সিলেট ১২ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ১৩ই শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১:৫৮ অপরাহ্ণ, মার্চ ১৬, ২০১৯
গোলাম সরওয়ার বেলাল, জৈন্তাপুর :: আর মাত্র একদিন পর ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটরের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই। তবে আওয়ামীলীগগের প্রার্থী থাকায় ভোটের আমেজ আওয়ামী পরিবারেই লক্ষনিও, প্রার্থীরাও ভোট চাইতে গিয়ে তেমন সাড়া পাচ্ছেন না সাধারণ ভোটারের কাছে। নির্বাচনের দিন ভোটারদের উপস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে শঙ্কিত পার্থীরা। উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীরা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন শেষ মুহুর্তে। প্রতিদিনই কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন তারা। প্রার্থীদেরও একই অভিযোগ ভোটাদের দ্বারে দ্বারে গেলেও ভোটাদের কাছ থেকে তেমন সাড়া না পেয়েও তারা হতাশ নয় প্রার্থীরা। প্রতীক পাওয়ার পর থেকে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীরা খুব জোরেশোরে প্রচার প্রচারণায় নেমে পড়েছিল। পোস্টারে ছেয়ে যায় পুরো জৈন্তাপুর উপজেলঅ। তবুও এবার নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় নেই আগের মত জৌলুস। এর কারণ হিসেবে সচেতন মহল মনে করছে, দলীয় প্রতীকের ব্যবহার আর সরকারের বাহিরে থাকা বিএনপি-জামায়াত সহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল অংশ গ্রহণ না করায় নির্বাচন অনেকটাই নিরুত্তাপ।
এ ছাড়া গত সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে ভোটাররা ভোট দিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তাই ভোটাররা অনেকটাই নীরব ভূমিকায় রয়েছেন। এবারে ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মাঝে নেই কোন আলোচনা। বেশ কিছু ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে অজ্ঞাত কারণে ভোটাররা ভোট দানের উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। কিছু পোস্টার সাটানো, জৈন্তাপুর থেকে চিকনাগুল এলাকায় প্রার্থীরা প্রচারনার মাইকিং করে তাদের প্রতীক ভোটারদের নিকট তুলে ধরছেন। নির্বাচন আসলেই ব্যানার, পোস্টারে ছেয়ে যায় পুরো নির্বাচনী এলাকা। গনসংযোগ, মিছিল, মিটিং থাকেলেও এবার নির্বাচনী এলাকার চায়ের দোকানগুলোতে নির্বাচনী আমেজ জমেনি। শেষ দিকে এসে কিছুটা হলেও চায়ের কাপে নির্বাচনী আলোচনা জমে উঠেছে।
জৈন্তাপুর উপজেলার ভোটারদের সাথে আলাপকালে প্রতিবেদককে জানান, নির্বাচন এসেছে কাউকে না কাউকে ভোট দিতেই হবে। আমাদের এলাকায় ৩জন চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকলেও আমরা যে কোন একজনকে বেছে নিতে হবে। তবে এবারের উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত অংশ না নেওয়ায় এক দলের দুই প্রার্থী থাকায় আমাদের মত সাধারন ভোটারদের বেশ মুল্যায়ন রয়েছে আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীলীগ বিদ্রোহী প্রার্থীদের কাছে। সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা, ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারার শঙ্কাসহ নানা কারণে এবার উপজেলা নির্বাচন নিয়ে বিরোধী মতের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।
এদিকে বিরোধী মতের কোন প্রার্থী বা বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকায় তাদের সমর্থিত ভোটাররা নির্বাচনের দিন ভোট কেন্দ্রে যাবে কিনা, গেলেই বা কাকে ভোটে দেবে হিসাব মিলাতে পারছেননা মূল প্রতিদ্বন্ধি দুই প্রার্থী। এদের ভোটেই ভাগ্য নির্ধারন হবে একজনের। আর অপর প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মিনার প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করলেও দল বা স্থানীয়দের সংগঠিত করতে পারেননি আব্দুল মতিন।
আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ আহমদ বাবর বলেন, নৌকা প্রতীক নিয়ে এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলী। তিনি আরো বলেন, জৈন্তাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান সহ সকল নেতাকর্মীরা নৌকার প্রার্থী লিয়াকত আলী‘র পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি করেছে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে নৌকার বিজয় নিশ্চিত ইনশা আল্লাহ।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহেদ আহমদ বলেন, ছাত্র রাজনীতি থেকে আসা উপজেলা ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের সভাপতি বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ তৃণমূলের নেতাকর্মী নিয়ে (ঘোড়া) প্রতীকে উপজেলা নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান সহ তৃণমূলের নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধভাবে ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে বেড়াচ্ছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল আহমদ সমর্থনে ঘোড়া প্রতীকে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে অবশ্যই কামাল আহমদ ব্যাপক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করবেন। তিনি আরও বলেন, কিছু কিছু ভোট কেন্দ্রে অনিয়মের আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অপরদিকে উপজেলা বিএনপি‘র সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাফিজ জানান, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গত ৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে আর কোন নির্বাচনে অংশ গ্রহন করবে না। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি কোন প্রার্থী দেয়নি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে ফতেহপুর ইউনিয়ন বিএনপি‘র সাধারন সম্পাদক আব্দুল হক নির্বাচনে অংশ গ্রহন করলে কেন্দ্রীয় বিএনপি তাকে বহিস্কার করে। যেহেতু দল নির্বাচনে অংশ গ্রহন করছে না আশা রাখি দলের প্রতি সম্মান রেখে আমাদের দলের কেউ ভোটে দিতে কেন্দ্র যাবেনা। যদি কেউ যায় এটি তার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।
উপজেলা জাতীয় পার্টির সাধারন সম্পাদক ফখরুল ইসলাম বলেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমাদের দলীয় কোন প্রার্থী অংশ গ্রহন না করায় দল কোন প্রার্থীকে একক ভাবে সমর্থন দেয়নি, ব্যাক্তিগত ভাবে দলীয় লোকজন বিভিন্ন প্রার্থীর সাথে মাঠে রয়েছে।
এ বিষয়ে জামায়াতের স্থানীয় দায়ীত্বশীল এক নেতা বলেন আমাদের দল নির্বাচন বয়কট করায় আমরা কোন প্রার্থী দেইনি এবং কাউকে সমর্থনও দেইনি। দলের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট প্রয়োগ করলে তাতে আমাদের কোন বাধা নিষেধ নেই।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd