সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৮:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২, ২০১৯
স্টাফ রিপোর্ট :: স্বামী তারেক আহমদ ও তার পরিবারের লোকদের দ্বারা একাধিকবার নির্যাতনের শিকার এবং অব্যাহত হুমকিতে প্রাণনাশের শঙ্কায় রয়েছেন গৃহবধূ ছালমা বেগম।
তিনি সাহায্যের আশায় মামলা ছাড়াও আদালত, পুলিশ, মানবাধিকার সংস্থাসহ বিভিন্ন জনের কাছে ঘুরলেও কোন প্রতিকার পাননি বলে জানিয়েছেন। তার স্বামী তারেক আহমদ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সরুফৌদ গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
মঙ্গলবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্বামী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেন ছালমা বেগম। তিনি নরসিংদী জেলার বেলাবো থানার দাপুনিয়া গ্রামের ফজলুল হকের মেয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি দাবি করেন, ‘গার্মেন্টসে চাকরিসূত্রে পরিচয় থেকে ২০১১ সালে ২ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করে তারেকের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নরসিংদি জেলার মনোহরদি উপজেলার কাচিহাট কাজী অফিসে নিকাহনামা সম্পদিত হয়। প্রথমদিকে তারেকের পরিবারের অমত থাকলেও পরে তারা মেনে নেন। এর পরের বছর তাকে নিয়ে কানাইঘাটে গ্রামের বাড়িতে আসেন তারেক। এরপর এখানেও বছরখানেক সংসার ভালোই চলছিল।’
তিনি আরও বলেন, এর কিছুদিন পর তারেক ব্র্যাকে চাকরি নেওয়ার কথা বলে তার কাছ থেকে কয়েকদফায় ৩/৪ লাখ টাকা নেয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে আরও টাকা দাবি করে। কিন্তু তিনি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারেক ও তার পরিবারের লোকজন বিভিন্নভাবে শারীরিক নির্যাতন শুরু করে।
এমনকি তার অমতে দুইবার গর্ভপাতও ঘটানো হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। আর এসব ঘটনায় জালিমের ভূমিকা পালন করেন তারেকের চাচা তাজ উদ্দিন ও তার ছোট বোন তানিয়া আক্তার।’
সংবাদ সম্মেলনে ছালমা দাবি করেন, নির্যাতনের শিকার হওয়ায় তিনি ২০১৪ সালে কানাইঘাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর তিনি নরসিংদীতের চলে যান। কিন্তু তারেকের পরিবারের পক্ষ থেকে বিষটি নিষ্পত্তি করার কথা বলে ফের কানাইঘাটে নিয়ে আসার কথা বলে পথিমধ্যে তাকে ব্যাপক মারধরও করা হয়। এ ঘটনায় তিনি নরসিংদীর বেলাবো থানায় মামলাও করেছিলেন।’
তিনি বলেন, ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর কানাইঘাটে দায়ের করা মামলার চার্জশিট দেয়া হলে মামলা পরিচালনার স্বার্থে সিলেট আদালত পাড়ায় আমি এলে বিভিন্ন ভাবে হামলার শিকার হয়েছি। সর্বশেষ গত বছরের ৫ মার্চ সন্ধ্যায় ক্বীনব্রিজ এলাকা থেকে স্বামীর লোকজন আমাকে জোরপূর্বক একটি সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নির্জন জায়গায় নিয়ে স্বামীর উপস্থিতিতে রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালিয়েছে। এ ঘটনায় মোগলাবাজার থানায় আমি একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করি।
এ মামলায় পুলিশ ইতিমধ্যে চার্জশীট দিয়েছে। মেডিকেল পরীক্ষায়ও আলামত পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার শাহজালাল (রহ.) এর মাজার গেইটে আমার স্বামী ও তার চাচা তাজ উদ্দিন আমাকে মারপিট করে ইট দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়। এসব ঘটনায় আমি এখন শঙ্কিত হয়ে পড়েছি।
তিনি বলেন, কানাইঘাট থানায় দায়ের করা মামলায় তারেকের ছোট বোন তানিয়া আক্তার আসামি থাকলেও পুলিশ চার্জশীট থেকে তার নাম বাদ দিয়ে দেয়। তানিয়া বর্তমানে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি নিয়ে মামলা তুলে নিতে আমাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এমনকি কানাইঘাট থানা প্রাঙ্গনে পুলিশ এবং আমার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পান্না লাল দেবের উপস্থিতি আসামিরা আমাকে মারধর করলেও পুলিশ তাদেরকে কোনো প্রকার বাধা দেয়নি।
আসামিদের যোগসাজশে মামলা প্রক্রিয়াও বিলম্বিত হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এ অবস্থায় বিচারপ্রাপ্তি নিয়েও তিনি শঙ্কিত। সংবাদ সম্মেলনে ছালমা বেগম তার স্বামী তারেকসহ মামলার সকল আসামিদের গ্রেপ্তার ও তাদের শাস্তির দাবি জানান। তিনি পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সহযোগিতা কামনা করেন।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd