লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার পথে নিখোঁজ হন সিলেটের বিশ্বনাথের কলেজ ছাত্র রেদওয়ানুল ইসলাম খোকন (২৪)। তিনি বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের নওধার মাঝপাড়া গ্রামের ইলিয়াস আলী ও জোছনা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে। সম্প্রতি ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির পর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। তার খোঁজখবর না পাওয়ায় মা-বাবাসহ পরিবারের সকলেই পাগল হয়ে পড়েছেন। নাওয়া খাওয়া ভূলে মা-বাবা দু’জনেই গত ১০দিন ধরে ছেলের জন্য মাতম করছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন নওধার মাঝপাড়া গ্রামে গিয়ে (খোকনের মা বাবার) তাদের সাথে কথা হলে তারা জানান, খোকন সিলেট সরকারি কলেজে লেখা পাড়া করতো। গ্রামের পার্শ্ববর্তি বৈরাগী বাজারস্থ খোকনের বড়ভাই রেজাউল ইসলাম রাজু’র ‘ফিজা এন্ড কোম্পানী’ নামে একটি ফাস্ট ফুডের ব্যবসা রয়েছে। যেখানে খোকন ও তার বাবা বেশিরভাগ সময়ই বসতেন। প্রায়৬/৭মাস আগে বাজারের পার্শ্ববর্তি কাঠলীপাড়া গ্রামের চমক আলীর ছেলে আদম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম রফিক তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ইতালি পাঠানোর সুবর্ণ সুযোগের কথা বলেন। আর এতে খোকন রাজি হয়ে পড়লে পরিবারের সকলেই টাকার জন্য হিমসিম খান। একপর্যায়ে তাদের প্রতারণার ফাঁদে ফেলে সাড়ে ৮লাখ টাকায় জাহাজে করে এক মাসের মধ্যে ইতালি পাঠাবে বলে চুক্তি করে। পরবর্তিতে ব্রাক ব্যাংক বিশ্বনাথ শাখা থেকে ‘ফিজা এন্ড কোম্পানী’র নামে ৮লাখ টাকা লোন তুলে দালাল রফিককে দেন তারা। পরে গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে খোকনকে লিবিয়া পাঠায় দালাল রফিক। সম্প্রতি লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির পর থেকে নিখোঁজ হন খোকন।
ইলিয়াস আলী, জোছনা বেগমের দাবি দালাল রফিকুল ইসলাম চুক্তি ভঙ্গ করে তাদের ছেলেকে সাগরে ডুবিয়ে হত্যা করিয়েছে। সে জন্য দালাল রফিকের ফাঁসি চান তারা। আর তাদের কাছ থেকে সাড়ে ৮লাখ টাকাও তাদেরকে জিম্মি করে নিয়েছে রফিক।
রেজাউল ইসলাম রাজু বলেন, সাগরে নৌকা ডুবির পর দালাল রফিক, তার মেয়ে মেয়ে পিংকি আক্তার, ছেলে পারভেজ এবং আব্দুর রহমান একাধিকবার মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মোবাইলে ম্যাসেজ দিয়েছে খোঁকনকে ইতালী পৌঁছানো হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে তাকে। পরে কাঠলীপাড়ার বাড়িতে গিয়ে দেখতে পান দালাল রফিক স্বপরিবারে পালিয়েছে।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার ওসি শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, সাগর থেকে সিলেটের বিশ্বনাথের নিখোঁজ কারো লাশ উদ্ধার হয়েছে এবং সনাক্ত হয়েছে বলে তাদের কাছে কোন ম্যাসেজ নেই। তবে, নিশ্চিত হয়ে কেউ যদি থানায় মামলা দায়ের করেন তাহলে সকল প্রকার আইন সহায়তা দেওয়া হবে এবং জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপও নেওয়া হবে।
Sharing is caring!