সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৬:৪৬ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্টার :: শীত উপেক্ষা করে বোরো আবাদে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন সিলেটের কৃষকেরা। সিলেট বিভাগের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় কম-বেশি বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। বিভাগের চার জেলায় এ বছর ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৭ হেক্টর বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে। যা থেকে এবার ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ১০৬ মেট্রিক চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সিলেট বিভাগে এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বোরো আবাদ হবে সুনামগঞ্জ জেলায়। আর সবচেয়ে কম আবাদ হবে মৌলভীবাজার জেলায়। চলতি বছর আমন ধানের ভালো দাম পাওয়ায় চাষীরা বোরো ধান চাষে আরো বেশি ঝুঁকে পড়েছেন। তাই শীতের তীব্রতাকে উপেক্ষা করে দিন-রাত জমিতে সেচ দেয়া, চাষ দেয়া, বীজতলা তৈরি এবং চারা তুলে রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম আশা করছেন চাষীরা।
সিলেট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, সিলেট জেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৯ হাজার ৭০৯ হেক্টর। গতকাল পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৪৫ হাজার ২শ হেক্টর। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৭ মেট্রিক টন।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান জানান, জেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৩ হাজার ১১৬ হেক্টর। গতকাল পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ৫শ হেক্টর। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন। আবহাওয়ার ভালো থাকলে চালের উৎপাদন আরো বাড়বে বলে তিনি জানান।
হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মো. আলী জানান, জেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার হেক্টর। গতকাল পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ৭৫ হাজার ৪শ হেক্টর। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার মেট্রিক টন।
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক ফিরোজ খান জানান, জেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার ৫৫৩ হেক্টর। গতকাল পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার ৫শ হেক্টর। যা থেকে চাল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫ হাজার মেট্রিক টন।
সিলেট বিভাগীয় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তারা চলতি বোরো মৌসুমে সিলেট বিভাগে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন। তারা জানান, কৃষি অফিস থেকে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কৃষকদের আদর্শ চারা উৎপাদন, পোকা ও ইঁদুর দমনে পাচিং পদ্বতিসহ সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। এতে চাষীরা কাঙ্খিত ফলন পাবেন এবং কৃষক লাভবান হবে এমন আশাবাদ কৃষি অফিসের। চলতি বছর বেশির ভাগ কৃষক আদর্শ বীজতলার মাধ্যমে চারা উৎপাদন করে বোরো ধানের আবাদ করেছে বলেও জানান তারা।
সদর উপজেলার কৃষক সাইফুল বলেন, চলতি বছর আমন ধানের ভালো দাম পেয়েছি। সে কারণেই বোরো ধান চাষ করছি। আশা করি বোরো ধানের ধানের ভালো দাম পাব। তবে ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে কারণে বীজতলার অনেক চারা হলুদ আকার ধারণ করেছে। ধানের ন্যায্যমূল্য পেলে চাষীরা আগামীতে আরো বেশি বোরো ধান আবাদ করবে বলে জানান তিনি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আদর্শ বীজতলা থেকে চারা তুলে মাঠে বোরো ধানের বীজ বপন করছে চাষীরা। আদর্শ বীজতলার মাধ্যমে সুস্থ-সবল চারা উৎপাদন করে কৃষকেরা এখন বোরো ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এই বীজতলায় ২ বা ৩টি চারা রোপণ করেই সর্বোচ্চ ফলন পাওয়া যায়। ফলে কৃষক কম খরচে অধিক লাভবান হবে।
সিলেট বিভাগীয় কৃষি অফিসের কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইলিয়াস বলেন, বিগত বছরের চেয়ে এ বছরে কৃষকরা আমন ধানের ভালো দাম পেয়েছে। তাই তারা বোরো আবাদে ঝুঁকে পড়ছে। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে ধানের বাম্পার ফলন হবে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd