সিলেট ৩০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরি
প্রকাশিত: ৫:৫১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৮, ২০১৯
নিজস্ব প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বখাটের দায়ের কোপে গুরুতর আহত সামিরা আক্তার (১৫) এর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। এমনটি জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সামিরার পাশে থাকা তার চাচা সোয়াইব আহমদ।
তিনি জানান, ওসমানীতে সামিরার অস্ত্রপচার করা হয়েছে। তবে তার অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সামিরার মাথার আঘাত গুরুতর বলে জানান তিনি।
এদিকে উপজেলার ভূকশীমইল ইউনিয়নের সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই সামিরা আক্তার (১৫)-কে উত্যক্ত করতো ওই বখাটে জুয়েল আহমদ (২০)। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিচার দিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। উপায় না দেখে সামিরার স্কুল বদলে ফেলেন বাবা-মা। ভর্তি করেন পৌর শহরের সাদেকপুরস্থ আল হেরা ক্যাডেট স্কুলে। এখন সে ওই বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণীতে পড়ে।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি সামিরার। সেখানেও যাওয়ার পথে সামিরাকে উত্যক্ত করে জুয়েল। প্রেমের প্রস্তাব দেয়। তাতে রাজী না হওয়ায় শনিবার প্রকাশ্যে সড়কের মধ্যে তাকে কুপিয়ে আহত করে জুয়েল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় সামিরা ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা এখনও সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার কুলাউড়া-ঘাটের বাজার সড়কের মীরশংকর এলাকায় সামিরাকে দা দিয়ে কুপায় জুয়েল। ঘটনাস্থল থেকেই স্থানীয় এলাকাবাসী জুয়েলকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। জুয়েল উপজেলার সাদিপুর গ্রামের মৎস্যজীবী বকুল মিয়ার ছেলে। এ ঘটনার পর জুয়েলের বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আক্রান্ত ছাত্রী সামিরা আক্তার উপজেলার মীরশংকর গ্রামের আরব আমিরাত প্রবাসী সরফ উদ্দিনের বড় মেয়ে।
তার মা সাহারা বেগম জানান, সামিরা সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় থেকেই জুয়েল আহমদ তাকে উত্যাক্ত করতো। বিষয়টি স্থানীয় মেম্বার ও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবহতি করা হয়। পরে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জুয়েলের পিতা ও ভাইদের ডেকে নিয়ে ওই ছাত্রীকে উত্যাক্ত করবে না ওই মর্মে তাদের কাছ থেকে মুছলেখা নেওয়া হয়। এঘটনার পর ভয়ে সামিরাকে কুলাউড়া পৌর শহরের আলহেরা ক্যাডেট স্কুলে ভর্তি করেন। এরপরও ওই যুবক সামিরাকে প্রায়ই উত্যাক্ত করতো। শনিবার বাড়িতে ফেরার উদ্দেশে স্কুল থেকে দুপুরে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে মীরশংকর বাজারে গিয়ে নামে সামিরা। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে বাড়িতে প্রবেশের সময় রাস্তায় একা পেয়ে জুয়েল প্রকাশ্যে দা দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে।
এসময় আশেপাশের স্থানীয়রা সামিরার চিৎকার শোনে এগিয়ে এসে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার মাথায় ও কানে দায়ে কোপ রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির জানান, ওই ছাত্রী ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে থাকাবস্থায় জুয়েল তাকে উত্যোক্ত করতো। বিষয়টি জানার পর আমরা স্কুলের শিক্ষক ও তাদের এলাকার মেম্বারসহ জুয়েল ও তাঁর পিতাকে ডেকে নিয়ে ওই যুবকের ও তার অভিভাবকের মুছলেখা রাখি যাতে পরবর্তীতে ছাত্রীকে উত্যোক্ত না করে।
কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়ারদৌস হাসান বলেন, জুয়েলকে আটক করা হয়েছে। জুয়েলের পিতা ও ভাইকে আটকের জন্য পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
Sharing is caring!
………………………..
Design and developed by best-bd