দিরাই সরকারি হাসপাতালের বেহালদশা

প্রকাশিত: ১২:০৩ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১১, ২০১৯

দিরাই সরকারি হাসপাতালের বেহালদশা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :: সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৩ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র ভরসা ৫০ শয্যার দিরাই সরকারি হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজ করছে বেহালদশা। হাসপাতালের প্রধান কর্তা থাকেন সিলেটে, চিকিৎসকরা বাসায় ব্যস্ত প্রাইভেট নিয়ে। জরুরি বিভাগে ডাক্তার না পেয়ে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজনদের চিৎকার চেঁচামেচি আর বিদ্যুৎ না থাকায় সবকিছুই যেন হযবরল অবস্থা, এ নিয়ে হাসপাতালে প্রায়ই অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায় রাতের বেলা বিদুৎ চলে গেলেই এক ধরনের ভয়ানক অবস্থার সৃষ্টি হয় হাসপাতালে। এমন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিদ্যুৎ চলে গেলে জরুরী বিভাগসহ মুহুর্তেই হাসপাতালের সবকিছু অকেজো হয়ে পড়ে।

জানা যায়, দুই বছর আগে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার প্রচেষ্টায় জেনারেটরের ব্যবস্থা হলেও অধিকাংশ সময় ডিজেল না থাকার অজুহাতে বন্ধ রাখা হয় জেনারেটর। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসাপাতাল সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তিরা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাসের অধিকাংশ সময়ই সিলেট ও সুনামগঞ্জে অবস্থান করেন। জরুরী মিটিং ছাড়া তিনি দিরাই আসেন না। প্রধান কর্তার অনুপস্থিতে হাসাপাতালে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ৩০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি আড়াই বছর আগে প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের চেষ্টায় ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও এখনো সুযোগ সুবিধা বাড়েনি। এ অবস্থায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা হাসপাতালে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন।

হাসপাতালের এক্সরে মেশিন টি অকেজো, রোগীদের মাঝে দেওয়া খাদ্য সামগ্রী অল্প ও নিন্মমানের বলে অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও সরকারি বিভিন্ন প্রকার ওষুধ থাকলেও নাপা আর প্যারাসিটামল ছাড়া রোগীদের ভাগ্যে জুটে না কিছু।

রোগীদের সাথে আলাপকালে তারা অভিযোগ করে বলেন, সামান্য অসুস্থ হলেই এখানকার ডাক্তাররা সিলেট প্রেরণ করেন। নতুন ভবন উদ্বোধন হলেও চালু না হওয়ায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত আমরা। একটি এ্যাম্বুলেন্স রক্ষণাবেক্ষনের অভাবে খোলা আকাশের নীচে বিনষ্ট হচ্ছে।

দিরাইয়ের বাসিন্দা, সুনামগঞ্জ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট সহিদুল হাসমত খোকন বলেন, গত কয়েক দিন আগে রাতে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় আমার ভাগনীকে দিরাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করেও কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার নাজিয়া ইসলামকে জরুরী বিভাগে আনা যায়নি। পরে বাধ্য হয়ে ভাগনীকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। দিনের বেলাও ডাক্তারেরা প্রাইভেট রোগী দেখাতে ব্যস্ত থাকেন, জরুরী বিভাগে রোগীরা অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয়।

এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জন ডা.আশুতোষ দাস বলেন, লোকবলের স্বল্পতার জন্য ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অভাবে নতুন ভবনটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ চলছে, খুব তাড়াতাড়িই ৫০ শয্যা হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গরূপে চালু হবে।

Sharing is caring!

বিজ্ঞাপন

আর্কাইভ

April 2019
S S M T W T F
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
27282930  

সর্বশেষ খবর

………………………..