বিতার্কিক হলে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে

প্রকাশিত: ৮:৪১ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৭, ২০১৮

বিতার্কিক হলে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে

ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : ‘বিজ্ঞান মনস্ক, যুক্তিবাদী যেমন হওয়া যায়, একজন ভাল বিতার্কিক হলে সকল জড়তা কেটে যায়। যেকোন আলোচনায়, সেমিনারে নিজের যোগ্যতা উপস্থাপন করা যায়।’ বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) আয়োজনে-‘শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীরাই ছাত্রদের চেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে’ শীর্ষক বিতর্ক প্রতিযোগিতার শ্রেষ্ঠ বক্তা সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দিলশাদ আনজুম’এর মন্তব্য এটি। বৃহস্পতিবার বিটিভি’র এই বিতর্ক প্রতিযোগিতায় ‘শিক্ষাক্ষেত্রে ছাত্রীরাই ছাত্রদের চেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে’এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় সুনামগঞ্জ সরকারি এসসি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিতার্কিক দল। দলের বিতার্কিকরা ছিলেন- মিথিলা ফারজানা, ফারজানা আলী সূচী এবং দলনেতা দিলশাদ আনজুম।
শুক্রবার দুপুরে এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময়- দিলশাদ বললো- ‘বিতর্কের চর্চা করলে পড়াশুনার ব্যাঘাত ঘটে না। বিতার্কিক হলে জ্ঞানের পরিধি বাড়ে। একজন বিতার্কিককে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে যেমন বিজয়ী হবার চিন্তা করতে হবে, তেমনি তাঁর রুটিন পড়াশুনাও সমানভাবে চালিয়ে যেতে হবে। তাতে ভাল বিতার্কিক ও ভাল ছাত্র দুটোই হওয়া সম্ভব।’ সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবার সময় দুই সেকশনে সমন্বিতভাবে দ্বিতীয় এবং ‘বি’ সেকশনে প্রথম হওয়া শিক্ষার্থী দিলশাদ জানালো, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নিয়মিত বিতর্কের চর্চা করেও সে জেএসসিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী সে। তার প্রত্যাশা সে এসএসসিতেও ভালো ফল করবে।
শহরের ষোলঘল আবাসিক এলাকার সুরমা-২১১/২’এর বাসিন্দা আব্দুল্লা খান ও জেবা খাঁন’এর ৪ ছেলে ও ২ মেয়ের মধ্যে ছোট দিলশাদ আনজুম।
দিলশাদ জানালো, পরিবারের সকলেই তাকে বিতর্কের চর্চা করতে উৎসাহ দেন। বিতর্কের চর্চা এগিয়ে নেবার জন্য প্রতিদিন সে স্থানীয় এবং জাতীয় দুয়েকটি দৈনিক পত্রিকা এবং সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকার গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ পড়ার চেষ্টা করে। এছাড়া ইউটিউব থেকে বিতর্কের ভিডিও ফুটেজ আপলোড করে দেখে এবং ভালো বিতার্কিককে অনুসরণ করার চেষ্টা করে।
তার মতে একজন ভাল বিতার্কিক হতে হলে উপস্থিত বুদ্ধি থাকতে হবে। বাচনভঙ্গি চমৎকার হতে হবে। উচ্চারণ স্পষ্ট হতে হবে। বিতর্কের সময় শালিনতা বজায় রাখতে হবে। বহুমুখী দৃষ্টিভঙ্গি থাকতে হবে। যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হবে, তা যুক্তিনির্ভর হতে হবে। বক্তব্য সহজ ও সাবলীল হতে হবে। প্রতিযোগিতার সময় ভয়ভীতি থাকতে পারবে না। নিজের দলের মধ্যে সমন্বয় থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার অংশ নেওয়া বিটিভি’র বিতর্ক প্রতিযোগিতায় তাদের দলের প্রতিপক্ষের দলের চেয়ে সমন্বয় ভাল ছিল এবং উচ্চারণ ছিল স্পষ্ট। এই বিষয়টি প্রতিযোগিতার পর বিচারকরা প্রতিযোগীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন বলে জানায় দিলশাদ।
দিলশাদ জানালো-সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিতর্কের চর্চা করানো হয়। তারা সনাতনী, পার্লামেন্টারী, রম্য, উপস্থিত বিতর্ক ও আঞ্চলিক বিতর্কের চর্চা করে থাকে। গেল বছর সরকারিভাবে হওয়া উপস্থিত বিতর্কে এবং সমকাল-বিএফএফ’এর সনাতনী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তাদের দল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজ মোহাম্মদ মাশহুদ চৌধুরী, সহকারী শিক্ষক মো. মফিজুর রহমান, শওকত আলী আহমদ, সুভাস চন্দ্র দাস, মো. আবুল হাসানসহ অনেকেই বিতর্কের তালিম দেন তাদের। বিদ্যালয়ে শ্রেণি কক্ষে আন্ত:বিতর্ক প্রতিযোগিতা হয়। শ্রেণিতে-শ্রেণিতে প্রতিযোগিতা হয়।
দিলশাদের মতে সবগুলো স্কুলেই, বিশেষ করে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে বিতর্কের ক্লাব থাকতে পারে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের এই ক্লাবে যুক্ত করা হবে। শিক্ষকরা এই ক্লাবের তত্ববধানে থাকবেন। বিতর্ককে একটি শিল্প বিবেচনা করতে হবে। ভালভাবে এই শিল্পের চর্চা করতে হবে। তাহলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ে অনেকগুলো বিতার্কিক দল সৃষ্টি হবে। একটি দল এসএসসি শেষ করে স্কুল থেকে কলেজে উত্তীর্ণ হলেও আরেকটি দল এই শূন্যস্থান পূরণ করে নেবে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

October 2018
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  

সর্বশেষ খবর

………………………..