সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ১২:২৭ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২০, ২০১৯
ক্রাইম সিলেট ডেস্ক : মাদরাসা ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের পর পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার ভাগনি (শ্যালিকার মেয়ে) উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা। শুক্রবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করেন। এ দিকে একই আদালত জাবেদ হোসেনকে আরও তিন দিনের রিমান্ড দিয়েছেন।
এর আগে ১৩ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইনের আদালতে তুলে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দেন। জাবেদ নুসরাত হত্যা মামরার এজহারভুক্ত ৬ নম্বর আসামি। সে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের রহমত উল্লাহর ছেলে।
পিআইবির চট্টগ্রাম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইকবাল বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডে যে দুজন নারী সদস্য জড়িত ছিল তাদের মধ্যে উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা একজন। সে জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বলেন, তাকে সে নিচ থেকে ডেকে নেয় ও হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পা ও হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিবিআই’র অন্য একটি সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে উম্মে সুলতানা পপি ওরফে শম্পা স্বীকার করে বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডের তিনটি সভার মধ্যে প্রথমটিতে সে ও মণি উপস্থিত ছিল। হত্যাকাণ্ডের সময় পপি ও মনি হাত বাঁধে জাবেদ ও যোবায়ের কেরোসিন ঢেলে আগুন দেয়। পরে তারা পরীক্ষার হলে অবস্থান করে। নুর উদ্দিন ও হাফেজ আবদুল কাদের তাদের নানাভাবে উৎসাহ দিয়েছে।
এর আগে গত ৯ এপ্রিল শম্পা সন্দেহে সোনাগাজী উপজেলার মঙ্গলকান্দি ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে উম্মে সুলতানা পপিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সে একই মাদরাসা থেকে এবার আলিম পরীক্ষার্থী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মো. শাহ আলম বলেন, আলোচিত নুসরাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত পাঁচ জনের জবানবন্দি আদালত রেকর্ড করেছে। এদের সবাই আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
এর আগে ১৪ এপ্রিল রোবার রাতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসাইনের আদালতে নুসরাত হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি নুর উদ্দিন ও শাহাদাত হোসেন শামিম। ১৭ এপ্রিল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিন আহমেদের আদালতে আবদুর রহিম ও শরীফ, ১৮ এপ্রিল সন্ধ্যায় একই আদালতে হাফেজ আবদুল কাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
আলোচিত এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও পিবিআই। এদের মধে ওই অধ্যক্ষ এসএম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠি আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, যোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরিফুল ইসলাম ওরফে শরিফ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রুহুল আমিন।
এর আগে টানা পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল বুধবার রাত নয়টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি। পরদিন সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের বুঝিয়ে দিলে বিকেলে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd