদ ও নুরুজ্জামান এবং দালাল কালামের বাইরে কারা জড়িত থাকতে পারে-এ নিয়ে নড়েচরে বসে প্রশাসন। তবে সবাই অপেক্ষা করছিলেন জেলা রেজিস্ট্রারের। রেকর্ড রুম থেকে ভলিয়ম কার হাত ধরে বেরিয়ে এসেছে সিসি ক্যামেরা দেখে তা সনাক্ত করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত বলে যাদের নাম উঠে আসছে-তারা বিভিন্ন সময়ে দলিল জালিয়াতি ও রেকর্ড ধ্বংসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বরখাস্তও হয়েছিলেন বলেও জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের ৩০ শতক ভূমির এই দলিল জালিয়াতির সাথে শক্তিশালী একটি চক্র জড়িত রয়েছে। তাদের সহযোগিতা করেছে সাবরেজিস্ট্রি অফিসেরই একটি চক্র। বিভিন্ন সময়ে তাদের বদলীসহ শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়া হয়। নতুন করে দলিল জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর জড়িতদের বাচাতে ঐ চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকালে রেকর্ড রুম থেকে সিলেট সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সিনিয়র দলিল লেখক মুহিবুর রহমান জিলুর নামে একটি দলিলের নকলের জন্য আবেদন করা হয়। এই খবর জিলু মিয়ার কাছে গেলে তিনি এসে জানান, ওই দলিলের নকলের জন্য তিনি আবেদন করেননি। এরপর বিষয়টি খুঁজতে গিয়ে ধরা পড়ে ২০০৩ সালের একটি ভলিয়মে অসম্পাদিত দলিল সৃষ্টি করেছে কোন এক চক্র। এরপর দলিলের জন্য আবেদনকারী কালামকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে একে একে বেরিয়ে আসে জড়িতদের নাম। এ ঘটনায় ৪জনকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করেন সদর সাব রেজিস্ট্রার। দালাল কালামকেও আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd