সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:২৯ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
জৈন্তাপুর প্রতিনিধি :: একটা সময় ছিল যখন ছোট খাটো কাজের জন্য সরকারী অফিসে যেতে হতো নাগরিকদের। ডিজিটাল যুগে তথ্য প্রযুক্তির সুবিধা প্রাপ্তিতে এসেছে এর পরিবর্তন। সরকারী ই-সেবা চালু হওয়ায় বিশ্বের যে কোন স্থান হতে অনলাইনে ঘরে বসেই সেবা গ্রহন করছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। ডিজিটাল সেবা বাস্তবায়নের ফলে ঘরে বসেই বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারছে সাধারন গ্রাহকরা। ঘরে বসেই সরকারী দপ্তরের সুবিধা ও বিভিন্ন সেবার তথ্য জানতে পারছে সাধারন নেট ব্যবহারকারীরা। প্রয়োজনীয় ফরম ডাউনলোড করে তা জমা দিতে পারছে। শরিক হয়েছে সরকার ভিশন-২০২১ সফলতা বাস্তবায়নে। তখন হতে ব্যবহারকারীরা আশা করে ভবিষ্যতে জন্য হাতের মোটোই সব কাজ করতে পারা।
কথাগুলো বলছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলার প্রবাসী হেলাল উদ্দিন, শুধু তিনিই নন, সোহেল, মতিন, ফারুক, নজরুল সহ উপজেলার অনেক তরুনরাই। প্রথম পর্যায়ে উপজেলার ওয়েব পোর্টালে প্রবেশ করে বিভন্ন দপ্তর প্রধানগনের যোগাযোগ নাম্বার পেয়েই দ্রুত তাদের সাথে মোবাইল ফোন আলাপ করে সমস্যা সমাধানের উপায় পাওয়া যেত। অনলাইনে ওয়েবসাইট পেয়ে ঘরে বসে সেবা পেয়ে তারা আনন্দই ছিল এবং ভবিষ্যতে অনলাইন সেবায় নতুন নতুন অ্যাপ যোগ হবে নাগরিক সুবিধা আরো গতিশীল হবে এটাই তাদের ডিজিটাল যুগে বাস্তাবায়নে তাদের প্রত্যাশা ছিল। সরকার ডিজিটাল সেবা নিশ্চিত করতে এবং কাঙ্খিত ডিজিটাল সেবার রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে নানা উদ্যোগ নিয়েছে। স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ওয়েবসাইটে উপজেলা পরিষদের কার্যক্রমের যাবতীয় তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে। ওয়েবসাইটে তরুন প্রজন্মের জন্য বিভিন্ন সেবাও উন্মুক্ত করা হয়েছে। ডিজিটাল সিষ্টেমের ফলে নাগরিকরা ঘরে বসেই নিজেদের হ্যান্ড সেটের সাহায্যে দ্রুত সময়ের মধ্যেই বিদ্যুৎ বিল, ব্যাংক হিসাব পরিচালনা, সরকারী বেসরকারি দপ্তরে চাকুরী তথ্য আদান প্রদান সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য জানতে পারছেন। নিজস্ব আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে পারছেন। ওয়েব পোর্টাল সার্ভিস চালুর ফলে উপজেলার নানা কার্যক্রম স্বচ্ছ ছিল ও ওয়েব পোর্টাল হাল নাগাদ না থাকায় দিন দিন কমছে ডিজিটাল সেবার কার্যক্রম, ফিরে যেতে হচ্ছে মেনুয়াল প্রযুক্তিতে। জৈন্তাপুরে এখন ডিজিটাল দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে উপজেলার এবং উপজেলার বাহিরে বিভিন্ন দেশে অবস্থানকরা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। উপজেলায় বসবাসরত নাগরিক নানা দুর্ভোগ এবং নাগরিক সেবা পেতে হয়রানির পাশাপাশি যে কোনো ধরনের অভিযোগ জানতে তরুন প্রজন্মের আশা করছিল সরকার প্রথমিক সুবিধা প্রদানের পর নতুন কোন “মোবাইল অ্যাপ” চালু করবে। ডিজিটাল সেবা পৌছে যাবে উপজেলাবাসীর দ্বারে দ্বারে। ওয়েব পোর্টালের পাশাপাশি ‘মোবাইল অ্যাপ’ নাগরিক জীবন অরও সহজ করে দিবে। ওয়েব সাইটের মাধ্যমে উপজেলাবাসী দ্রুত সময়ে হাসপাতাল, এ্যামুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, বিদ্যুত বিভাগ, বিভিন্ন দপ্তরের সাথে কানেক্ট হয়ে সেবা গ্রহন করতে পারত। জানতে পারতেন উপজেলার বিভন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের তথ্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যান, ইউপি সচিব, ইউপি সদস্যদের তথ্য যোগাযোগ নম্বর। সরকার সারাদেশকে ইন্টারনেটের সুফল পাওয়ার জন্য সকল ইউপিকে উপজেলার সাথে সকল উপজেলাকে জেলার সাথে এবং সকল জেলাকে বিভাগের সাথে সর্বশেষ সকল বিভাগকে কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত করে দিয়েছে। প্রয়োজনী হার্ডওয়ার, সফট্ওয়ার এবং টেকনোশিয়ান এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে এবং মাসোহারা নিচ্ছে। ওয়েব পোর্টাল গুলোর নিয়মিত হালনাগাদ সহ ইন্টারনেট সেবা প্রসারের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। জৈন্তাপুরে তার ব্যতিক্রম ঘটছে। বিশেষ করে ভোক্তভোগিদের দাবী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার কারনে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে নতুন প্রজন্মের তরুনরা। ৫ বৎসর পূর্বে উপজেলার ওয়েব পোর্টল চালুর পর হতে আর কোন আপডেট বা হালনাগাদ হয়নি। ফলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানার ক্ষেত্রে নানা দূর্ভোগ ও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে ডিজিটাল প্রজন্মের সুফলভোগিরা।
নতুন প্রজন্মের সেবা গ্রহিতাদের দাবী “আমরা অনলাইনে উপজেলাবাসীর সকল সেবা উন্মুক্ত পেতে চাই। আশা করি অভিলম্বে উপজেলার ওয়েব পোর্টাল বা অনলাইন সেবা নিশ্চিত করবে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে দালাল মুক্ত হবে উপজেলা এবং সরকারের কার্যক্রমে নাগরিকদের আস্থা বাড়বে। দালালের আধিপত্য ও নির্ভরতা কমবে। জনগণ স্বতস্ফুর্ত ভাবে ওয়েব সাইটের সেবা গ্রহণ করতে চায়। উপজেলাবাসী নিজেদের অধিকার বাস্তবায়নের ব্যাপারেও আরো সচেতন হবে, কমবে হয়রানি, উপজেলাবাসীর অধিকতর সেবার নিশ্চিতা চায়। ওয়েব পোর্টলে উপজেলার ৩২টি প্রতিষ্ঠানের নাম, প্রধানের নাম থাকলেও প্রায় ২৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা বিভিন্ন সময়ে বদলী হয়ে গেলেও ওয়েব পোর্টালে তারা জৈন্তাপুর উপজেলাতেই এখন কর্মরত দেখা যায়। নাম প্রকাশে অনেক দপ্তর প্রধান বলেন নিয়মিত তারা ওয়েব পোর্টালের বিল পরিশোধ করলেও নিয়োজিত অপারেটর তা আপডেট করছেন না। এছাড়া ওয়েব পোর্টালে নাম নেই উপজেলা ফায়ার সার্ভিস, পল্লী দরিদ্র বিমোচন, বিভিন্ন তফসীলী ব্যাংকের নাম, কর্মসংস্থান ব্যাংকের নাম, সিলেট গ্যাস ফিল্ড, উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড, সড়ক ও জনপথ, তামাবিল হাইওয়ে পুলিশ এই দপ্তর গুলোর নামই নেই।
জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌরীন করিম এর কাছে জানতে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জরুরী কাজে ব্যাস্থ থাকায় বক্তব্য দেননি।
জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন বলেন- পরিষদের সভায় ওয়েব পোর্টাল দ্রুত সময়ের মধ্যে হালনাগাদের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে অনুরোধ করব বলে জানান।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd