সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৯:০৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ৩০, ২০১৯
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত মাহারাম নদীতে প্রশাসনকে বৃদ্ধগুলী দেখিয়ে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চালিয়েছে স্থানীয় সংঘবদ্ধ বালু ও পাথর খেকুচক্র। বালু ও পাথর উত্তোলনের কারনে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের আর্দশ গ্রামসহ কয়েকটি গ্রাম,ছোট বড় কয়েকটি হাওর হুমকির মূখে পড়েছে। বালু উত্তোলনকারীরা মাহারাম নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় বাড়ি-ঘর,সীমান্তের হাওর ও উপজেলা সব গুলো হাওরে এর প্রভাব পরবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্ধাগন। ফলে সবার মাঝে চরম ক্ষোব বিরাজ করছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানাযায়,উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্তের ভারতীয় মেঘালয় পাহাড় থেকে প্রবাহিত পানি নেমে যাদুকাটা নদী মাধ্যমে উপজেলার বিভিন্ন নদীতে প্রবাহিত হয়। আর যাদুকাটা নদীর প্রধান শাখা নদী মাহারাম। পাহাড়ী ঢল যাদুকাটা নদীতে পানি চাপ সৃষ্টি করলে প্রথমেই মাহারাম নদী দিয়ে উপজেলার মাটিয়ান,সমসাসহ সীমান্তের ছোটবড় সব হাওরগুলোতে গিয়ে আগাত করত ১৯৮৮সালের পূর্বে। ফলে ফসল রক্ষার জন্য মাহারাম নদীতে তখন বেড়িবাঁধ দেওয়া হত সরকারী ভাবে। ১৯৮৮সালের বন্যার পর থেকে পাহাড় থেকে নেমে আসা বালু ও নুড়িপাথরে মাহারাম নদীটি ভরাট হয়ে যায় প্রাকৃতিক ভাবেই। এরপর থেকে সরকারী ভাবে এখানে কোন বাঁধ দিতে হয় না এখন। বছরের ১০মাসেই এ নদীর উপর দিয়ে পায়ে হেঁটে ও ঠেলাগাড়ি,মটর সাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন পারাপার হয়।
কিন্তু মাহারাম নদীর শিমুল বাগানের সামনে থেকে মানিগাঁও ও শান্তিপুর খেয়া ঘাটের(চাঁনপুর যাওয়ার)কাছে প্রভাবশালী স্থানীয় একশ্রেনীর বালু ও পাথর খেকু চক্র প্রকাশ্যেই বালু উত্তোলনে মহোৎসবে ব্যস্থ। আর নিজেদের মত করে এ নদী থেকে অর্থের বিনিময়ে বালি উত্তোলন করে মহেন্দ্রা ঠ্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করার জন্য মাটি দিয়ে নদীতে রাস্তা তৈরী করেছে আর পরিবহন করছে। ফলে এই নদীর তীরবর্তী কয়েকটি গ্রাম ভাঙ্গন ও উপজেলার হাওর গুলো আবারও অকাল বন্যার চরম ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীতে অসংখ গর্তের ফলে সামান্য পানি প্রাবাহিত হলেই পানির ধারা আটকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না। পানি উপজেলার কয়েকটি হাওরের এক ফসলী বোরো জমিনে গিয়ে আগাত করবে।
মাহারাম নদী পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা ও মাহারাম নদীতে বালু উত্তোলনকারী মানিগাঁও গ্রামের শ্রমিকরা জানান,ভাই নাম না বললে কইতে পারি। এখানে ১২টি গ্রæপে দলবদ্ধ হয়ে এখানে বালু ও পাথর তুলে। আর তাদের নেতা হল-মানিগাঁও গ্রামের আসাদ মিয়া,রইস মিয়া,মোহাম্মদ আলী ও দ্বীন ইসলাম,স্থানীয় আ,লীগ নেতাও জরিত রয়েছে। আবার তাদেরকে নিয়ন্ত্রন করছে আরো একটি শক্তিশালী গ্রæপ। তারাই প্রশাসন ম্যানেজ করে। গ্রæপ গুলো হল-মানিগাঁও গ্রামের হাসান মিয়া,আবুল কাশেম,হাসেন আলী,তোষা মিয়া,জিলু মিয়া,মধু মিয়া,জাকির হোসেন,আবুল বাদশাহ, আলী,নানু মিয়া,তাজু মিয়া,শাহ আলম মিয়া,অয়েজ উদ্দিন,কালা মিয়াসহ স্থানীয় প্রভাবশালী আরো কয়েকজন। এই গ্রæপে রয়েছে অর্ধশতাধিক নারী পুরুষের শ্রমিকদল। উল্লেখিত ব্যাক্তিদের বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কাশেম বলেন,মাহারাম নদীতে যেভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। বালু উত্তোলন করলে মাটিয়ান হাওরসহ কয়েকটি হাওরের ফসল অকাল বন্যার পানিতে তলিয়ে যাবে সহজে।
মানিয়ান হাওর উন্নয়ন কমিটির সভাপতি আব্দুল জলিল তালুকদার বলেন,মাহারাম নদী থেকে বালু উত্তোলন করলে মাটিয়ান হাওরসহ উপজেলার সকল হাওর অকাল বন্যায় তলিয়ে যাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে কৃষক। মাহারাম নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান তিনি।
বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই আমির উদ্দিন বলেন,কিছু দিন পূর্বে মাহারাম নদী থেকে বালু উত্তোলন করতে গেলে পুলিশ পাঠিয়ে তা বন্ধ করা হয়েছে। এখন কোন কাজ হচ্ছে না। এই নদীতে আইন অম্যান করে কোন কাজ করতে দেওয়া হবে না।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন,বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমি জেনে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অবগত করেছি। একটি বালুখেকোচক্র বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরোদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন ছাড় পাবে না। তারা যত বড় শক্তিশালী হউক।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd